স্মিথের অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরি, অপেক্ষায় মার্শ

সেঞ্চুরিকে বানিয়ে ফেলেছেন ছেলেখেলা। ব্যাট করতে নামলেই সেঞ্চুরি। তবে আগের ২১ সেঞ্চুরিতে ডাবল সেঞ্চুরি মাত্র একটি। স্টিভেন স্মিথের তাড়না ছিল তাই বড় সেঞ্চুরির। দলে ফেরা মিচেল মার্শের তাড়না ছিল নিজেকে প্রমাণের। নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দেওয়ার। দুই অস্ট্রেলিয়ানের সেই তাড়নার আগুনে পুড়ল ইংলিশ বোলিং।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2017, 11:21 AM
Updated : 16 Dec 2017, 11:21 AM

ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন স্মিথ। প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিকে ডাবল সেঞ্চুরির কাছে নিয়ে গেছেন ‘ছোট’ মার্শ। দুজনের অসাধারণ দুটি অপরাজিত ইনিংসে পার্থ টেস্টের তৃতীয় দিনে রাজত্ব করেছে অস্ট্রেলিয়া। ৪ উইকেটে রান ৫৪৯।

ঠিক ২০০ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিন শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। এক দিনে তুলেছে ৩৪৬ রান। দিন শেষে তারা এগিয়ে ১৪৬ রানে, উইকেট হারাতে হয়েছে সারাদিনে মোটে একটি।

ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ২২৯ রানে অপরাজিত স্মিথ। মার্শ দিন শেষ করেছেন ১৮১ রানে। পঞ্চম উইকেটে দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ৩০১।

অস্ট্রেলিয়ার দাপট ছিল দিনের শুরু থেকেই। ৯২ রান নিয়ে শুরু করা স্মিথ খেলছিলেন আগের দিনের মতোই। শুরুতে সাবধানী শন মার্শ সময়ের সঙ্গে পেয়ে যান ছন্দ।

দুজনের ৬৯ রানের জুটি ভাঙে শন মার্শের বিদায়ে। মইন আলিকে টানা দুই বলে চার মেরেছিলেন মার্শ। তৃতীয় বলে ফ্লাইট ও টার্ন বুঝতে না পেরে স্লিপে ক্যাচ দেন ২৮ রানে।

দিনে ইংল্যান্ডের সেটিই একমাত্র সাফল্য। বড় ভাইয়ের বিদায়ের পর উইকেটে গিয়ে খেলার চিত্রই পাল্টে দেন ছোট ভাই মিচেল মার্শ। সহজাত আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান খেলেন দারুণ সব শট। তাতে নির্ভার হয়ে আরও উইকেটে আরও জমে যান স্মিথ। দ্বিতীয় নতুন বলেও কিছুই করতে পারেনি ইংলিশ বোলাররা।

ব্যক্তিগত অর্জনের পথ ধরে এগিয়ে দুজন টেনে নেন দলকে। নানা মাইলফলক পেরোতে থাকে দুজনের জুটিও। ক্রমে ম্রিয়মান হতে থাকে ইংলিশ বোলিং।

দিনের শুরুর দিকেই স্মিথ পেয়ে যান তার সেঞ্চুরি। মাত্র ৫৯ টেস্টেই ২২ সেঞ্চুরি। তবে ১৩৮ বলের এই সেঞ্চুরি তার ক্যারিয়ারের দ্রুততম।

চা-বিরতির একটু আগে মার্শ পৌঁছে যান তার কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়। ১৩০ বলে স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি।

আগের ২১ টেস্টে তার ফিফটি ছিল মাত্র দুটি, সর্বোচ্চ ৮৭। দলে আসা-যাওয়ার পালা হয়ে গেছে কয়েকবার। এবার শেফিল্ড শিল্ডে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স আর পিটার হ্যান্ডসকমের বাজে ফর্ম মিলে আবার এই টেস্ট দিয়ে সুযোগ পেয়েছেন দলে। সেটি কাজে লাগালেন দারুণভাবে।

সেঞ্চুরির পর তার বাঁধনহারা উদযাপনেও মিশে থাকল সেই উচ্ছ্বাস। গ্যালারিতে থাকা বাবা সাবেক ক্রিকেট তারকা জেফ মার্শসহ পরিবার-পরিজনও ভাসলেন আনন্দে। আগের টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন শন মার্শ, এবার তার ছোট ভাই। মার্শ পরিবারের এখন দারুণ সময়।

সেঞ্চুরির পরও আত্মতুষ্টিতে না ভুগে এগিয়ে যান মার্শ। স্মিথ যেন ব্যাটিংকে নিয়ে যান ধ্যানের পর্যায়ে। ইংলিশদের যন্ত্রণা তাই চলতেই থাকে।

৩০১ বলে স্মিথ ছুঁয়ে ফেলেন তার দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। আগের সর্বোচ্চ ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই করা ২১৫ রানকে পেরিয়ে যান দিনের শেষ দিকে।

দিন শেষে ৩৯০ বলে ২৮ চার ও ১ ছক্কায় ২২৯ রানে অপরাজিত স্মিথ। ২৩৪ বলে ২৯ চারে ১৮১ রানে অপরাজিত মার্শ।

চার ইংলিশ বোলার করেছেন রান দেওয়ার সেঞ্চুরি। এই সেঞ্চুরির অপেক্ষায় জিমি অ্যান্ডারসন। দলের অপেক্ষায় আরও কঠিন সময়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:  

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৪০৩

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ১৫২ ওভারে ৫৪৯/৪ (আগের দিন ২০৩/৩)(ব্যানক্রফট ২৫, ওয়ার্নার ২২, খাওয়াজা ৫০, স্মিথ ২২৯*, শন মার্শ ২৮, মিচেল মার্শ ১৮১*; অ্যান্ডারমস ০/৮৫, ব্রড ০/১১২, ওকস ১/১০৮, ওভারটন ২/১০২, মইন ১/১০৪, রুট ০/১৩, মালান ০/১৩)।