কুমিল্লাকে গুঁড়িয়ে ফাইনালে ঢাকা

সবার সম্মিলিত অবদানে লড়াইয়ের পুঁজি গড়া ঢাকা ডায়নামাইটস পেয়েছে সহজ জয়। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে প্রাথমিক পর্বে দুই হারের মধুর প্রতিশোধ নিয়ে প্রথম দল হিসেবে উঠেছে ফাইনাল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2017, 04:28 PM
Updated : 8 Dec 2017, 05:02 PM

বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় তামিম ইকবালের দলের দরকার ছিল ছক্কা বৃষ্টি। সেখানে উইকেট বৃষ্টিতে একপেশে লড়াইয়ে জিতেছে সাকিব আল হাসানের দল।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে ৯৫ রানে জিতেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রোববার রংপুর রাইডার্সের মুখোমুখি হবে কুমিল্লা। জয়ী দল মঙ্গলবার ফাইনালে ঢাকার বিপক্ষে খেলবে।  

ঢাকার দেওয়া ১৯২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় কুমিল্লা গুটিয়ে গেছে এর ঠিক অর্ধেক ৯৬ রানে।

রান তাড়ায় তৃতীয় বলে উইকেট হারায় কুমিল্লা। এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে মোসাদ্দেক হোসেনকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরেন লিটন দাস। কুমিল্লার পথ হারানোর শুরু এই উইকেট দিয়ে। দলকে কক্ষপথে ফেরাতে পারেননি কেউই।

দ্বিতীয় ওভারে সাকিব বোল্ড করে দেন জস বাটলারকে। দুই অঙ্কে যেতে পারেননি ইমরুল কায়েস, শোয়েব মালিক। রানের খাতাই খুলতে পারেননি দুই অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভো ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

কুমিল্লার ইনিংসে নেই তেমন কোনো জুটি। জ্বলে উঠতে পারেননি কেউই। সর্বোচ্চ তামিমের ৩১। ১২ রানে একবার জীবন পাওয়া অধিনায়ক ফিরেন স্টাম্পড হয়ে।

টেলএন্ডার দুই ব্যাটসম্যান হাসান আলি ও মেহেদি হাসানের ব্যাটে বড় হয় ম্যাচের দৈর্ঘ্য, কমে পরাজয়ের ব্যবধান। শেষের দিকে ঠেকিয়ে খেলেও ২ ওভার বাকি থাকতে গুটিয়ে যায় কুমিল্লা।

লেগ স্পিনার শহিদ আফ্রিদি ১৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ঢাকার সেরা বোলার। অলরাউন্ড নৈপুণ্যের জন্য জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্বকার। সাকিব ও মোসাদ্দেক নেন দুটি করে উইকেট।  

দিনের প্রথম ম্যাচে ঝড় তুলেছিলেন ক্রিস গেইল। তারকা খচিত ঢাকার কেউ তেমন কিছু করতে পারেননি। তবে সবাই অবদান রাখায় দুইশ রানের কাছাকাছি যায় দলটির সংগ্রহ।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে মেহেদী মারুফের বিদায়ের শুরুটা ভালো হয়নি শিরোপাধারীদের। দ্বিতীয় উইকেটে জো ডেনলির সঙ্গে এভিন লুইসের ৬৯ রানের জুটিতে ঢাকা পায় বড় সংগ্রহের ভিত।

যথারীতি জুটিতে অগ্রণী ছিলেন লুইস (৩২ বলে ৪৭)। মালিককে সুইপ করতে গিয়ে সোজা বলে বোল্ড হয়ে থামেন এই ওপেনার। তৃতীয় উইকেটে কাইরন পোলার্ডের সঙ্গে ৪৩ রানের আরেকটি ভালো জুটি গড়েন ডেনলি। ১৮ বলে একটি চার আর তিনটি ছক্কায় ৩১ রানে পোলার্ডের বিদায়ে ভাঙে দ্রুত রান তোলা এই জুটি।

রানের জন্য ছটফট করা ডেনলি ফিরেন রান আউট হয়ে। এক ছক্কায় ৯ রান করে ফিরে যান সাকিব। দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে ঢাকার রানের গতিতে ভাটা পড়েছিল। চার ছক্কায় সেখানে জোয়ার আনেন শহিদ আফ্রিদি। তার ১৯ বলে ৩০ রানে দুইশ রানের কাছাকাছি যায় ঢাকার সংগ্রহ।

দারুণ বোলিংয়ে ১৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে কুমিল্লার সেরা বোলার হাসান। ২৮ রানে ১ উইকেট নেন মালিক। ২ উইকেট নিতে ৪৫ রান দেন অলরাউন্ডার ব্রাভো।

বোলারদের অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্সের দিনে জ্বলে উঠতে পারেননি কুমিল্লার ব্যাটসম্যানরা। তাতে হাতছাড়া হয়েছে ফাইনালে উঠার প্রথম সুযোগ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১৯১/৭ (মারুফ ৬, লুইস ৪৭, ডেসলি ৩২, পোলার্ড ৩১, সাকিব ৯, আফ্রিদি ৩০, মোসাদ্দেক ৩, নারাইন ৯*, জহুরুল ৩*; মেহেদি ০/৩৮, হাসান ৩/১৬, সাইফ ০/৩০, মালি ১/২৮, ব্রাভো ২/৪৫, আল আমিন ০/২২)

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৮ ওভারে ৯৬ (তামিম ৩১, লিটন ১, বাটলার ৫, ইমরুল ৯, স্যামুয়েলস ৬, মালিক ৭, ব্রাভো ০, সাইফ ০, হাসান ১৮, মেহেদি ১৫*, আল আমিন ০; মোসাদ্দেক ২/১৪, সাকিব ২/১৯, নারাইন ১/৯, আফ্রিদি ৩/১৬, হায়দার ১/১৪, সাদ্দাম ০/১০)

ফল: ৯৫ রানে জয়ী ঢাকা ডায়নাইমাইটস।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: শহিদ আফ্রিদি