৪০ রানের জয় দিয়ে চট্টগ্রাম পর্ব শুরু করল চিটাগং। সাত ম্যাচে দ্বিতীয় জয়ে তলানি থেকে উঠে এল ছয় নম্বরে। তাদের পয়েন্ট ৫। অন্য দিকে, নয় ম্যাচে সিলেট পেল পঞ্চম পরাজয়ের স্বাদ।
রাজার ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে চলতি আসরের সর্বোচ্চ ২১১ রান করে চিটাগং। বিপিএলের ইতিহাসে এরচেয়ে বড় স্কোর আছে মাত্র দুটি। বিশাল রান তাড়ায় সিলেট থামে ১৭১ রানে।
প্রথম বলে ছক্কায় বড় রান তাড়া শুরু করে সিলেট। কিন্তু ওই ছক্কার পর আর তেমন কিছু করতে পারেননি দানুশকা গুনাথিলকা। যাকে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন সেই সানজামুল ইসলামই ফেরান বাঁহাতি ওপেনারকে।
রাজার ওভারে জোড়া ছক্কায় শুরু করা আন্দ্রে ফ্লেচার শুভাশিস রায়কে হাঁকান টানা চারটি চার। শুরুর সেই গতি ধরে রাখতে পারেননি ফ্লেচার। অন্য প্রান্তে ঝড় তুলতে পারেননি বাবর আজম।
তাসকিন আহমেদকে ছক্কা হাঁকিয়ে পরের বলে একই চেষ্টা করতে গিয়ে ফিরেন ফ্লেচার। তার ৪৬ বলের ইনিংসটিতে ৮টি চারের পাশে ছক্কা চারটি। তার বিদায়ের পর নিয়মিত উইকেট হারিয়ে বড় ব্যবধানেই হারে সিলেট।
অষ্টম বোলার হিসেবে আক্রমণে এসে তিন বলের মধ্যে বাবর আজম ও সাব্বির রহমানকে ফিরিয়ে দেন স্টিয়ান ফন সিল। ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ সৌম্য সরকার মাথা খাটিয়ে বোলিংয়ের পুরস্কার পেয়েছেন। চার বলের মধ্যে তুলে নিয়েছেন আবুল হাসান ও টিম ব্রেসনানের উইকেট।
আট নম্বরে এক ছক্কা হাঁকিয়ে ফিরে যান নাসির হোসেন। সাত নম্বরে নেমে ১৬ বলে ২৮ রান করে ম্যাচের শেষ বলে ফিরেন নুরুল হাসান।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন রনকি। বিপিএলে প্রথম খেলতে নামা পাকিস্তানের গুলাম মুদাস্সরের ওভার থেকে দুটি চার আর একটি ছক্কায় তুলে নেন ১৫ রান।
নাসির হোসেনের পরের ওভারেও রনকির ব্যাট থেকে দুটি বাউন্ডারি। এরপরও অহেতুক অফ স্পিনারকে বেরিয়ে এসে মারতে চাইলেন সরকার। ব্যাট ছোঁয়াতে ব্যর্থ হয়ে ফিরলেন স্টাম্পড হয়ে। তিন নম্বরে নেমে ব্যর্থ এনামুল হক।
রনকি আর ফন সিলের ব্যাটে তবুও দ্রুত এগোয় চিটাগং। নাসিরের হাতে জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি রনকি। চিটাগং অধিনায়ক ফিরেন আর কোনো রান যোগ না করেই। ২৫ বলে খেলা তার ৪১ বলের ইনিংসে ৬টি চারের পাশে ছক্কা একটি।
ফন সিলের সঙ্গে ৭৩ রানের জুটিতে দলকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন রাজা। রান উৎসবের ম্যাচে সিলেটের সবচেয়ে হিসেবি বোলার কামরুল ইসলাম রাব্বি ফেরান ২৬ বলে ৪০ রান করা সিলকে।
৬ রানে ফিরতে পারতেন রাজা। কঠিন সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি নাসির। জীবন পেয়ে বোলারদের ওপর চড়াও রাজা। ৩০ বলে পাঁচটি চার আর তিনটি ছক্কায় পৌঁছান পঞ্চাশে।
পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর সিলেটের বোলারদের নাকের পানি-চোখের পানি এক করে ছাড়েন জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার রাজা। পরের ১৫ বলে তার ব্যাট থেকে আসে আরও চারটি চার আর তিনটি ছক্কা।
শেষ ওভারে প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে নাজিবুল্লাহ জাদরান স্ট্রাইক দেন রাজাকে। জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডারের প্রথম সেঞ্চুরির জন্য দরকার ছিল ৫ রান। ছক্কায় চেয়েছিলেন তিন অঙ্কে যেতে। সীমানায় চমৎকার এক ক্যাচ মুঠোয় নেন আন্দ্রে ফ্লেচার।
৪৫ বলে ৯টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৯৫ রান করে ফিরেন রাজা। চলতি আসরে এখন পর্যন্ত এটাই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। আগের সেরা ছিল রনকির ৭৮।
১০ ওভার শেষে চিটাগংয়ের রান ছিল ৮৪। রাজার ঝড়ো ইনিংসে শেষ ১০ ওভারে দলটি তুলে ১২৭ রান। শেষের এই ঝড়টাই ব্যবধান গড়ে দেয় দুই দলের মধ্যে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চিটাগং ভাইকিংস: ২০ ওভারে ২১১ (রনকি ৪১, সৌম্য ১, এনামুল ৩, ফন সিল ৪০, রাজা ৯৫, নাজিবুল্লাহ ১৯*, রিস ৪*; মুদাস্সর ০/৩১, নাসির ১/৩৪, তাইজুল ০/৩০, ব্রেসনান ১/৩৮, হাসান ১/৪২, রাব্বি ২/৩৫)
সিলেট সিক্সার্স: ২০ ওভারে ১৭১/৮ (গুনাথিলকা ১০, ফ্লেচার ৭১, বাবর ৪১, সাব্বির ৩, ব্রেসনান ২, হাসান ০, নুরুল ২৮, নাসির ৮, রাব্বি ৪*; সানজামুল ১/২৪, রাজা ০/১৩, শুভাশিস ০/৩০, তাসকিন ৩/৩১, রিস ০/২২, তানবীর ০/২০, সৌম্য ২/১৭, ফন সিল ২/১৪)
ফল: চিটাগং ভাইকিংস ৪০ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সিকান্দার রাজা