বাদ পড়ার পরদিনই ফিরলেন মুমিনুল

প্রথমবারের মত টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। তবে বাইরে থাকতে হলো না একদিনের বেশি। আবার দলে ঢুকলেন মুমিনুল হক। তাকে ফেরার পথ তৈরি করে দিয়েছে মোসাদ্দেক হোসেনের চোখের সমস্যা। চোখের কর্নিয়ার সমস্যায় ছিটকে গেছেন তরুণ এই অলরাউন্ডার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 August 2017, 12:09 PM
Updated : 20 August 2017, 02:27 PM

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের জন্য শনিবার ঘোষিত ১৪ জনের স্কোয়াডে ছিলেন না মুমিনুল। 'বিতর্কিত' এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তুমুল প্রশ্নের মুখে পড়েন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ও অন্যতম নির্বাচক ও কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে। রোববার বিকেলে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান জানালেন, মোসাদ্দেকের জায়গায় আবার নেওয়া হয়েছে মুমিনুলকে।

“সৈকতের চোখের সমস্যা আছে। এখন পর্যন্ত সমাধান হয়নি। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটা সিরিজে এমন ঝুঁকি নিয়ে একজন খেলোয়াড়কে রাখবো কেন? ওর জায়গায় মুমিনুলকে যোগ করে দিচ্ছি আমরা।”

চোখের কর্নিয়ার এই ইনফেকশন ভালোই ভোগাচ্ছে মোসাদ্দেককে। চট্টগ্রামে দলের প্রস্তুতি ক্যাম্পেও থাকতে পারেনি এই সমস্যার কারণে। সাধারণত তিন সপ্তাহেই ভালো হয়ে যায় এটি। মোসাদ্দেকের তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। তবে সময় নিচ্ছে আরও বেশি।

গত বৃহস্পতিবার মিরপুর সেন্টার উইকেটে ম্যাচ পরিস্থিতির মতো করে অনুশীলনে ছিলেন মোসাদ্দেক। ব্যাটিংও করেছেন। তবে ফিল্ডিংয়ের সময় ভীষণ জ্বালা অনুভব করেন চোখে। পরে শুক্রবার অনুশীলনে থাকলেও মাঠে নামেননি তিনি।

তার সমস্যাটি মূলত রোদে। ইনডোরে অনুশীলনে সমস্যা খুব বেশি নেই। বাইরে ছায়াতে থাকলেও অসুবিধা নেই। তবে চোখে রোদ লাগলে ভবিষ্যতের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে। তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলে এই ধরণের সমস্যা কতদিনে ঠিক হতে পারে, সেটি নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। রোববার রাতে ধানমণ্ডির একটি চোখের ক্লিনিকে আরেক দফা পরীক্ষা হওয়ার কথা মোসাদ্দেকের।

দেশের সবশেষ টেস্টে অভিষিক্ত মোসাদ্দেক ৭৫ রান করে অবদান রেখেছিলেন দলের জয়ে। খেলতে পারছেন না পরের টেস্টই। তার দুর্ভাগ্যই সৌভাগ্য বয়ে আনল মুমিনুলের জন্য।

শনিবার সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসেছিলেন নাজমুল হাসান। পরদিন শুনেছেন কোচদের কথা। সব শুনে বিসিবি প্রধানের মনে হয়েছে, পরিস্থিতির শিকার হয়ে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের প্রথম ম্যাচের দল থেকে বাদ পড়েছেন মুমিনুল।

“মুমিনুল বাদ পড়ার কোনো কারণ নাই। ও কেন বাদ পড়লো সে ব্যাপারেও কথা বলেছি। মুমিনুলের সঙ্গে কোচ কথা বলবে, আমি কথা বলবো। ওর মন খারাপ করার কোনো কারণ নেই।”

ঢাকা টেস্টের দলে মুমিনুল বাদ পড়ায় নিজেও দুঃখ পেয়েছেন বোর্ড প্রধান। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের প্রতি সর্বোচ্চ নজর রাখার।

“মুমিনুল আমাদের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান, এ নিয়ে কারওরই কোনো সন্দেহ নেই। ওকে যখন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল তখন আমরা চেয়েছিলাম, ও টেস্টে আরও বেশি মনোযোগ দিক। ওকে আমরা কিন্তু টেস্ট বিশেষজ্ঞ হিসেবে দেখছি। ও যদি টেস্ট দলে না থাকে তাহলে তো খারাপ লাগবেই।”

“মুমিনুল বাদ পড়ার মতো কোনো খেলোয়াড় হতেই পারে না। এখনও আমি মনে করি, টেস্টে ওর সামনে বিশাল ক্যারিয়ার রয়েছে। আর সামনেও ও খুব ভালো খেলবে।”

নাজমুল হাসান মনে করেন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হাথুরুসিংহের বিশেষ পরিকল্পনা, বাংলাদেশের সবশেষ টেস্টের দল থেকে বেশি পরিবর্তন আনতে না চাওয়া আর মুশফিকুর রহিমকে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলানোর ভাবনা থেকে বাদ পড়েছিলেন মুমিনুল। আরও ভালোভাবে ব্যাপারটি সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল।

“পরিকল্পনা শোনার পর ও সেরা একাদশে খেলতো কি না জানি না। তবে স্কোয়াডে থাকতে কোনো সমস্যা দেখি না। ১৪ জনের জায়গায় ১৫ জন করে দিলেই তো হতো! আমরা এই বিতর্কে যাব কেন। ১৫ জনের দল করে মুমিনুলকে রেখে দিতাম। মুমিনুলকে নিয়ে কারও চিন্তার কোনো কারণ নেই। কারণ, ও দেশের সম্পদ। ওকে যথাযথ মূল্যায়ন যেন করা হয়, যথাযথ সুযোগ যেন দেওয়া হয় তা আমরা নিশ্চিত করবো।”