এনামুলের ৩ রানের আক্ষেপ, রসুলের ৯

স্রেফ একটি শটের ব্যাপার। যদি লাগত ব্যাটের ঠিক জায়গায়, আর বল ছুটত ফাঁকায়, হতে পারত সেঞ্চুরি। কিন্তু এনামুল হক আউট হলেন সেখানেই। আউট হয়ে পারভেজ রসুলের আক্ষেপটা হয়ত আরেকটু বেশি। এনামুল তো এই স্বাদ পেয়েছেন অনেকবার, রসুলের হতে পারত লিস্ট “এ” ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি। কিন্তু হারালেন সুবাস পেয়েও!

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 April 2017, 01:06 PM
Updated : 29 April 2017, 01:06 PM

দিন শেষে অবশ্য দুজনের আক্ষেপ অনেকটাই কমে যাওয়ার কথা। দলের জয়ের চেয়ে বড় পুরস্কার আর কী আছে! আর সেটি যদি হয়, চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে, তবে তো কথাই নেই। এনামুল-রসুলের গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ২৫ রানে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেডকে।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে বিকেএসপি তিন নম্বর মাঠে গাজী তুলেছিল ২৮২ রান। আবাহনী করতে পেরেছে ২৫৭। এই নিয়ে পাঁচ ম্যাচের সবকটি জিতল গাজী গ্রুপ। সমান ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী হারল দুটি।

গাজীর উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান এনামুল হক করেছে ৯৭, ভারতীয় অলরাউন্ডার পারভেজ রসুল ৯১।

টস হেরে ব্যাটিং পাওয়া গাজীকে শুরুর দিকটায় টেনেছেন এনামুল। ওপেনার জহুরুল ইসলামকে শুরুতে হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে মুমিনুলের সঙ্গে এনামুলের জুটি ৬১ রানের।

আগের ম্যাচে ১৫২ করা মুমিনুল এবার ফিরেছেন ২৩ রানে। অভিষিক্ত মুনিম শাহরিয়ার পারেননি টিকতে। বড় জুটি এরপরই। চতুর্থ উইকেটে এনামুল ও রসুল তোলেন ৯৩ রান।

৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৯৭ করে আউট হন এনামুল। লিগে তার তিনটি অর্ধশতক থমকে গেল সেঞ্চুরির আগেই।

গাজীর ম্যাচ জেতানো জুটি এরপরই। পঞ্চম উইকেটে নাদিফ চৌধুরি ও রসুল গড়েন ৬২ বলে ৮০ রানের জুটি।

৮৭ বলে ৯১ রানে ফেরেন রসুল। ইনিংসের বাকি ছিল তখনও তিন ওভার। নাসির হোসেন জাতীয় দলের ক্যা্ম্পে চলে যাওয়ায় নেতৃত্ব পাওয়া নাদিফ ৩৪ বলে করেছেন ৪১।

২৮৩ রান তাড়ায় আবাহনীর শুরুটা ভালোই ছিল। লিটন দাস ও সাইফ হোসেন উদ্বোধনী জুটিতে তোলেন ৫৫ রান। সাইফকে হারিয়ে জুটি ভাঙার খানিক পর ফিরে যান ৪২ বলে ৪২ রান করা লিটনও।

এরপর মিডল অর্ডারে থিতু হয়েছেন সবাই, কিন্তু কেউ লম্বা করতে পারেননি ইনিংস। নাজমুল হোসেন শান্ত, মিঠুন ও শুভাগতরা ফিরে গেছেন সম্ভাবনা জাগিয়েও।

ছয়ে নেমে একাই চেষ্টা করে গেছেন তরুণ আফিফ হোসেন। কিন্তু দলকে জেতানোর লড়াইয়ে সঙ্গী পাননি কাউকে। ভারতীয় অলরাউন্ডার মনন শর্মা করেছেন ১৮।

১৮৫ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর সাইফ উদ্দিনকে নিয়ে আবার সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন আফিফ। অষ্টম উইকেটে ৫৩ রানের জুটি গড়েন দুজন। তবে শেষ পর্যন্ত সঙ্গীর অভাবে নিজে অপরাজিত থেকেও দলের হার নিয়ে ফেরেন আফিফ।

মাত্র তৃতীয় লিস্ট “এ’ ম্যাচ খেলতে নেমে আফিফ অপরাজিত ৮০ বলে ৭৬ রানে। বিপিএলে অভিষেকে ৫ উইকেট নিয়ে সাড়া জাগানো তরুণ অলরাউন্ডার এরপর চারটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেই করেছেন দুটি সেঞ্চুরি।

৯১ রানের পর একটি উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা পারভেজ রসুল। এখনও পর্যন্ত লিগের সেরা ক্রিকেটারও কাশ্মিরের এই অলরাউন্ডারই। ৫ ম্যাচে উইকেট ৯টি, তিন ইনিংস ব্যাট করে তিনটিতেই অর্ধশতক। গড় ও স্ট্রাইক রেট, দুটিই একশ ছুঁইছুঁই!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

গাজী গ্রুপ: ৫০ ওভারে ২৮২/৯ (এনামুল ৯৭, জহুরুল ৩, মুমিনুল ২৩, মুনিম ৮, রসুল ৯১, নাদিফ ৪১, আলাউদ্দিন ২, আবু হায়দার ৮, মেহেদি ২, নাঈম জুনিয়র ১*; সাইফ উদ্দিন ৩/৫৬, সুজন ০/৪৯, অনিক ৩/৫৮, আফিফ ১/২২, মনন ২/৫৬, সাকলাইন ০/৩৮)।

আবাহনী: ৪৮.১ ওভারে ২৫৭ (লিটন ৪২, সাইফ ১৬, শান্ত ১৭, মিঠুন ২১, শুভাগত ১৮, আফিফ ৭৬, মনন ১৮, সুজন ০, সাইফ উদ্দিন ২৬, অনিক ০, সাকলাইন ৪; আবু হায়দার ২/৩৭, আলাউদ্দিন ৩/৪৫, মেহেদি ১/৫৩, হোসাইন ২/৩৮, নাঈম জুনি. ১/২৬, রসুল ১/৪৬, মুমিনুল ০/৯)।

ফল: গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ২৫ রানের জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: পারভেজ রসুল