আফগানিস্তান সিরিজে দুটি ওয়ানডে খেলার পর দলে জায়গা হারান রুবেল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে পাননি সুযোগ। এবার জায়গা হয়নি নিউ জিল্যান্ড সফরের আগে প্রস্তুতি ক্যাম্পের দলেও।
ক্যাম্পের দলে পেসার হিসেবে ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার পাশাপাশি আছেন অস্ত্রোপচারের পর পুনর্বাসনে থাকা মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শফিউল ইসলাম, শুভাশীষ রায়, মোহাম্মদ শহীদ। আর এবাদত হোসেনকে রাখা হয়েছে তাকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করতে।
এমনিতে রুবেলের টেস্ট পারফরমান্স ভীষণ বিবর্ণ। ২৩ টেস্টে নিয়েছেন মাত্র ৩২ উইকেট। গড় ৭৫.৯০, স্ট্রাইক রেট ১১৬.৬, দুটিই ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে রেকর্ডের অন্যতম।
তবে শুধু রেকর্ডই নয়, রুবেলকে দলে না রাখার আরও কারণ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন প্রধান নির্বাচক।
“আফগানিস্তান সিরিজে ওর বোলিং আহামরি ছিল না। স্কিল বোলিং ফিটনেসে ওর ঘাটতিটা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। মানে ছন্দে থাকা, লম্বা সময় বোলিং করা, এসবে ঘাটতি চোখে পড়েছে।”
আফগানিস্তান সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৯ ওভারে ৬২ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছিলেন রুবেল। পরের ম্যাচে ৩ ওভারে ২৪ রান দেওয়ার পর আর বোলিং দেওয়ার সাহস করেননি অধিনায়ক। যে জায়গায় ছিল রুবেলের বিশেষত্ব, সেই পুরোনো বলে আগের মত কার্যকর মনে হয়নি তাকে।
রুবেলের ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচক বললেন দুর্ভাগ্যের কথাও। ভবিষ্যেতের জন্য দিলেন আশা।
“একটা জায়গায় রুবেলের ভাগ্য খারাপ, জাতীয় লিগে বেশি বোলিং করার সুযোগ পায়নি। দুটি ম্যাচেই বৃষ্টি হলো। লিগে ২০-২৫ ওভার বোলিং করলে হয়ত আমরা বুঝতে পারতাম যে স্কিল ফিটনেসটা পেয়েছে। তবে সব তো শেষ হয়ে যায়নি। সামনে অনেক খেলা আছে। ভালো করলে আবার ফিরবে।”
জাতীয় লিগে খুলনার হয়ে রুবেল দুটি ম্যাচে থাকলেও বাগড়া দিয়েছে বৃষ্টি। একটিতে বোলিং করতে পেরেছিলেন মোটে ৫ ওভার, আরেকটিতে এক ওভারও নয়!
নির্বাচকদের আরেকজন ও জাতীয় দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ উল্লেখ করলেন রুবেলকে নিয়ে আরেকটি হতাশার কথাও।
“রুবেলকে দেখে মনে হয়েছে ঠিক ছন্দে নেই। আমাদের মনে হয়েছে ওর পেস কিছুটা কমে গেছে। ওর এ রকম বিবর্ণ হয়ে যাওয়াটা দেশের ক্রিকেটের জন্যই হতাশাজনক। ২২-২৩টি টেস্ট খেলার পর আমরা আশা করি যে একজন বোলার দলের বোলিং আক্রমণের দায়িত্ব নেবে। রুবেল ঠিক সেই জায়গাটায় নিজেকে আনতে পারেনি।”
“তবে দলে নেই মানেই সে একেবারে বাদ নয়। ফেরার সুযোগ সব সময়ই আছে, যদি ছন্দে ফিরতে পারে।”
রুবেলের পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে আল আমিনের না থাকা নিয়েও। টেস্ট পারফরম্যান্স যদিও রুবেলের মতো তারও ভীষণ বিবর্ণ। ৬ টেস্টে ৬ উইকেট নিয়েছেন ৭৬.৬৬ গড় ও ১৪৬.৬ স্ট্রাইক রেটে। কিন্তু ইংল্যান্ড সিরিজে আহামরি কিছু করতে পারেননি শফিউল ইসলামও।
আল আমিনের ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচক বললেন অন্য বিকল্পদের নাম।
“চোট কাটিয়ে শহীদ ফিরেছে। মাশরাফি-তাসকিন তো আছেই। মুস্তাফিজ ফিরবে আশা করি। শফিউল তো খুব ভালো করছে আমাদের মতে। রিদমে আছে বেশ। শুভাশীষ ওই কন্ডিশনে যথেষ্টই ভাল করতে পারে আমাদের ধারণা।”
রুবেল-আল আমিনের সঙ্গে স্ট্যান্ড বাই তালিকায় আছেন ইংল্যান্ড সিরিজে দুই টেস্টই খেলা পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি।
প্রধান নির্বাচক আশা দেখালেন সবাইকেই।
“এই সিরিজই তো শেষ নয়। সামনের বছর আমাদের অনেক খেলা আছে। বেশির ভাগই দেশের বাইরে। ভালো করতে থাকলে সবারই সুযোগ আসতে পারে যে কোনো সময়।”