‘স্বাধীনতা থাকবে’, নিশ্চয়তা পেয়েই এসেছেন নতুন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ

মুক্তভাবে কাজ করতে না পারলে বিদায়ের দুয়ারও নিজের জন্য সবসময় খোলা রাখবেন গাজী আশরাফ হোসেন।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2024, 10:32 AM
Updated : 13 Feb 2024, 10:33 AM

শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের গেট দিয়ে গাড়িটি ঢুকতেই সেদিকে ছুটে গেলেন ক্যামেরাপার্সনরা। গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন গাজী আশরাফ হোসেন। তার দিকে তাক করা তখন গোটা ৩০ ক্যামেরা। বিসিবি অফিসের ভেতরে ঢুকে যাওয়া পর্যন্ত তাকে অনুসরণ করল ক্যামেরার চোখ। এতটা মনোযোগ, এত কৌতূহলের কেন্দ্রে গত এক যুগে ছিলেন না সাবেক এই অধিনায়ক ও সাবেক বিসিবি পরিচালক। পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শুরুতেই বললেন, ‘সত্যি বলতে অনেক দিন পর বিসিবি প্রাঙ্গনে এলাম… একটা নতুন দায়িত্ব নিয়ে।”

তার নতুন দায়িত্বের খবর এখন আর নতুন নয়। আগামী ১ মার্চ থেকে বিসিবির জাতীয় নির্বাচক কমিটির প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করবেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেশের প্রথম অধিনায়ক তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটেও আছ গৌরবময় ক্যারিয়ার। খেলা ছাড়ার পর একসময় তিনি জাতীয় দলের ম্যানেজার ছিলেন, তার সেই দায়িত্বের সময়ই ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি জয় করে বাংলাদেশ। পরে বোর্ড পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। ছিলেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধানও। এখন এই ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের অধীনেই তার কাজ করতে আসাটা বেশ কৌতূহল জাগানিয়া।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে সেই কৌতূহল মেটালেন গাজী আশরাফ হোসেন। জবাব দিলেন প্রাসঙ্গিক আরও অনেক প্রশ্নের। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গটিও এগিয়ে গেলেন। স্পষ্ট কণ্ঠেই তিনি বললেন, মুক্তভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পেয়েই তিনি এসেছেন এই দায়িত্বে। সেই স্বাধীনতা খর্ব হলে বেরিয়ে যাওয়ার দুয়াও নিজের জন্য খোলা রেখেছেন তিনি।

বিসিবি প্রধান কালকে বলেছিলেন, আপনার নামটি আসার পর তাদের মূল ভাবনার জায়গা ছিল, আপনি নিজে রাজি হবে কি না। তো আপনি আসলে রাজি হলেন কোন ভাবনা থেকে?

গাজী আশরাফ হোসেন: ক্রিকেট বোর্ডে আমি অনেক দিন ধরেই নেই, ২০১৩ সালের পর থেকে। করোনাকালীন সময়ে, আগেও একাধিকবার বিভিন্ন ভূমিকায় বোর্ডের সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু আমার মা অসুস্থ ছিলেন। তখন এসব চিন্তা করারই সুযোগ হয়নি। নির্বাচনের আগেও প্রস্তাব এসেছিল।”

এবার যখন কথা বললাম, আমার দিক থেকে বলছি যে, এই উইন্ডো ওপেন করার আগে, বিসিবিতে পরিচালক হিসেবে কাজ করে এসেছি, এটা অনেকেই জানেন। তবে অনেকই জানেন না, ২০০৭-০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যে অ্যাডহক কমিটি ছিল, সেসময় সম্ভবত ৫টি আইসিসি বোর্ড সভায় আমি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছি। এতগুলো পদে সার্ভ করে এসে এখন এই ভূমিকায় আসা, যেখানে একটা নিয়মের মধ্যে পে-রোলে কাজ করতে হবে দায়িত্ব নিয়ে… সেটার জন্য একটা ডোর ওপেনিং স্পেস চেয়েছিলাম।

অবশ্যই একটা নির্বাচিত বোর্ডে পরিচালকরা ও সবাই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাজ করেন। এ্রর বাইরে সমমান বজায় রেখে একটা সম্মান যেন এই পদটাকে (প্রধান নির্বাচক) দেওয়া হয়… সেই জায়গায় তারা আমাকে আন্তরিকভাবেই স্বাগত জানায়। সেটাই আমাকে সুযোগ করে দেয় পরবর্তী পর্যায়ে নির্বাচক কমিটির চেয়ার‌ম্যান হিসেবে কাজে সম্মতি দেওয়ার ক্ষেত্রে।

নির্বাচক কমিটির কাজে বোর্ডের হস্তক্ষেপ নিয়ে অনেক সময়ই কথটা উঠেছে। আপনার সঙ্গে বোর্ডের কথা হয়েছে কি না যে, সেই স্বাধীনতা পাবেন?

গাজী আশরাফ: স্বাধীনতা থাকবে, এই ব্যাপারে আমার সঙ্গে কথা হয়েছে।

আপনি কতটা আশাবাদী যে স্বাধীনতা থাকবেই? লিখিত দেওয়া হয়েছে আপনাকে কিছু?

গাজী আশরাফ: আমার বিশ্বাস, স্বাধীনভাবে না হলে কাজ করে কোনো আনন্দ নেই। তো রাস্তা সবসময় খোলা আছে। আসার রাস্তা যেমন খোলা, যাওয়ার রাস্তাও খোলা।

আগের নির্বাচক কমিটির নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে আপনার চিন্তা-ভাবনা আসলে কি? তারা কি সবসময় সঠিক প্রক্রিয়ায় ছিল?

গাজী আশরাফ: আগের প্রক্রিয়া নিয়ে আর কথা বাড়াতে চাই না। এটা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে এবং আমরা জানি যে এটা অনেক বড় একটা ব্যাপার। তবে দল নির্বাচন যেহেতু, অবশ্যই এখানে অধিনায়ক ও কোচ সম্পৃক্ত থাকবেন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যে সিস্টেম আছে, এটার মধ্যেই রাখার চেষ্টা করব।

বাংলাদেশের বাস্তবতায় কোচ তো সম্পৃক্ততার বেশি কিছুই চর্চা করতে চান বলে শোনা যায়। ২০১৬ সালে সেই সময়ে প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ এই কারণেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন। প্রবল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন বলে পরিচিতি আছে আপনারও। আপনি এটা কিভাবে সামলাবেন, যেহেতু সেই কোচ এখনও আছে…?

গাজী আশরাফ: বল ইজ নট ডেলিভার্ড ইয়েট… সো লেট দা বল কাম অ্যান্ড লেট মি প্লে দা বল… অলরাইট? (হাসি)।

দল নির্বাচনে কোচের ভূমিকা আসলে কেমন থাকবে? কত শতাংশ মতামত দেওয়ার এখতিয়ার তার আছে?

গাজী আশরাফ: আমি আনুষ্ঠানিকভাবে আরও কয়েকদিন পর দায়িত্ব নেব। সবকিছুর উত্তর আমি এখনই দিতে চাই না। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধানের সঙ্গে কথা বলে কিছু ব্যাপার আরও পরিষ্কার করে নিতে হবে। তার আগেই গণমাধ্যমে অনেক কিছু বলতে চাই না।

তবে আমার যেটা ভিশন থাকবে, আপনারা জানেন যে আমাদের খেলোয়াড়ের সীমাবদ্ধতা আছে। সবকিছুই ঢাকা কেন্দ্রীক। এখান থেকেই ক্রিকেটার বাছাই করতে হয়। অন্যান্য দেশগুলোয় যেমন প্রাদেশিক ক্রিকেট আছে, ঠিক অতটা ঝামেলাপূর্ণ নয় এখানে। অপশনগুলো আমরা সবাই জানি। সেখানে প্রতিপক্ষের আলোকে এবং দেশে খেলছি না কোথায় খেলছি, এসব ভেবে ও প্রতিপক্ষের শক্তি বিবেচনা করে দল গড়তে চাইব।

আমার যে ভিশন আছে, নিশ্চয়ই আমার টিমে যারা আছে, তাদের সঙ্গে শেয়ার করব, সেটা হলো, আমি কিছু ডাটা ভিত্তিক কাজ করতে চাই। ক্রিকেট যুগে যুগে পাল্টাচ্ছে। ১০-১৫ বছর আগে তাদের যে লোড নিতে হতো, দ্বিপাক্ষিক সিরিজ, ঘরোয়া ক্রিকেট মিলিয়ে যত খেলা খেলতে হতো, এখন অনেক বেশি। ক্রিকেটারদের লোড ম্যানেজমেন্ট, ইনজুরি, কার কতটা খেলতে হচ্ছে, এই জিনিসগুলির ডাটা আশা করি অপারেশন্স কমিটি ও মেডিকেল কমিটির কাচ থেকে পাব। কেন কোন বয়সে দাঁড়িয়ে আছে, সেটা বিশ্লেষণ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ইয়োলো-গ্রিন, ইয়োলো-রেড, এরকম কিছু ছক করতে হবে।

ক্রিকেটারদের সবাইকেই একটা সময় চলে যেতে হয়। সেই জায়গাটায় যেন বিকল্প থাকে, আমাদের 'এ' দলের সক্রিয়তা কিংবা তারা যেন প্রস্তুত থাকে, সেরকম পরিকল্পনা নিয়ে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের সঙ্গে বসে আমাদের ভিশনগুলো দেওয়ার চেষ্টা করব, যেন ভালো একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে ক্রিকেটাররা সেখানে যেতে পারে।

পাশাপাশি, ক্রিকেট সূচি নিয়ে আমাদের তরফ থেকে কিছু নজরদারি থাকবে যে, জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক ব্যস্ততার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে খেলোয়াড়রা যদি দেশের ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করতে পারে, যাতে তার প্রতিফলন জাতীয় দলের পারফরম্যান্সে পড়ে। আবার, কিছু ক্রিকেটার অনেক সময় হয়তো দলের সঙ্গে গেছে কিন্তু খেলার সুযোগ পায়নি। সেটা কত শতাংশ ছিল, সেসব দেখা এবং কারণগুলো একটু বিশ্লেষণ করা বা খতিয়ে দেখা...

এবং আমরা যখন বসব, তখন একটা পরিকল্পনা আমাদের থাকবে যে, পরিকল্পনার আলোকে সেরা ১১ বা ১২ জন বাছাই করে পরে বাকি ২-৩ জন নির্বাচন করা, যাতে খুব পরিষ্কার একটা ধারণা তৈরি হয়ে যায় কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে আমাদের যে, আমাদের ব্যাটিং অর্ডার কেমন।

আমরা দেখেছি, বিভিন্ন জায়গায় ওঠা-নামা অনেক বেশি হয়েছে (ব্যাটিং অর্ডার)। সেসব জায়গায় কেউ যদি পারফর্ম করতে না পারে, তাহলে বিকল্প যেন তৈরি থাকে এবং সুযোগ যেন পেতে পারে। একই সঙ্গে দেখব, ঘরোয়া ক্রিকেটেও যেন তারা সেই সুযোগ পায়, সেরকম একটা আবগ ঘরোয়া আসরে তৈরি করা যায় কি না।

তাহলে কি সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে আপনি বসবেন তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে?

গাজী আশরাফ: ক্রিকেটারদের সঙ্গে অবশ্যই আমার পরিচয়ের ব্যাপার আছে। তাদের সঙ্গে কথা বলব। কারণ তামিমদের (তামিম ইকবাল) আমি চিনি, সবার সঙ্গে পরিচয় আছে। নতুন অনেকের সঙ্গে পরিচয় নেই। সেই পরিচয়ের চেষ্টা করব। কথা বলব। তাদের সঙ্গে মত বিনিময় হওয়া উচিত। সেই সম্পর্কটা স্থাপন করাটা নির্ভর করবে তারা কখন ফাঁকা আছে।

নির্বাচকদের কাজটা অনেকটা 'থ্যাংকলেস জব।' বিশেষ করে বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে প্রচুল ট্রল, ব্যক্তিগত আক্রমণ, সমালোচনা অনেক কিছু হয়। আগের প্রথান নির্বাচকও এসবের মুখোমুখি হয়েছেন অনেক। আপনি এই চ্যালেঞ্জে মানিয়ে নিতে কতটা প্রস্তুত?

গাজী আশরাফ: আগের প্রধান নির্বাচক নান্নুর (মিনহাজুল আবেদীন) সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি এই পদে নিয়োগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সুমনও (হাবিবুল বাশার) অভিনন্দন জানিয়েছে। ওর সঙ্গেও কথা হয়েছে ফোনে। আমাদের সবার সম্পর্ক খুব উষ্ণ।

নান্নু ও আমি, আমরা যখন ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতাম, তখন অনেক দর্শক আসতেন। প্রতিদিনই আমাদের গালি খেতে হতো। জয়ী হলে প্রতিপক্ষ, হেরে গেলে নিজ দলের সমর্থকেরাই আমাদের গালমন্দ করত। ক্রিকেট খেলাটাই চাপের। মাঠে যারা খেলবে, তাদের যেমন অনেক চাপ, তেমনি মাঠের বাইরের বডি আমরা, আমাদেরকেও শুনতে হবে।

আমার মনে হয়, নিজের বিবেকের কাছে যদি পরিষ্কার থাকি, এটা কঠিন কোনো ব্যাপার নয়। এটা যার যার রুচির ব্যাপার কে কীভাবে কোন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখছেন এবং কীভাবে লেখনির মাধ্যমে তার মতামত প্রকাশ করছেন।বা োয

কোচের মতামত দল নির্বাচনে কতটা প্রাধান্য পাবে, এটা নিয়ে আসলে অনেক কথা হচ্ছে। আপনি কিভাবে দেখছেন?

গাজী আশরাফ: কোচের সঙ্গে আমার তো এখনও দেখাই হয়নি। নিশ্চয়ই দেখা হলে মত বিনিময় হবে। তার দর্শনটা আমি জানতে পারব। আমি কোন দর্শন নিয়ে এই পদে এসেছি, তিনিও সেটা জানতে পারবেন।

আমাদের দুজনের এবং গোটা দলের (নির্বাচক কমিটির) তো একই লক্ষ্য যে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যেন ভালো করে, পারফর্ম করে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করব ও এগোব।

দ্বি-স্তর বিশিষ্ট নির্বাচক কমিটি (যেখানে ওপরের স্তরে ছিলেন কোচ, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান) কি এখনও আছে?

গাজী আশরাফ: এটা নিয়ে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জবাব দেবেন। তাকেই উত্তর দিতে দিন।

বিদায়ী প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন একটা কথা বলেছেন, 'যে-ই দায়িত্বে আসুক না কেন, আমাদের স্টাইলে কাজ করতে হবে।' আপনি কি আত্মবিশ্বাসী যে সেই স্টাইলেই কাজ করতে পারবেন?

গাজী আশরাফ: নান্নু যে স্টাইলে কাজ করেছেন সেটা তো দূর থেকে দেখা বা গণমাধ্যম থেকে শোনা। যেহেতু খোলাখুলি বিশদভাবে বলেনি, এটার জবাব দিতে চাই না।

আমি কোন স্টাইলে কাজ করব বা করতে পারব নাকি পারব না, এটা সময়ই বলে দেবে। ভালো কিছুর সঙ্গে আপোস করতে কখনোই দোষ নেই, যদি সেটা বৃহত্তর স্বার্থে হয়। সেই ইগো নিয়ে কখনোই চলব না। কেউ যদি আমার চেয়ে ভালো কোনো পরামর্শ দেয় এবং সেটা যদি দলের জন্য ভালো হয়, তাহলে মোস্ট ওয়েলকাম।

পাশাপাশি আমাদের যে কাজটা, সেই জায়গায় যদি স্বাধীনতার খর্ব হয়, তাহলে সেটা আপত্তিজনক।

আগের কমিটি নিয়ে মূল আপত্তির জায়গা ছিল যে তারা অনেক বছর দায়িত্বে ছিলেন। আপনার লক্ষ্য কি, এরকম ম্যারাথন খেলতে চান?

গাজী আশরাফ: আমি এখানে দুই বছরের জন্য এসেছি। দুই বছর ইজ গুড এনাফ, যদি কাজ করতে পারি...।

আপনি কি ঘরোয়া ক্রিকেট খুব ভালোভাবে অনুসরণ করবেন, প্রথম বিভাগ বা দ্বিতীয় বিভাগ?

গাজী আশরাফ: আমাদের যে কাঠামো, সেখানে প্রথম বা দ্বিতীয় বিভাগের কাউকে জাতীয় দলে সুযোগ করে দেওয়া কঠিন। একটা পথপরিক্রমা আছে। আমাদের ঢাকা লিগ আছে, বিসিএল আছে, একাডেমি আছে, 'এ' দল আছে। সেই পথ ধরেই পর্যায়ক্রমে আসবে।

তবে প্রতিভা বাছাইয়ের জন্য তো বয়সভিত্তিক পর্যায়েও নির্বাচক কমিটি আছে। তারা যদি এমন কোনো প্রতিভা খুঁজে পায় এবং আমাদেরকে বলে, তাহলে তাকে দেখার জন্য যেতে আমাদের আপত্তি নেই। এটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সে যোগ্য কি না, বা যোগ্য করে তুলতে পারবে কি না... তাছাড়া সেখানে কোচের মতামতও গুরুত্বপূর্ণ।

অনেকেই আছে নেটে খুব ভালো, কিন্তু এই প্ল্যাটফর্মে মানে ম্যাচে তেমন কিছু হয় না। তবে সেরকম এক্সট্রা অর্ডিনারি কাউকে যদি পাওয়া যায়, আশা করি সেরকম কেউ আসবে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য... তাহলে কেন নয়!

আগের নির্বাচক কমিটি থেকে বলা হতো যে, অনেক সময় তাদেরকে বাছাই করতে হয়, 'কম খারাপ কে'...

গাজী আশরাফ: আমি চাই সবাই ভালো খেলুক এবং আমাদেরকে চাপে ফেলুক যে কাকে রেখে কাকে নেব, সব ভালোর মধ্য থেকে।

গত বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছিল, যারা মাত্র রিপোর্ট জমা দিল। এখনও সেটির অগ্রগতি ভালো নয়। এই অবস্থায় আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল বাছাই কতটা কঠিন হবে আপনাদের জন্য?

গাজী আশরাফ: ওই রিপোর্টের জন্য দল নির্বাচনে বড় প্রভাব পড়বে বলে আমার মনে হয় না। আমাদের মনোযোগ থাকবে ভালো খেলোয়াড়, যোগ্য খেলোয়াড়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার মতো, তাদের দিকে নজর রাখা, তাদেরকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা। সেখানে যদি বিসিবির কোনো সিদ্ধান্তের কারণে কেউ বাদ পড়ে, সেটা বিসিবির এখতিয়ার। তখন স্ট্যান্ড বাই যারা থাকবে, তাদের দিয়ে আমরা আমাদের কাজ এগিয়ে নেব।