৩৬ বলে সেঞ্চুরি করা সেই অ্যান্ডারসন অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র দলে

নিউ জিল্যান্ডের এই সাবেক অলরাউন্ডার এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে, এছাড়াও ভারতের সাবেক দুই ক্রিকেটার জায়গা করে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র দলে, তবে সুযোগ পাননি উন্মুক্ত চাঁদ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2024, 07:58 AM
Updated : 29 March 2024, 07:58 AM

যে লক্ষ্য নিয়ে নিউ জিল্যান্ড ছেড়ে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন কোরি অ্যান্ডারসন, তা পূরণ হলো অবশেষে। সাবেক এই কিউই অলরাউন্ডার প্রথমবার জায়গা পেলেন যুক্তরাষ্ট্র দলে। ১০ বছর আগে ওয়ানডেতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়া ক্রিকেটারকে দেখা যেতে পারে মে মাসে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ ও পরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যুক্তরাষ্ট্র দলেও। 

কানাডার বিপক্ষে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের যুক্তরাষ্ট দলে জায়গা পেয়েছেন অ্যান্ডারসন। ১৫ সদস্যের এই দলে নতুন মুখ আছে আরও বেশ কিছু। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম সাবেক দুই ভারতীয় অলরাউন্ডার মিলিন্দ কুমার ও হারমিত সিং এবং কানাডার হয়ে একসময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা ব্যাটসম্যান নিতিশ কুমার। 

অ্যান্ডারসনের থমকে থাকা আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের নতুন শুরু হবে কানাডার বিপক্ষে সিরিজটি দিয়ে। ২০১২ সালে নিউ জিল্যান্ডের হয়ে তার আন্তর্জাতিক অভিষেক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দিয়ে। টেস্ট ও ওয়ানডে অভিষেকও হয়ে যায় পরের বছর। 

আগ্রাসী এই বাঁহাতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড় ফেলে দেন ২০১৪ সালের প্রথম দিনে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কুইন্সটাউনে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়ে ১৪ ছক্কায় ১৩১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি স্রেফ ৪৭ বলে। শাহিদ আফ্রিদির ৩৭ বলের রেকর্ড ভেঙে ওয়ানডের দ্রুততম সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন তিনি ৩৬ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে। পরে ৩১ বলে সেঞ্চুরি করে সেই রেকর্ড ভেঙে দেন এবি ডি ভিলিয়ার্স।

পরে আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে খেলার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে নানা লিগে খেলেন তিনি। তবে যে সম্ভাবনা নিয়ে শুরু করেছিলেন, তা পূর্ণতা দিতে পারেননি। ১৩ টেস্ট, ৪৯ ওয়ানডে ও ৩১ টি-টোয়েন্টিতে থমকে যায় তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। নিউ জিল্যান্ডের হয়ে তাকে সবশেষ দেখা গেছে ২০১৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে। 

নিউ জিল্যান্ড দলে ফেরার আশা বাদ দিয়ে ২০২০ সালে তিনি থিতু হন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে নাগরিকত্বের জন্য তিন বছর বসবাস করার বাধ্যবাধকতা পূরণ করেন গত বছর। মাঝের সময়টায় সেখানকার ঘরোয়া ক্রিকেটে ঝড় তোলেন ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে। যুক্তরাষ্ট্রের মাইনর লিগ ক্রিকেটে ২৮ ইনিংসে ৯০০ রানের বেশি করেছেন তিনি ১৪৬ স্ট্রাইক রেটে। ৩৩ বছর বয়সে এখন তিনি নতুন শুরুর অপেক্ষায়।

হারমিত সিং ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দল হয়ে পরে খেলেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে। রঞ্জি ট্রফি ও অন্যান্য আসর মিলিয়ে ৩১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ২০১৩ আইপিএলে খেলেছেন রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে। সেই সময় স্পট ফিক্সিং বিতর্কেও তার নাম এসেছিল। তবে পরে তার জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি কোনো। ৩১ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন এখন পূরণ হওয়ার অপেক্ষায়। 

একই অপেক্ষায় আছেন মিলিন্দ কুমারও। ৩৩ বছর বয়সী অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার রঞ্জি ট্রফিতে খেলেছেন ৪৬ ম্যাচ। আইপিএলে একসময় তিনি ছিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু দলে, ম্যাচ খেলার সুযোগ যদিও পাননি। পরে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়ে মাইনর লিগ ক্রিকেটে ১১০০ রান করেছেন ৩৫ ম্যাচে। 

নিতিশ কুমারের ব্যাপারটি একটু অন্যরকম। কানাডার ক্রিকেটে তিনি ছিলেন বড় নাম। ২০১০ সালে কেবল ১৫ বছর বয়সে ওয়ানডে খেলে হইচই ফেলে দেন তিনি। পরের বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপেও তিনি খেলেন কানাডার হয়ে। দীর্ঘ পথচলায় কানাডার অধিনায়কত্বও করেন তিনি। ২০১৯ সালের পর অবশ্য কানাডার হয়ে তাকে আর খেলতে দেখা যায়নি। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়ে এখন তিনি নতুন শুরু করবেন সেই কানাডার বিপক্ষেই।

এতজন নতুন ক্রিকেটার জায়গা পেলেও সুযোগ পাননি সাবেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান উন্মুক্ত চাঁদ। মাইনর লিগ ক্রিকেটে তিন মৌসুমে দুর্দান্ত ধারাবাহিকতায় ৪৫ ইনিংসে দেড় হাজার রান করেছেন তিনি। তবে ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টিতে ও সম্প্রতি প্রস্তুতি ম্যাচগুলোয় সেভাবে ভালো করতে পারেননি। শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে ৭০ রানের ইনিংস খেলেছেন যদিও। তবে তা যথেষ্ট হয়নি দলে ডাক পাওয়ার জন্য। 

কানাডার বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের ৫ ম্যাচের সিরিজটি শুরু ৭ এপ্রিল।