সাত ব্যাংকের রেটিং পর্যালোচনা করবে মুডি’স

বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের সাতটি ব্যাংকের দীর্ঘ মেয়াদী ঋণমান বা রেটিং পুনর্মূল্যায়ণ করার ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা মুডি’স ইনভেস্টর সার্ভিস।

দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের ঋণমান পর্যালোচনার সিদ্ধান্তের পর ব্যাংকগুলোর বিষয়ে মুডি’সের এ ঘোষণা এল।

১২ ডিসেম্বর মুডি’সের ওয়েবসাইটে ওই ঘোষণায় বলা হয়, দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের সর্বভৌম রেটিং ‘বিএ৩’ থেকে পুনর্মূল্যায়ন করতে এসব ব্যাংকের রেটিং পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

এর ব্যাখ্যায় সংস্থাটি জানিয়েছে, বাংলাদেশের সার্বভৌম রেটিংয়ে ব্যাংক খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার সক্ষমতা সরকারের সক্ষমতাতেও প্রভাব ফেলে।

এর অংশ হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড, প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডের ঋণমান পুনর্মূল্যায়ণের কথা বলা হয়েছে ওই ঘোষণায়।

এর বাইরে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের রেটিং এক ধাপ নিচে নামিয়েছে মুডি’স। দীর্ঘ মেয়াদে বৈদেশিক মুদ্রার আমানত সংগ্রহে ব্যাংকটির রেটিং ‘বি২’ থেকে নামিয়ে ‘বি৩’ করা হয়েছে। আর ব্যাংকটির ঋণ দেওয়ার ভিত্তি মূল্যায়ন করে ‘বি৩’ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘সিএএ১’ এ।

সার্বিক আর্থিক অবস্থার ওপর রেটিংস নিতে ব্যাংকগুলো আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাগুলোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। ওই রেটিং বা ঋণমান প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা প্রকাশ এবং আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণে সহায়ক হয়।

এই সাত ব্যাংকও মুডি’স এর সঙ্গে চুক্তিতে একটি নির্দিষ্ট ফি দিয়ে রেটিং নিয়ে থাকে। সেই চুক্তির আলোকেই ব্যাংকগুলোর রেটিংস নিয়মিত পর্যালোচনা করছে মুডি’স।

বাংলাদেশের সার্বভৌম রেটিং যদি কমে যায়, তাহলে ব্যাংকগুলোর দীর্ঘমেয়াদী রেটিংও কমে যাবে বলে জানিয়েছে মুডি’স।

সংস্থাটি বলছে, পুনর্মূল্যায়ন করার সময় বেশ কিছু বিষয় তারা বিবেচনায় নেবে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও এর মধ্যে রয়েছে, পরিস্থিতির উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপগুলোও এক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হবে।

অর্থনৈতিক বিপর্যয় এড়াতে গত কিছুদিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে ব্যাংকগুলোর তারল্য প্রবাহ সঙ্কুচিত হয়েছে।

এসব পদক্ষেপের মধ্যে নতুন এলসি (ঋণপত্র) খুলতে কড়াকড়ি আরোপ করার কথা তুলে ধরে মুডি’স বলেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া এসব উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার তারল্য বাড়বে কি না-তাও মূল্যায়ণ করা হবে।

ব্যাংকগুলো যদি তাদের আর্থিক সূচক, বিশেষ করে গুণগত মানের সম্পদ বৃদ্ধি করতে পারে, যদি ভালো মানের ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি করতে পারে, তাতে ব্যাংকগুলোর রেটিং বাড়ার সুযোগও রয়েছে বলে জানিয়েছে মুডি’স।