ফাঁকি দিয়ে চলছে বিলাসী ‘শতাধিক’ গাড়ি

পর্যটকদের বিশেষ সুবিধার সুযোগ নিয়ে কর ফাঁকি দিয়ে বিলাসবহুল শতাধিক গাড়ি বাংলাদেশে চলছে বলে তথ্য পেয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ।

গোলাম মুজতবা ধ্রুববিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2016, 03:27 AM
Updated : 1 August 2016, 03:48 PM

রাজধানীর গুলশান থেকে সোমবার এমনই একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি জব্দ করেছেন শুল্ক গোয়েন্দারা, যেটির দাম তিন কোটি টাকা।

অবৈধ এই গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগে জেনারেটর ও এলিভেটর ব্যবসায়ী কাজী রেজাউল মোস্তফাকে আটক করা হয়েছে বলে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের মহাপরিচালক মইনুল খান জানিয়েছেন।

শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, গত বছর গুলশান এলাকা থেকে এরকম একটি বিএমউব্লিউ এবং ধানমন্ডি থেকে একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ জব্দ করেছিলেন তারা।

‘কার্নেট ডি প্যাসেজ’ সুবিধার অপব্যবহার করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এভাবে শতাধিক বিলাসবহুল গাড়ি চলছে বলে জানান মইনুল।

শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আন্তর্জাতিক একটি সনদ অনুযায়ী যে সুবিধায় পর্যটকরা একটি দেশ থেকে অন্য দেশে শুল্ক না দিয়েই গাড়ি নিয়ে ঢুকতে পারেন, তাকেই ‘কার্নেট ডি প্যাসেজ’ বলা হয়।

তবে একটি নির্দিষ্ট সময়, অর্থাৎ দুই বা তিন মাসের জন্য এই সুবিধা পান পর্যটকরা। এতে তাদের সংশ্লিষ্ট দেশের অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হতে হয়।

নির্দিষ্ট সময় পর গাড়িটি ফেরত না গেলে সংশ্লিষ্ট দেশের নিয়ম অনুযায়ী এর উপর শুল্ক আরোপ করা হয় বলে কর্মকর্তারা জানান।

মইনুল খান বলেন, “কিছু প্রবাসী ২০০৮ থেকে ২০১২ সালের দিকে এই দেশে বহু দামি গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন বলে জানা গেছে।

“পরে তারা এই গাড়িগুলো আর নিয়ে যাননি। অসৎ উদ্দেশ্যে এনে গাড়িগুলো এই দেশের লোকজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। যারা গাড়িগুলো কিনেছে, তারা ভুয়া রেজিস্ট্রেশন করেছে।”

বিষয়টি নজরে আসার পর ২০১৩ সাল থেকেই এসব গাড়ি উদ্ধারে শুল্ক গোয়েন্দারা কাজ করছেন বলে বিভাগের মহাপরিচালক জানান।   

সোমবার গুলশানে জব্দ হওয়া গাড়িটি প্রসঙ্গে মইনুল খান বলেন, “লিফট ও জেনারেটর ব্যবসায়ী কাজী রেজাউল মোস্তফা ওই বিলাসবহুল গাড়িটি ব্যবহার করতেন। দীর্ঘ তদন্তের পর নিশ্চিত হয়ে গোয়েন্দারা তিন কোটি টাকা দামের গাড়িটি আটক করে।

“ভুয়া দলিলপত্র দাখিল করে গাড়িটি বিআরটিএ থেকে রেজিস্ট্রেশন পেয়েছিল। প্রতি বছর তা নবায়নও করা হয়।”

প্রাথমিকভাবে রেজাউলের বিরুদ্ধে শুল্ক ফাঁকির মামলা হয়েছে জানিয়ে মইনুল বলেন, “তিনি মানি লন্ডারিংয়ে জড়িত কি না, সেটাও তদন্ত করা হবে।”

ওই গাড়ি কীভাবে বিআরটিএ থেকে নিবন্ধন পেল তা জানতে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।        

এভাবে আসা অন্য গাড়িগুলো যারা ব্যবহার করেছেন, তাদের সেগুলো শুল্ক বিভাগে জমা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মইনুল খান।

“তাহলে তাদের প্রতি কিছুটা হলেও নমনীয় আচরণ করা সম্ভব হবে। যদি জমা না দেন... বিভিন্ন অফিসে, বাসায় এবং রাস্তায় শুল্ক গোয়েন্দারা অলরেডি অভিযানে আছে।”