ভুটানের বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2024, 05:30 PM
Updated : 21 March 2024, 05:30 PM

ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পাহাড়বেষ্টিত দেশটি থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আনতে ভারতের ভূমি ব্যবহারের জন্য এ সহায়তা চান তিনি।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাত করতে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন বলে বাসস জানিয়েছে।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাশিত বিদ্যুৎ সহজে আমদানি করতে ভারত পক্ষের সহায়তা চেয়েছেন।”

ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, আগামী ২৫ মার্চ ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েলের ঢাকা সফরের সময় বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে চুক্তি সই হবে।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানির জন্য অ্যান্টি-ডাম্পিং ব্যবস্থা প্রত্যাহারের জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বানও রেখেছেন।

তিনি হাইকমিশনারকে বলেন, সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপটি আধুনিকায়ন করতে অর্থায়ন করতে পারে ভারত।

বৈঠকে ভারতের আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সম্ভব করেছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর এবং ১৯৯৬ সালের আগে নির্বাচনে জয়লাভের সিদ্ধান্ত ও কোন দল ক্ষমতায় থাকবে বা আসবে তা নির্দিষ্ট মহল দ্বারা নির্ধারিত হত।

সে কারণে আওয়ামী লীগ ১৯৯১ সালে জনসমর্থন পেলেও জয়ী হতে পারেনি মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “কিন্তু ১৯৯৬ সালে নির্দিষ্ট মহল গণমানুষের ইচ্ছার কাছে মাথা নত করে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ প্রথমবারের মতো সে দুষ্টচক্র ভাঙে।“

প্রণয় ভার্মা বলেন, গত বছর ভারতীয় এলওসির আওতায় বাংলাদেশে মোট চারটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। আরও দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পাইপলাইনে রয়েছে।

ভারতীয় হাইকমিশনার রুপি ও টাকার বিনিময়ের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক লেনদেন, ডিজিটাল পেমেন্ট নেটওয়ার্ক এবং বঙ্গবন্ধু বায়োপিকের মতো দুই দেশের কিছু যুগান্তকারী উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ভারত সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের (সিইপিএ) জন্য আলোচনা এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সিইপিএ সহায়ক হবে।

প্রণয় ভার্মা বলেন, এলওসিকে প্রকল্পভিত্তিক করার জন্য একটি নতুন কাঠামো তৈরি করতে নতুন চিন্তাভাবনা ও আলোচনা চলছে।

বৈঠকে বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের মধ্যে হাই পাওয়ার গ্রিড লাইন স্থাপনের বিষয়েও আলোচনা হয়।

হাই কমিশনার বলেন, ভারত থেকে ডিজেল আমদানির জন্য সৈয়দপুর থেকে নাটোর পর্যন্ত ডিজেল পাইপলাইন সম্প্রসারণের উদ্যোগ রয়েছে। তিনি বলেন, কিছু বিশ্বখ্যাত প্রতিরক্ষা শিল্প ভারতে তাদের কারখানা স্থানান্তর করছে। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে এখানে একটি প্রতিরক্ষা কারখানা স্থাপন করতে পারে।

তিনি শেখ হাসিনাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা জানান।

প্রণয় ভার্মা ভারতের জাতীয় নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।

হাই কমিশনার প্রধানমন্ত্রীকে আরও জানান, তারা রংপুরে একটি অফিস স্থাপনে আগ্রহী।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই করে সরকার বিবেচনা করবে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।