ঢুকতেন গৃহপরিচারিকা হয়ে, বের হতেন মালমাল নিয়ে

বিলকিস নানা নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ নিতেন, পরে সুযোগ বুঝে বাসার লোকজনকে অজ্ঞান করে মালামাল লুট করতেন।

নাম পাল্টে গৃহপরিচারিকা পরিচয়ে কাজ নিয়ে বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে মূল্যবান মালামাল লুটের অভিযোগে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।

বিলকিস বেগম (৪০) নামের ওই নারী গত চার বছরে অন্তত চারটি বাসা থেকে নগদ টাকাসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট করেছেন।

হাতিরঝিল থানার এক মামলায় বিলকিসকে বুধবার রাজধানীর কোতয়ালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “বিলকিস নানা নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ নেয়। এরপর সুযোগ বুঝে বাসার লোকজনকে কোনোকিছু খাইয়ে অজ্ঞান করে মালামাল লুট করে।”

বৃহস্পতিবার তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলম জানান, হাতিরঝিল থানার একটি মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ মামলার আসামি ‘নূরজাহানের’ ব্যাপারে কোনো তথ্য না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। পরে বাদী পক্ষ না রাজি দিলে আদালত পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়।

“আমরা তদন্তে নেমে ওই নারীকে গ্রেপ্তারের পর জানতে পারি নূরজাহান তার প্রকৃত নাম নয়। তার নাম বিলকিস। বাবার বাড়ী ময়মনসিংহ, স্বামীর বাড়ী গাজীপুর।”

তিনি জানান, হাতিরঝিল থানা এলাকার নিউ ইস্কাটনের একটি বাসায় গত বছর সেপ্টেম্বরে ‘নূরজাহান’ নামে গৃহপরিচারিকার কাজ নেন বিলকিস। সেখানে গৃহকত্রীকে অজ্ঞান করে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় বিলকিসকে।

“বিলকিস হাতিরঝিল ছাড়াও শেরে বাংলানগর, ভাটারা এবং উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় একই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে,” বলেন পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর ।

শেরে বাংলানগর থানা এলাকায় ২০১৯ সালের মে মাসে সোহেল নামের এক ব্যক্তির বাসা থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মামলা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “এই বাসায় কাজ করার সময় বিলকিস তার প্রকৃত নামই ব্যবহার করেছিল। আবার পরের বছর নভেম্বর মাসে ভাটারা থানা এলাকার সিদ্দিকুর রহমান নামের এক ব্যক্তির বাসায় কাজ নেয় ‘রোজিনা’ নামে। সেই বাসা থেকে সে নগদ ১০ লাখ টাকা এবং দুই লাখ টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।

“এ বছরের এপ্রিল মাসে উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার মুশফিক ইসলাম নামের এক ব্যক্তির বাসায় ‘কণা’ নামে ঢুকে নগদ টাকা স্বর্ণালংকারসহ প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়।”

উত্তরা পশ্চিম থানার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়ে বিলকিস জামিনে বের হয়ে আসেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

প্রতিটি ঘটনায় জড়িত থাকার কথা বিলকিস স্বীকার করেছেন জানিয়ে পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর বলেন, তার বিরুদ্ধে অন্য কোনো নামে আরো মামলা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।