সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: ৬ জনের চোখের চিকিৎসা হবে ঢাকায়

সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে আগুন এবং বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের মধ্য ছয়জনের চোখের আঘাত গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় পাঠানো হবে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2022, 11:18 AM
Updated : 7 June 2022, 11:18 AM

মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের দেখার পর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নুরুল হক সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, “এখানে ভর্তি ৬৩ জন রোগীকে আমি দেখেছি। তাদেএর কোনো না কোনোভাবে অন্যান্য ইনজুরির সঙ্গে চোখেরও সমস্যা রযেছে। কিছু রোগীর সিভিয়ার ইনজুরি রয়েছে।

“তাদের মধ্যে ছয়জনকে ঢাকায় পাঠাতে বলেছি। চক্ষুবিজ্ঞান ইন্সটিটিউটে তাদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত আছে।”

ছয়জনের মধ্যে একজনের কর্নিয়া পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে ডা. দীন মোহাম্মদ বলেন, “তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ। প্রয়োজনে তকে বিদেশ পাঠানো হবে। সমস্ত খরচ সরকার বহন করবে।”

অন্যান্য ওয়ার্ডে কিছু রোগী আছে যাদের অন্য বড় সমস্যা আছে। চলাচল করতে পারার মতো হলে তাদেরও ঢাকায় পাঠানো হবে বলে জানান এই চিকিৎসক।

বিস্ফোরণে দুই ধরণের ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রাসায়নিক রিয়েকশনের সাথে আঘাতও হয়েছে। দুইয়েকজন দীর্ঘমেয়াদে সমস্যায় ভুগলেও ভালো হয়ে যাবে। তবে তাদের রুটিন চেকআপে রাখা হবে।”

গত শনিবার রাতে চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ওই কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ছুটে গিয়ে কাজ শুরু করেন। কিন্তু এরপর বড় ধরনের বিস্ফোরণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

দুই দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও সেখানে কিছু কিছু কন্টেইনার জ্বলছে। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরাও অংশ নিচ্ছেন অগ্নি নির্বাপন ও উদ্ধার তৎপরতায়।

এর আগে সোমবার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন চট্টগ্রামে এসে আগুনে পোড়া তিন রোগীকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন।

বিএম কন্টেইনার ডিপোতে রাসায়নিকের কারণেই পরিস্থিতি ভয়াবহ মাত্রা পায় জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস বলছে, প্রায় দুই ডজন কন্টেইনারে রাসায়িনক রাখা ছিল ওই ডিপোতে।

এ ঘটনায় রোববার পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার ডিপোর পোড়া ধ্বংসস্তূপ থেকে আরো দুটি ‘দেহাবশেষ’ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। 

সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে আহতদের চিকিৎসায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবার প্রশংসা করে রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাওয়া বিষয়ে আশ্বস্ত করেন ডা. দ্বীন মোহাম্মদ।

তিনি বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে তাদের ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন। রোগী ও রোগীর পরিবার যাতে চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে টেনশন না করেন।”

এসময় অন্যান্যের মধ্যে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির, সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।