নিজের গ্রহকে ধ্বংস করে অন্য গ্রহ খুঁজছি: সায়মা ওয়াজেদ

সম্পদের প্রাচুর্য আর প্রযুক্তির প্রভূত উন্নয়নের মধ্যেও বিশ্বব্যাপী মানুষে মানুষে বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2021, 01:19 PM
Updated : 5 Dec 2021, 01:19 PM

রোববার ঢাকায় বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের একটি প্যানেল আলোচনায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ মন্তব্য করেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের এই শুভেচ্ছা দূত।

শান্তি সম্মেলন আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব সায়মা ওয়াজেদ বলেন, আমরা ক্রমান্বয়ে সামাজিকভাবে ভঙ্গুর, স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছি। মানব সভ্যতার ইতিহাসের যে কোনো সময়ের তুলনায় এখন দান ও সহযোগিতার পথ বেশি বিস্তৃত, কিন্তু আমরা উল্টোটাই করছি।

”আমরা অন্যান্য গ্রহে যাওয়ার চেষ্টা করছি, যখন বেছে নিয়েছি আমাদের নিজের গ্রহকে ধ্বংসের পথ। আমরা এমন বিশ্বাস ও কার্যক্রম লালন করছি, যা একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ও যত্নের পরিবর্তে অন্যকে কষ্ট দিচ্ছে।”

বিশ্বব্যাপী শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে ঢাকায় দু’দিনের এ শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

রোববার শেষ দিনে ‘পিস থ্রু ইন্টার-ফেইথ ডায়ালগ, কালচার অ্যান্ড হেরিটেজ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন সায়মা ওয়াজেদ।

তিনি বলেন, আমাদের সম্পদ আর সম্পত্তির প্রাচুর্য আছে, সমাজ অনেক এগিয়েছে, তাৎক্ষণিক যোগাযোগের সব ব্যবস্থাও আমাদের আছে।

”এরপরও আমাদেরকে একীভূত করার এবং সার্বজনীন ব্যবস্থার পরিবর্তে বিদ্যমান পার্থক্যগুলোকে শুধু তুলে ধরতে হচ্ছে। আমরা ক্রমান্বয়ে ছোট মনের এবং চিন্তায় ও কাজে সংকুচিত হয়ে যাচ্ছি।“

সায়মা ওয়াজেদ বলেন, “যখন তথ্য আমাদের সহায়তা করার কথা, এটা যেন আমাদের বাধা টপকানোর পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বৈষম্য দূর, আমাদের জ্ঞান ও বন্ধুত্বের বার্তা দেওয়ার পরিবর্তে আমরা বৈষম্য ও বিরোধ তৈরির জন্য নতুন নতুন পথ বের করছি।“

প্রযুক্তির উন্নয়ন হলেও মানুষে মানুষে ফারাকটা ঠিকই থেকে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “মানব সভ্যতার উন্নতি বিশেষ করে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে মানে এই নয় যে, যাদের সম্পদ সীমিত, ঝুঁকিপূর্ণ ও ভোটের অধিকারহীন, তাদের কাছে এটা পৌঁছে যাচ্ছে। পাওয়া ও না পাওয়ার মধ্যে ব্যবধানটা বাড়ছেই।“

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তি দর্শনের উল্লেখযোগ্য দিকও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন তার নাতনী সায়মা ওয়াজেদ।

তিনি বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচারে বিশ্বাস করতেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বিশ্বাস করতেন ন্যায্যতা, ন্যায়বিচার ও সমানাধিকারের মাধ্যমেই শুধু শান্তি অর্জন সম্ভব।

জাতিসংঘের ইউনিভার্সিটি অব পিসের স্থায়ী পর্যবেক্ষক ডেভিড ফার্নান্দেজ পুয়ানার সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় অন্যদের মধ্যে গ্রিসের ন্যাশনাল অ্যান্ড কাপোডিস্ট্রিয়ান ইউনিভার্সিটি অব অ্যাথেন্সের ধ্যাপক দিমিত্রিস ভ্যাসিলিয়াদিস, ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ক্যারেন জুংব্লুট, আরব আমিরাতের গ্লোবাল কাউন্সিল ফর টলারেন্স অ্যান্ড পিসের প্রেসিডেন্ট আহমেদ মোহাম্মদ রাশিদ আলজারওয়ান আল-শামসি, ওয়ারশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওরিয়েন্টাল স্টাডিজ অনুষদের শিক্ষক মাইকেল পানাসিউক বক্তব্য দেন।