রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট থেকে যানবাহন নিয়ে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নদী পার হয়ে পাটুরিয়ায় পৌঁছানোর পরপরই ফেরিটি দুর্ঘটনায় পড়ে বলে বিআইডব্লিউটিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম মিশা জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ওই ফেরিতে ১৭টি পণ্যবাহী ট্রাক ছিল বলে প্রাথমিকভাবে তারা জানতে পেরেছেন। দুটি ট্রাক ও যাত্রীরা নামার পর ফেরিটি কাত হয়ে ডুবে যায়।
“ঘাটের পাশে নদীতে কাত হয়ে অর্ধেক ডুবে আছে ফেরি শাহ আমানত। পাম্প দিয়ে পানি সরানো হচ্ছে। উদ্ধার কাজ চলছে।”
ফেরি উল্টে যাওয়ার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। তাদের ডুবুরি দল সেখানে তল্লাশি চালাচ্ছে বলে ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা রাফি আল ফারুক জানিয়েছেন।
কীভাবে ফেরিটি ডুবে গেল- সে বিষয়ে কোনো তথ্য তিনি দিতে পারেননি। তবে অমল ভট্টাচার্য্য নামে ওই ফেরির একজন যাত্রী বলেছেন, ঘাটের কাছাকাছি পৌঁছানোর পরপরই ফেরিতে পানি উঠতে শুরু করে। ঘাটে ভেড়ার পর ফেরি কাত হয়ে ডুবতে শুরু করে।
শিবালয় থানার ওসি ফিরোজ কবির বলেন, ফেরির নিচে যে ডাম্প (ফাঁকা অংশ) থাকে, সেখানে ফুটো হয়ে পানি ঢোকায় নৌযানটি উল্টো যায় বলে তারা ধারণা করছেন।
“প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, তিনটি ট্রাক ভেসে গেছে। ট্রাক ছাড়াও ফেরিতে কয়েকটি মোটর সাইকেল, প্রাইভেট কার ছিল। কতজন লোক ছিল সেটা এখনও নিশ্চিত নয়।”
রাজবাড়ীর এমপি কাজী কেরামত আলী ঢাকা যাওয়ার পথে ফেরি দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পাটুরিয়া ঘাটে চলে আসেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এটা আজকে ঘাটে ঘটেছে, যদি মধ্য নদীতে হত কী পরিণাম হত?”
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মানিকগঞ্জের ডিসি মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ এবং পুলিশ সুপার মো. গোলাম আজাদ খান, শিবালয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানা পাটুরিয়া ঘাটে ছুটে যান।
ইউএনও জেসমিন বলেন, দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে আসার পর ওই ফেরি থেকে ‘চার-পাঁচটি গাড়ি’ নামার সুযোগ পেয়েছিল।
“তারপর হুট করে ফেরিটি উল্টে গেছে। আমরা জানতে পেরেছি, মোট ১৭টি ট্রাক ছিল, আর বেশ কিছু যাত্রী ছিল। যখন ফেরি কাত হয়ে গিয়েছে, অধিকাংশ যাত্রী তখন নেমে গেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।”
দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি হবে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, “তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে কেন এটা ঘটেছে।… আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে ভেতরে যদি কোনো লোক থাকে, তাদের উদ্ধার করা। আমরা সেই কাজটি করছি।