ঈদের ‘ফিরতিযাত্রা’ বিলম্বিত করার সুপারিশ স্বাস্থ্যের ডিজির

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ঈদে গ্রামে যাওয়া মানুষের ফেরা বিলম্বিত করার কথা বলেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2021, 02:52 PM
Updated : 14 May 2021, 04:00 PM

শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।

তিনি বলেন, “লকডাউনের মধ্যে মানুষ যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে দলে দলে বাড়ি গেছেন, একইভাবে ফিরে এলে তা ঝুঁকি বাড়াবে।

লাখো মানুষ যাতে দেরি করে ঢাকায় ফেরেন এমন সুপারিশ করে তিনি বলেন, “এই লকডাউনের মধ্যে আবার যদি লোকজন এভাবেই ফেরে তাহলে এটা অবশ্যই বিপজ্জনক হবে। এ কারণে এই ফেরাটা যদি একটু বিলম্বিত করা যায় ভালো হয়।

“এছাড়া যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে তাদের ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করা যায় সেটাও বিবেচনা করা যেতে পারে।”

ঈদের দিন শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল এবং জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি)।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ঈদের পর শহরমুখী জনস্রোত ‘উদ্বেগের’ কারণ হয়ে দাড়াতে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। 

গ্রামমুখী মরিয়া ঈদযাত্রার পর আবার তাদের ফেরার পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, "ঈদে গ্রামমুখী মানুষের বাধভাঙ্গা জনস্রোত দেখা যাওয়ায় বিশেষজ্ঞরা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হারে নতুন ধাক্কা লাগার আশঙ্কা করছেন। ঈদ পরবর্তীকালে শহরমুখী জনস্রোত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

"স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শকে উপেক্ষা করার মাশুল গুনতে হতে পারে। জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি ও শতভাগ মাস্ক পড়তেই হবে।"

দেশে চলমান লকডাউনের মধ্যে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই লাখো মানুষ যে যেভাবে পারেন সেভাবে গ্রামের বাড়ি গেছেন।

দূরপাল্লার বাস, ট্রেন, লঞ্চ বন্ধ থাকায় ঘরমুখো মানুষ ছোট ছোট যানবাহনে গাদাগাদি করে বাড়িতে গেছেন। ফেরিতেও ছিল উপচে পড়া ভিড়। স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিল না কোথাও।

স্বাস্থ্যবিধি না মেনে এভাবে ভ্রমণ, বিভিন্ন বিপণিবিতানে মানুষের ভিড়ের কারণে নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

এমন প্রেক্ষাপটে এসব মানুষের ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার কর্মস্থলে ফেরার সময় আবারও যানবাহন সঙ্কটে একই রকম পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন অনেকে।

টিকা সংগ্রহের চেষ্টা

শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খুরশীদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভারতের বিকল্প হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে টিকা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

“যুক্তরাজ্যের রাষ্টদূতের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠকও হয়েছে। এটা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে।”

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ দিতে প্রায় ১৮ লাখ ডোজ টিকার ঘাটতি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের যতটুকু ঘাটতি আছে সেটার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। আজকেও কথা হয়েছে। অ্যাস্ট্রেজেনেকার এই টিকা হয়তো আমরা পেয়ে যাব।”