ভাসমান রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাংলাদেশ বাধ্য নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আন্দামান সাগরে ভাসমান রোহিঙ্গাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আলোচনার মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, দেশের উপকূল থেকে বহু দূরে থাকা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাংলাদেশ ’বাধ্য নয়’।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2021, 04:35 PM
Updated : 27 Feb 2021, 04:35 PM

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রশ্নে শনিবার তিনি বলেন, তাদের এখানকার অবস্থান থেকে সবচেয়ে কাছের দেশ ভারত কিংবা তাদের নিজেদের দেশ মিয়ানমার তাদের আশ্রয় দিক।

“তারা বাংলাদেশের নাগরিক নয়, তারা মিয়ানমারের নাগরিক। তাদের শনাক্ত করা হয়েছে বাংলাদেশের জলসীমা থেকে ১৭ শ কিলোমিটার দূরে। এ কারণে তাদের গ্রহণ করার কোনো বাধ্যবাধকতা আমাদের নেই।

”তারা ভারতীয় সীমানার ১৪৭ কিলোমিটার এবং মিয়ানমারের সীমানার ৩২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।”

গত দুই সপ্তাহ ধরে আন্দামান সাগরে একটি জেলে নৌকায় ৮১ জন রোহিঙ্গার ভেসে থাকার তথ্য বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার বরাতে জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। সেখানে আটজন রোহিঙ্গার লাশও রয়েছে।

রয়টার্স লিখেছে, ভারতীয় কোস্টগার্ড ওই রোহিঙ্গাদের খুঁজে পাওয়ার পর দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাদের বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য যোগাযোগ করছেন।

এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সফররত মোমেন বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন।  

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, শরণার্থীদের অধিকার ও তাদের রক্ষায় রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের বিষয়ে ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষর করেনি ভারত। শরণার্থীদের অধিকার নিয়ে ভারতে কোনো আইনও নেই। তারপরও কিছু রোহিঙ্গাসহ প্রায় দুই লাখ শরণার্থী দেশটিতে আশ্রয় নিয়ে রয়েছে।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইনে সে দেশের সেনাবাহিনীর অভিযানের মধ্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। তার আগে থেকে আরও চার লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে আসছিল বাংলাদেশ।

রয়টার্স বলছে, আন্দামান সাগরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভাসমান যে রোহিঙ্গাদের পাওয়া গেছে, তারা মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য গত ১১ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার থেকে রওনা হয়েছিল।

তাদের আবার আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানানোয় ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

তিনি বলেন, “সব রোহিঙ্গা কিংবা ভাসমান লোকজনকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে কি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি দেওয়া হয়েছে? কোনোভাবেই না।”

তাদেরকে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিক হিসেবে বর্ণনা করে মোমেন রয়টার্সকে বলেন, যেহেতু ৪৭ জনের কাছে ইউএনএইচসিআরের বাংলাদেশ অফিসের দেওয়া পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে, তাদেরও এর দায়দায়িত্ব নেওয়া উচিত।

”আর তারা যদি ইউএনএইচসিআরের পরিচয়পত্রধারী হয়, তাহলে কেন তারা (ইউএনএইচসিআর) তাদের পরিচয়পত্রধারীদের নিয়ে যাওয়ার এবং সাগরে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার সুযোগ মানবপাচারকারীদের দিল?”