পরিবারের অন্যদের সঙ্গে নূরজাহান বেগম নামের ওই নারীকেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার বেলা ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে মেডিকেল ফাঁড়ি পুলিশের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, নূরজাহান বেগমের শরীরের শতভাগ পুড়ে গিয়েছিল। বাকিদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের শরীরের ৬০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে।
বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন বাকি সাতজন হলেন- নূরজাহানের ছেলে কীরণ মিয়া (৫০), কীরণের ছেলে আবুল হোসেন ইমন (২২) ও আপন (১০), কীরণের ছোট ভাই হীরণ মিয়া (২৮) ও তার স্ত্রী মুক্তা (২১) তাদের মেয়ে ইলমা (৩), ভাগ্নে কাওছার (১৬)।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সাহেবপাড়া এলাকায় একটি তিন তলা বাড়ির নিচতলায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন গার্মেন্ট এক্সেসরিজের ব্যবসায়ী কীরণ।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা রাসেল শিকদার জানান, সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ওই বাসার কেউ রান্নাঘরে গ্যাসের চুলা জ্বালাতে গেলে পুরো বাসায় আগুন ধরে যায়। তাতে বাসায় থাকা আটজন দগ্ধ হন।
আশপাশের লোকজন ছুটে এসে প্রথমে ছয়জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আরও দুজনকে বের করে আনেন। তাদের সবাইকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, “সম্ভবত ওই ফ্ল্যাটের চুলার চাবি রাত থেকেই খোলা ছিল। তাতেই সারারাতে পুরো ঘরে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। সকালে রান্না করার জন্য চুলা জ্বালতে গেলে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই এলাকায় দিনের বেলায় গ্যাস থাকে না। সে কারণে অনেকের বাসাতেই ইদানিং সমস্যা হচ্ছে, অসাবধানতায় খোলা থাকছে গ্যাসের চুলার চাবি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আরেফিন বলেন, সকালে পরীক্ষা করে ওই বাসার চুলায় গ্যাসের চাপ কম পাওয়া গেছে।
“তারা সিলিন্ডারও ব্যবহার করতেন। পাইপলাইনের চুলায় চাবি অন করা ছিল। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ থাকায় পুরো ঘরে গ্যাস জমে যায়। ভোরে চুলায় আগুন জ্বালাতে গেলে বিস্ফোরণে ঘরের জানালার কাচ ভেঙে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এসে আগুন নিভিয়েছে।”