আসামি না হয়েও দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় তিন বছর কারাভোগকারী পাটকল শ্রমিক জাহালম রোববার রাতে ছাড়া পাওয়ার পরদিন সোমবারই তদন্ত কমিটি করে দুদক।
দুদকের পরিচালক (লিগ্যাল) আবুল হাসনাত মো. আবদুল ওয়াদুদ নেতৃত্বাধীন এই কমিটিকে ২০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান আমিনুল ইসলাম।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমাদের তদন্ত রিপোর্ট যদি পাওয়া যায়, যে ভুলগুলো হয়েছে, এর মধ্যে যারা দায়ী আমরা তাদের কাউকে ছাড় দেব না। সে আমাদের অফিসার হোক বা অন্য কোনো ডিপার্টমেন্টের হোক।”
দুদকের অধিকতর তদন্তে জাহালমের নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আগের তদন্ত কাজে ঘাটতি একটু না হলে তো এই পর্যায়ে যাবে না, এটা তো অস্বীকার করার কিছু নেই। জাহালমকে সবগুলো মামলা থেকে প্রত্যাহার করতে আমরা আদালতে আগেই রিপোর্ট সাবমিট করেছি।”
সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা করে দুদক। এরপর সালেককে তলব করে দুদক চিঠি দিলে সেই চিঠি পৌঁছায় জাহালমের টাঙ্গাইলের বাড়ির ঠিকানায়।
এরপরেও দুদকে উপস্থিত বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা সেদিন জাহালমকেই ‘আবু সালেক’ হিসেবে শনাক্ত করেন। পরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঘোড়াশাল থেকে জাহালমকে গ্রেপ্তার করে দুদক। এরপর থেকে কারাগারে ছিলেন তিনি।
হাই কোর্টের আদেশে রোববার রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ছাড়া পান জাহালম। বিনা কারণে তিন বছর কারাবন্দি থাকার জন্য দায়ীদের শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে দুদক কমিশনার আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি তদন্ত কমিটি করেছি, একজন জেলা জজকে দিয়ে, তিনি আমাদের পরিচালক। তিনি ২০ দিনের মধ্যে আমাদের একটা রিপোর্ট পেশ করবেন। তখন আমরা বুঝতে পারব, কার অবহেলার কারণে এমন একটা বড় ঘটনা ঘটে গেল।”
কার গাফিলতিতে আবু সালেক হিসেবে জাহালম হাজত খেটেছে, ভুলটা কোথায় তা বের হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জাহালম এইসব মামলায় অন্য কোনোভাবে জড়িত কি না, এমন প্রশ্নে কমিশনার আমিনুল বলেন, “তদন্তে সবই আসবে বলে আশা করি। জাহালমকে বাদ দিয়ে এখন চার্জশিট হয়ে আছে।”
কারাবাসের জন্য জাহালমকে ক্ষতিপূরণ দিতে টিআইবির পক্ষ থেকে দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, “মাননীয় হাই কোর্ট যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা সেইটায় মাথা পেতে নেব।”