তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোসহ সংশ্লিষ্ট অন্যদের সঙ্গে সংলাপে মতামত পাওয়া গেলে এবং তা ‘বাস্তবসম্মত’ হলে ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পক্ষপাতি হলেও তার ঘোর বিরোধী বিএনপি।
এর মধ্যেই একাদশ সংসদ নির্বাচনের দেড় বছর আগে রোববার যে কর্মপরিকল্পনা ইসি প্রকাশ করেছে, তার মধ্যকার সংলাপের আলোচ্যসূচিতে ইভিএমের বিষয়টি রাখা হয়নি।
এক সপ্তাহ আগে ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না বলেই ‘রোডম্যাপের এজেন্ডায় তা রাখা হচ্ছে না’।
রোববার ‘রোডম্যাপ’ প্রকাশের সময় সিইসি নূরুল হুদাকে প্রশ্ন করা হয়, এজেন্ডায় রোডম্যাপ নেই; তবুও সংলাপে কোনো দল দাবি করলে স্বল্প সময়ে ইভিএম সম্ভব কি না ও প্রস্তুতি রয়েছে কি না?
জবাবে সিইসি বলেন, “ইভিএমের দরজা আমরা বন্ধ করে দিইনি। স্থানীয় সরকারের কিছু নির্বাচনে তা ব্যবহার হয়েছে। ২০১০-১১ সালে কিছু ভুল ধরা পড়ায় থেমে গেছে। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে তা ব্যবহার করার বিষয়ে আমরা বলছি-সংলাপে দলগুলো কী বলে, কী প্রস্তাব দেয় তা দেখব।”
বর্তমানে ইসির কাছে আগের ৭-৮শ’ ইভিএম (বুয়েটের) রয়েছে। কমিশন মনে করছে, ভোটের জন্য ৪০ হাজার ভোট কেন্দ্রে আড়াই লাখ ইভিএম লাগবে।
সিইসি বলেন, “এটা যে অসম্ভব হবে, তা নয়। কমিশন মনে করে, এটার স্কোপ রয়েছে; বন্ধ না রেখে দলের কাছে তুলে ধরতে হবে। এ সময়ে আড়াই লাখ ইভিএম তৈরি, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও ভোটার সচেতনতার সক্ষমতা রয়েছে কি না দেখতে হবে।
“সরকারের সহায়তা ও দলের সম্মতি দেখে বাস্তবসম্মত হলে ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।”
নিজেদের তৈরি ইভিএম নিয়ে বৈঠক শেষে গত ১১ মে এক অনুষ্ঠানে সিইসি বলেছিলেন, জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি রয়েছে তাদের। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সম্ভাব্যতাও যাচাই করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিএনপি ইতোমধ্যে এই সিইসির সঙ্গে দেখা করে ইভিএম নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়ে এসেছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে সিইসি দলটিকে বলেছিলেন, কারও আপত্তি থাকলে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে না।
এরপর ৯ জুলাই কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইসি সচিব বলেন, “ইভিএম প্রসঙ্গটি বাদ রেখেই ইসি রোডম্যাপ চূড়ান্ত করেছে। এতে নিশ্চিত করে বলা যায়, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে তা আর ব্যবহার করা হচ্ছে না।”
বদলি ইসির এখতিয়ারে নয়
সিইসি নূরুল হুদা বলেছেন, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের বদলি ও পদোন্নতির এখতিয়ার ইসি সচিবালয়ের। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ‘কোনো এখতিয়ার নেই’।
সম্প্রতি ৩৩ কর্মকর্তার বদলি-পদোন্নতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের ‘ইউও নোট’র বিষয়ে একথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, “বিষয়টি একজন নির্বাচন কমিশনারের বিষয় নয়; আমার বিষয়ও নয়। এটা ইসি সচিবালয়ের দায়িত্ব। ইসি সচিবালয়ের কে, কোথায় পদায়ন পলে তা তারা দেখবে। বিষয়গুলো ইসি সচিবালয়ের এখতিয়ার।”
কর্মকর্তাদের বদলি নিয়ে নোট দেওয়ার প্রসঙ্গটি উঠলে সিইসি বলে ওঠেন, ‘এটা তালুকদার সাহেবের প্রোডাক্ট’। তখন হাসির রোল পড়ে সংবাদ সম্মেলনে।