জেলার নদী তীরবর্তী সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর এ পাঁচটি উপজেলার ২৯টি ইউনিয়নের অন্তত ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি ঢুকে পড়ায় পাঁচটি উপজেলার শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ফসল ও শাকসবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার ৩২টি বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়ার কথা জানিয়ে চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল খালেক বলেন, এসব বিদ্যালয়ের চেয়ার-বেঞ্চসহ আসবাবপত্র পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ কারণে অন্তত সাড়ে ছয় হাজার শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বিঘিœত হচ্ছে।
পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেড়িবাঁধ অথবা বাড়ির উঠানে পাঠদান চালু রাখা হয়েছে। তবে এসব বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
চৌহালী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গত পাঁচদিনের বন্যায় যমুনার চরের অন্তত সাড়ে পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। বরাদ্দ আসলেই বিতরণ করা হবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে না বাড়লেও বুধবার দুপুরে বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। নদীতে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।
জেলার বন্যা দুর্গতদের জন্য ৩ লাখ টাকা ও ১০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ৪টি উপজেলায় ৩৫ মেট্রিকটন চাল এবং ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ওমর আলী শেখ জানান, বন্যায় জেলার ২ হাজার ৫৩৬ হেক্টর আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। এতে রোপা আমন, বোনা আমন, মৌসুমি শাক-সবজি, মাসকলাই ও কলাসহ বিভিন্ন ফসল বিনষ্ট হয়েছে।
কাজিপুর সদরের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বিপ্লব, মাইজবাড়ী চেয়ারম্যান তালুকদার জাহাঙ্গীর আলম ও নিশ্চিন্তপুরের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক স্বপন জানান, বন্যায় চরাঞ্চলের মানুষেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দিরেও পানি ঢুকে পড়েছে। এসব এলাকার বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাফিউল ইসলাম জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বন্যার্তদের মাঝে ১৫ মেট্রিক টন চাল ও ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।