প্রতিবেশী দুই রাষ্ট্রের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুসারে ৩১ জুলাই শুক্রবার মধ্যরাতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১১১টি ও ভারতের অভ্যন্তরে ৫১টি ছিটমহল বিনিময় হবে। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত-পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পর থেকে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকে ছিটমহলের বাসিন্দারা। পরবর্তীতে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও সমস্যাটি থেকে যায়।
মুজিব-ইন্দিরা স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে ৬৮ বছরের শোষণ ও বঞ্চনার ইতিহাসের অবসান ঘটতে যাচ্ছে ছিটমহলবাসীর। তাই দিনটিকে তারা দেখছে অন্ধকার থেকে আলোতে ফিরে আসার দিন হিসেবে।
ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির বাংলাদেশ অংশের সভাপতি ময়নুল হক বলেন, “এ কারণে ওইদিন দুই দেশের সব ছিটমহলে মুসলিমদের বাড়িতে ৬৮টি করে মোমবাতি এবং হিন্দু বাড়িগুলোতে ৬৮টি করে প্রদীপ জ্বালানো হবে।
“এছাড়া ছিটমহলের প্রতিটি অন্ধকার সড়কে মশাল জ্বালিয়ে আলোকিত করার পাশাপাশি ওড়ানো হবে ফানুস।”
ময়নুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিনিময়ের পরপরই প্রতিটি ছিটমহলে একযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাও ওড়ানো হবে।”
এছাড়া বিনিময়ের পর সারাদিন ছিটমহলগুলোর নাগরিক কমিটির উদ্যোগে স্থানীয় বিভিন্ন খেলাধুলা, গান ও নাটকসহ সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা থাকবে বলে জানান তিনি।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার গারাতি ছিটমহলের নাগরিক কমিটির চেয়ারম্যান মফিজার রহমান বলেন, এদিন ছিটমহলের মানুষের উচ্ছ্বাস আর উল্লাস প্রকাশের দিন।
“এজন্য ছিটমহলে নাচ-গান-নাটক ও খেলাধুলার পাশাপাশি পটকা ও আতশবাজির আয়োজন করা হয়েছে।”
এছাড়াও শুক্রবার জুমার নামাজের পর ছিটমহলের মসজিদে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দিরে মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানায় সমন্বয় কমিটি।
কমিটির ভারত অংশের সভাপতি দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “দীর্ঘ ৬৮ বছরের কষ্ট আর নাগরিকত্বহীন জীবনের যন্ত্রণার অবসানের প্রতীক হিসাবে দুই দেশের ছিটমহলবাসী অভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
“এ দিনটি হবে ছিটমহলবাসীর জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ দিন ও উৎসবের রাত। এরপর প্রতিবছরই দিনটিকে স্মরণ করে ছিলমহলবাসী নানা কর্মসূচি পালন করবে।”