এই শিশুদের অনেকে স্কুল জীবনের প্রথম বছর ক্লাস রুমের দেখা পায়নি

)<div class="paragraphs"><p>এই শিশুদের অনেকে স্কুল জীবনের প্রথম বছর ক্লাস রুমের দেখা পায়নি</p></div>
বাংলাদেশ

২০২২: শিক্ষায় ক্ষত সারানোর বছর পেরিয়ে স্বাভাবিকতায় ফেরার চ্যালেঞ্জ

Byকাজী নাফিয়া রহমান

স্কুল বন্ধ করে অনলাইন ক্লাস; বিনা পরীক্ষায় শতভাগ পাস, পাঠ্যসূচি ও নম্বর কমিয়ে পরীক্ষা– এর কোনোটাই বাংলাদেশের মানুষ আগে কখনও ভাবেনি। করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কায় দীর্ঘ হয়েছে ঝরে পড়াদের তালিকা; যারা টিকে গেছে, তাদেরও এগোতে হচ্ছে শিখন ঘাটতি নিয়ে।

গত তিন বছরের এমন আরও অনেক জটিলতা সামলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে স্বাভাবিকতায় ফেরানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুন বছর শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২৩ সালে পুরোদমে ক্লাস নেওয়া যাবে। তাতে মহামারীতে ওলটপালট শিক্ষাসূচি আগের ধারায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

পাশাপাশি নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা, প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানোর পদ্ধতি বের করা, বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর জটিলতা থেকে বেরিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ সামলাতে হবে।

কঠিন সময় পেরিয়ে নতুন বছরে শিক্ষা প্রশাসন ও শিক্ষকদের আরও তৎপর হওয়ার ওপরও জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বাড়ানো আর শিক্ষার্থীদের ঘাটতি পূরণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ তাদের।

বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম কোভিড রোগী ধরা পড়লে নয়দিন পর, অর্থাৎ ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে অনলাইন ক্লাসের ওপর জোর দেয় সরকার।

এইসএসসির চূড়ান্ত পরীক্ষা না নিয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া হয় সে বছর। দীর্ঘ সময় ক্লাস বন্ধ থাকায় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও বড় সেশনজটে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের।

কোভিড সংক্রমণের শুরু থেকে টানা দেড় বছর পর পরিস্থিতির উন্নতি বিবেচনায় ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে অপেক্ষার অচলায়তন ভাঙে; শ্রেণিকক্ষে ফেরে শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে ২০২০ ও ২০২১ সালের জন্য সেটাই ছিল সবচেয়ে বড় ঘটনা। কারণ একসঙ্গে এতো দীর্ঘ সময় ক্লাস-পরীক্ষা কখনও বন্ধ ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাব্যবস্থায় নজিরবিহীন ক্ষতির কথা বলে আসছিলেন শিক্ষাবিদরা।

সেই ক্ষতি মেরামতের কাজটা বাংলাদেশ শুরু করেছে ২০২২ সালে, যার জের টানতে হবে ২০২৩ সালে এবং তারপরেও।

শিখন ঘাটতি থাকায় এবারও এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয় সিলেবাস ও নম্বর কমিয়ে

ঘাটতি পূরণের চ্যালেঞ্জ

মহামারীতে ২০২০ ও ২০২১ সালের বড় সময়জুড়ে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষের বাইরে ছিল। সংক্রমণ বাড়ায় ২০২২ সালের জানুয়ারি ফেব্রুয়ারিতেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়।

এ বছরের মে-জুন মাসে হঠাৎ বন্যার ধাক্কা সামলাতে হয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের। ওই অঞ্চলের ৫ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়, কেবল মাধ্যমিক পর্যায়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয় ছয় লাখ শিক্ষার্থী।

কোভিড ও বন্যার কারণে ২০২২ সালে কয়েক মাস পিছিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। বন্যায় বই-খাতা পানিতে ভেসে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের নতুন করে বই দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা নিতে হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেট অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা।

আর শিখন ঘাটতি থাকায় আগের বছরের মত ২০২২ সালেও বিষয়, সিলেবাস ও নম্বর কমিয়ে বেশ দেরি করে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয়।

এ বছর এসএসসিতে নয়টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুদিক থেকেই সিলেট বোর্ড সবচেয়ে পিছিয়ে। যদিও দুর্বিপাক কাটিয়ে নতুন বছরে নির্বিঘ্নে শ্রেণি কার্যক্রম চালিয়ে তিন বছরের শিখন ঘাটতি পূরণের আশা করছেন শিক্ষা কর্মকর্তারা।

করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কায় দীর্ঘ হয়েছে ঝরে পড়াদের তালিকা

গত ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বসে ২০২১ সালের তুলনায় প্রায় দুই লাখ কম শিক্ষার্থী।

পরীক্ষার্থী কমার কারণ হিসাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, “করোনা পরিস্থিতির কারণে ক্লাসের পাঠদান বন্ধ থাকায় পেছনের কয়েকটি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেওয়া হয়েছে। সে কারণে পাসের হার বেড়ে যায় বলে অনিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে। সে কারণে এবার প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে।”

সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ চন্দ্র পালের প্রত্যাশা, নতুন বছরে করোনাভাইরাসের প্রভাব থাকবে না, দীর্ঘ বন্যা পরিস্থিতিও আসবে না।

“আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে, শিক্ষার্থীরা বিরাট মানসিক চাপে ছিল। যারা এখনও পড়াশুনার বাইরে আছে, তাদের আমরা স্কুলমুখী করার চেষ্টা করছি।

“আমরা নতুন বছরে শতভাগ শিক্ষার্থীদের স্কুলে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের জেলা-উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারকি করছে। প্রশাসন থেকেও যতটা করা সম্ভব আমাদের সহযোগিতা করছে।”

আর ওলটপালট হওয়া শিক্ষাসূচিও প্রায় স্বাভাবিক করার পরিকল্পনা নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের এসএসসি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ জিপিএ, কিন্তু তারপর?

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষা এপ্রিলের শেষে হবে। ২০২১, ২০২২ সালে শিক্ষার্থীরা যেহেতু করোনাভাইরাসের কারণে ওভাবে ক্লাস করতে পারেনি, তাই ২০২৩ সালে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা হবে।

“২০২৩ সালে জানুয়ারি থেকে পুরোদমে শ্রেণি কার্যক্রম চলবে। তাই ২০২৪ সাল থেকে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস আর থাকছে না। পূর্ণ সিলেবাসেই পরীক্ষা হবে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ বিরতির পর গত বছর শ্রেণিকক্ষে অনেকটা সময় পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মানসিক ধকল কাটাতে পেরেছে। নতুন বছরে তাদের জন্য বাড়তি তৎপরতার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সাবেক মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষার্থীদের ঘাটতি কাটিয়ে ওঠাটা কঠিন হবে। যারা নবম শ্রেণিতে রয়েছে, তাদের দশমে সেটা পড়ানো সম্ভব। কিন্তু অন্যান্য ক্লাসগুলোর ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব না। তাই নতুন বছরে আমরা যা পড়াবো, তার সাথে আমাদের আগের বছরের যে মূল বিষয়গুলো বাদ গেছে, সেগুলোর ওপর জোর দিতে হবে।”

২০২৪ সাল থেকে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস আর থাকছে না। পূর্ণ সিলেবাসেই পরীক্ষা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ মান্নানও মনে করছেন, মহামারীর ঘাটতি কাটিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী- উভয়ের জন্যই চ্যালেঞ্জিং।

“কারণ, শিক্ষা একটা জিনিস যেখানে শর্টকাট বলে কিছু নাই। শিক্ষার ধারাবাহিকতা করোনা-বন্যায় ব্যাহত হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী এই ঘাটতিগুলো নিয়ে পরবর্তী ধাপে যাচ্ছে। তাই পরবর্তী ধাপে এই ঘাটতিগুলো পূরণের ব্যবস্থা করতে হবে, যারা শিক্ষা নিয়ে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন, তাদেরই করতে হবে। তবে সবচেয়ে বেশি এক্ষেত্রে শিক্ষকদের গুরুত্ব দিতে হবে। নইলে এই ঘাটতি থেকেই যাবে।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বলেন, “শিক্ষা জিনিসটা মইয়ের মত। প্রতিটি ধাপে ধাপে উঠতে হবে। এখন শিক্ষার্থীরা যে ঘাটতি নিয়ে পরবর্তী ধাপে যাচ্ছে, সেটা পূরণ না হলে তার পুরো শিক্ষাটাই ব্যাহত হবে এবং ধারাবাহিকতা নষ্ট হবে, যা তাকে পরবর্তী জীবনে নানা অসুবিধায় ফেলতে পারে।

“ওই ঘাটতিটা পূরণে সরকারকে শিক্ষকদের সহায়তা করতে হবে। শিক্ষকদের যেহেতু বাড়তি কষ্ট হবে, তাই তাদের প্রণোদনা দিতে হবে।”

সামনে আছে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ

নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন

২০২৫ সালে সম্পূর্ণ নতুন পাঠ্যক্রমে যাওয়ার আগে গত বছর ৬২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পরিবর্তিত শিক্ষাক্রমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে সরকার। নতুন বছরে দেশের সব বিদ্যালয়ই এর আওতায় আসবে।

এবার প্রাথমিকে প্রথম এবং মাধ্যমিকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম। পরীক্ষা ও মুখস্ত নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আনন্দদায়ক শিখন নিশ্চিত করতে নতুন বছর থেকেই ধাপে ধাপে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মাউশির সাবেক মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন বলছেন, গত কয়েক বছরের ধাক্কা কাটাতে নতুন শিক্ষাক্রম সহায়ক হবে। তবে এজন্য শিক্ষা প্রশাসনের প্রস্তুতিতে ঘাটতি দেখছেন সাবেক এই কর্মকর্তা।

“এর জন্য শিক্ষকদের অনলাইনে প্রশিক্ষণ পর্যাপ্ত নয়। কারণ আমরা জানি, গ্রাম-গঞ্জের শিক্ষকরা অনলাইনে ততোটা অভ্যস্ত নয়। কারিকুলামের কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে, কর্মশালার মাধ্যমে সেই আউটপুট বের করা হয়। সেটা ২০২২ সালে খুব একটা করতে পারেনি এখনও। সে কারণে একটু চ্যালেঞ্জিং হবে। তারপরও অনলাইনে প্রশিক্ষণ দিয়ে সব শিক্ষকদের এর আওতায় আনলে তা খারাপ হবে না।”

প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় ২০২২ সালে প্রথম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং থেকে সরে আসে সরকার। ফলে নতুন বছরে দ্বিতীয় শ্রেণিতে এ শিক্ষাক্রম চালুর পুরনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে শুধু প্রথম শ্রেণিতে তা বাস্তবায়ন হবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, “প্রথম শ্রেণিতে পাইলটিংটা আসলে বিভিন্ন কারণে করা যায়নি। তাই প্রথম শ্রেণিতে এবার বাস্তবায়ন হলেও কিছু স্কুলকে পাইলটিংয়ের আওতায় ধরে মনিটরিং করা হবে। এর ভিত্তিতে ২০২৪ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে বাস্তবায়ন শুরু হবে।”

পিছিয়ে থাকা পরীক্ষা নতুন বছরেও স্বাভাবিক সূচিতে ফিরছে না 

নতুন বছরে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের আরও চ্যালেঞ্জ বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন তিনি।

“অভিভাবকরা এটা সহজে মানতে চান না। শিক্ষকরা দীর্ঘদিন একটা কাজ করতে করতে কমফোর্ট জোনে চলে গেলে তারাও এটা সহজভাবে নিতে পারেন না। মনে করেন কী পরিবর্তন হচ্ছে, আমি পারব কিনা, আমাকে আবার কী করতে হবে, এমন কিছু আশঙ্কা থাকে।

“যতটুকু পাইলটিং হয়েছে, সেখান থেকে শিক্ষক, শিক্ষাবিদসহ সবাই একমত যে, একটা পরিবর্তন দরকার। কারণ যেটা চলছে, সেটা দিয়ে আমাদের হচ্ছে না। আমাদের লাখ লাখ জিপিএ-৫ পাচ্ছে, কিন্তু তারপরও তাদের কাছ থেকে আমরা ভালো একটা উত্তর পাচ্ছি না। যারা চাকরি দিচ্ছেন, তারা বলছেন, এমএ পাস ছেলে এটা পারে না, ওটা পারে না।”

শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, “আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনেক বেশি। এত বেশি শিক্ষককে দীর্ঘকালীন লম্বা প্রশিক্ষণ আমরা দিতে পারব না। তাই ফেইস টু ফেইস ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি কিছু ডিজিটাল কনটেন্ট রাখব, যেন সেটা শিক্ষকদের জন্য উপকারী হয়। শিক্ষকদের প্রতিটি বিষয়ের জন্য টিচার্স গাইড তৈরি করেছি।

“আমরা এখন ডিজিটাল ট্রেনিং রেখে দেব। শিক্ষকরা পাঁচ দিনের ট্রেনিংটা না বুঝলে ডিজিটাল ট্রেনিং দেখে সেটা শিখে নিতে পারবে। ওটা দেখে না বুঝলে উপজেলা মাস্টার ট্রেইনার তাকে সহায়তা করবেন। এই সুযোগ নাই যে, আমি ট্রেনিংয়ে বুঝি নাই, আমরা পারব না। এই সুযোগ আমরা রাখব না।”

নতুন বছরে শিক্ষকরা যেসব সমস্যায় পড়বেন, তা আবার প্রশিক্ষণ দিয়ে সমাধান করা হবে বলে জানান তিনি।

প্রশ্ন ফাঁসের ধাক্কা মেধাবীদের ওপরও পড়ে

প্রশ্ন ফাঁসের ধাক্কা

বছর কয়েক আগেও বাংলাদেশে পাবলিক পরীক্ষায় ‘প্রশ্ন ফাঁস’ একটি নিয়মিত বিষয়ে দাঁড়িয়েছিল, মহামারীকালের সংক্ষিপ্ত পরীক্ষায় অবশ্য এ নিয়ে তেমন শোরগোল শোনা যায়নি।

গুজব বা গুঞ্জন যে ছড়ায়নি তা নয়; তবে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য সামনে না আসায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সব পর্যায় থেকেই ‘প্রশ্ন ফাঁসের সুযোগ নেই’ এমন মন্তব্য আসছিল।

এর মধ্যে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস বড় ধাক্কা হিসেবেই এসেছে নীতি নির্ধারকদের জন্য। প্রশ্ন ফাঁসের কারণে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চারটি পরীক্ষা স্থগিত করতে হয়েছে, বাতিল হয়েছে ছয়টি বিষয়ের প্রশ্ন। এর বাইরে আরও কয়েকটি বিষয়ের প্রশ্নও ফাঁসের অভিযোগও ছিল।

এ পরিস্থিতিতে বিদ্যমান প্রশ্ন বিতরণ পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি রয়েছে শিক্ষাবিদদের, যা স্বীকার করে নিয়েছেন সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে কার্যকর প্রশ্ন বিতরণ পদ্ধতি খুঁজের বের করার চেষ্টার কথা জানিয়েছেন তারা।

নতুন বছরের প্রথম দিন বই পাবে তো সবাই?

বিনামূল্যের পাঠ্যবই নিয়ে জটিলতা

বিনামূল্যে পাঠ্যবই যথাসময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে অন্যান্য বছরের মত ২০২২ সালেও অনিশ্চয়তায় পড়তে হয়েছে এনসিটিবিকে। এ ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে ২০২৩ সালের শুরুর দিকেই বই ছাপার টেন্ডার কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা নিয়েছে এনসিটিবি।

গত বছর দেরিতে দরপত্র দেওয়া এবং কাগজ নিয়ে জটিলতায় নতুন বছরে অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের বই পেতে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। কাগজের মান কমিয়ে এসব বই ছাপানো হচ্ছে।

এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, “প্রেসের মালিকদের সমস্যা সমাধানে আশ্বাস দেওয়ার পর থেকে মোটামুটি প্রাথমিকের বই ছাপা পুরোদমে চলছে। আমরা মনে করছি, যথাসময়ে ৮০ ভাগ বই চলে যাবে। মানের দিক থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কারণ এটা ছাড়া আমাদের কোন উপায় নাই।”

২০২৩ সালে পাঠ্যবই ছাপানোর জটিলতা এড়ানো সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তিনি।

আরও খবর:

SCROLL FOR NEXT