গণভোট: কোন দিকে যাবে গ্রিস

দাতাদের কঠোর কৃচ্ছ্বতার শর্ত মেনে আন্তর্জাতিক ঋণ, অথবা তা প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে ইউরোজোন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি- এই দুইয়ের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে গণভোটে অংশ নিচ্ছেন গ্রিসের নাগরিকরা।

>>রয়টার্স
Published : 5 July 2015, 04:59 AM
Updated : 5 July 2015, 11:51 AM

রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় (আন্তর্জাতিক সময় ০৪০০) এই ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে, চলবে একটানা সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত।

রাত ৯টায় প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের ফলাফল প্রকাশ করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্যাংক ও অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলার হুমকির মুখে এ গণভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ঋণদাতাদের প্রস্তাব গ্রহণ করবেন না প্রত্যাখ্যান করবেন তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে আছেন গ্রিসবাসী।

প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সি সিপ্রাস ঋণদাতাদের দেওয়া প্রস্তাবকে ‘অপমানজনক’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাখ্যান করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

গণভোটের শেষ প্রচারণা সমাবেশে হাজার হাজার গ্রিসবাসীর উপস্থিতিতে ‘না’ ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিপ্রাস বলেছেন, “আমাদের উচিত রোববার বিশ্বের কাছে গণতন্ত্রের ও আত্মসম্মানের বার্তা পাঠানো।”

অপরদিকে ইউরোপীয় বিনিয়োগকারী ও নীতি নির্ধারকরা বলছেন, প্রস্তাবের প্রত্যাখ্যান গ্রিসকে একক মুদ্রা ইউরো থেকে বের হয়ে যাওয়ার পথে নিয়ে যাবে, এতে বিশ্ব অর্থনীতি ও পুঁজি বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে।

এমনকি সেরা সময়েও যে কোনো দেশের মানুষই কর বাড়ানো ও পেনশনে কাটছাঁটের প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। তারমধ্যে গ্রিসের মানুষ গত পাঁচবছর ধরে কঠোর ব্যয় সংকোচনের মধ্যে থেকে ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে দেশের আর্থিক খাতকে বাঁচাতে সপ্তাহজুড়ে পুঁজি নিয়ন্ত্রণের বিধান চালু করা হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতেই তারা দাতাদের শর্ত অনুযায়ী আরো ব্যায় সংকোচন প্রস্তাবের পক্ষে, না বিপক্ষে ভোট দেবে- সে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে। এ প্রশ্নে গ্রিসের নাগরিকরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন, তারা ভীত- আগে এমনটি কখনোই দেখা যায়নি।  

শুক্রবার প্রকাশিত গণভোটপূর্ব চারটি জরিপে ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে জনমত কিছুটা এগিয়ে আছে বলে দেখা গেছে। অন্য একটি জরিপের ফলে ‘না’ পক্ষ দশমিক পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে আছে বলে প্রকাশ পেয়েছে।

  ‘হ্যাঁ’ পক্ষের সমর্থকদের ধারণা দাতাদের প্রস্তাব মেনে না নিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থার পতনের মধ্যদিয়ে পুরনো ড্রাকমা মুদ্রায় ফিরে যাওয়া তাদের আরো বেশি বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিবে।

অপরদিকে আরো ঋণের বিনিময়ে কর বাড়ানো ও পেনশন কাটছাঁটের মধ্য দিয়ে আরো ব্যয়সংকোচন গ্রিসের প্রতি চারজনের একজনকে বেকার বানিয়ে দেবে, এ চাপ গ্রিস নিতে পারবে না বলে মনে করছে ‘না’ পক্ষ।  

দাতাদের ওই প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে ‘অশেষ দাসত্ব’ মেনে নেওয়া হবে বলে মনে করছেন তারা।