ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়া নৌকায় বাংলাদেশিও ছিলেন

ইউরোপমুখী কয়েকশ আরোহী নিয়ে লিবিয়া আর ইতালির মাঝে ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়া নৌযানে বাংলাদেশি নাগরিকও ছিলেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2015, 03:58 AM
Updated : 20 April 2015, 03:58 AM

বিবিসি, সিএনএনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে একজন বাংলাদেশির কথা বলা হয়েছে, যাকে আরও কয়েকজনের সঙ্গে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার করে ইতালির উদ্ধারকর্মীরা। 

ইতালির তদন্তকারীদের তিনি বলেছেন, বহুতল ওই নৌযানে আরোহীর সংখ্যা ছিল সাড়ে নয়শ। এদের মধ্যে কয়েকশ মানুষকে তালাবন্ধ ঘরে আটকে রেখেছিল পাচারকারীরা। 

তবে উদ্ধার পাওয়া সেই বাংলাদেশির নাম সংবাদ মাধ্যমগুলো প্রকাশ করেনি। ওই নৌযানে কতজন বাংলাদেশি ছিলেন সে বিষয়েও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সিএনএন এর খবরে বলা হয়েছে, উদ্ধারের পর সেই বাংলাদেশিকে চিকিৎসার জন্য সিসিলিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭০ ফুট দীর্ঘ ওই নৌযানে অন্তত ৭০০ আরোহী ছিলেন বলে ইতালির তদন্তকারীদের ধারণা।  

আফ্রিকা থেকে এই অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে ইউরোপের দেশ ইতালিতে যাওয়ার পথে শনিবার মধ্যরাতে লিবিয়ার সমুদ্র উপকূল থেকে ১৭ মাইল দূরে ভূমধ্যসাগরে ডুবে যায় নৌযানটি।

ডুবে যাওয়ার আগে ওই নৌযান থেকে সাহায্য চেয়ে পাঠানো সংকেতে উদ্ধার অভিযান শুরু করে ইতালি কর্তৃপক্ষ। ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপ থেকে ১৩০ মাইল দক্ষিণে ওই এলাকার সাগরে প্রায় ২০টি জাহাজ এবং তিনটি হেলিকপ্টার এ অভিযানে অংশ নিচ্ছে।

তবে আরোহীদের মধ্যে মাত্র ২৮ জনকে এ পর্যন্ত জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। সাগর থেকে আরও ২৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবর। 

সিএনএন এর প্রতিবেদনে বলা হয়, সাহায্য চেয়ে বার্তা পাঠানোর পর ওই নৌযানে কী ঘটেছিল তার কিছু ধারণা পাওয়া যায় উদ্ধার পাওয়া সেই বাংলাদেশি অভিবাসীর বক্তব্য থেকে।

ইতালির তদন্তকারীদের তিনি বলেছেন, বিপদে পড়া নৌযানের আতঙ্কিত আরোহীরা বাঁচার আশায় এক দিকে সরে গেলে সেটি ডুবতে শুরু করে। এ সময় মরিয়া হয়ে অনেকেই সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়েন; তাতে উদ্ধার পাওয়ার আশা আরও ক্ষীণ হয়ে আসে।  

ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়া সংকটের সুযোগ নিয়ে পাচারকারীরা সাম্প্রতিক সময়ে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে মানব পাচারের পথ হিসাবে ভূমধ্যসাগরের এই অংশকে বেছে নিয়েছে। ভাগ্য বদলাতে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টায় এই পথে জাহাজ ডুবে প্রায়ই সলিল সমাধি ঘটছে অবৈধ অভিবাসীদের।      

কেবল চলতি বছর সাড়ে তিন মাসেই অন্তত দেড় হাজার অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে ভূমধ্যসাগরে ডুবে।

এ বিপর্যয় সামাল দিতে জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন ইউরোপের শীর্ষ নেতারা। বিষয়টি নিয়ে সোমবার লুক্সেমবুর্গে একটি বৈঠকে বসার কথা রয়েছে তাদের।

মাল্টার প্রধানমন্ত্রী জোসেফ মুসকাট বার্তা সংস্থা সিএনএনকে বলেন,“একদল অপরাধী মানুষকে বন্দুকের মুখে নৌকায় তুলে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিচ্ছে।... এটা গণহত্যা, তার চেয়ে একবিন্দু কম নয়।”