কথিত ধর্মাবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানে দম্পতি হত্যা

কোরান অবমাননার কথিত অভিযোগে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে এক খ্রিস্টান দম্পতিকে পিটিয়ে হত্যার পর তাদের লাশ ইটখোলার আগুনে পুড়িয়েছে উত্তেজিত মানুষ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Nov 2014, 06:15 AM
Updated : 5 Nov 2014, 10:56 AM

মঙ্গলবার পাঞ্জাব প্রদেশের মফস্বল শহর কোট রাধাকৃষ্ণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি ও এনডিটিভি।

নিহতদের শামা মেসিহ ও শেহজাদ মেসিহ বলে সনাক্ত করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলের ওই ইটখোলাতে নিহত দম্পতি শ্রমিকের কাজ করতো।

এই দম্পতির বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং তাদের চারটি সন্তান রয়েছে।

ছাইয়ের মধ্যে কোরানের পোড়া পৃষ্ঠা পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে এসব পৃষ্ঠা পোড়ানোর অভিযোগ তোলা হয় বলে জানা গেছে।

এই বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ওই দম্পতিকে ইটখোলার একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন খোলাটির মালিক ইউসুফ গুজ্জর। ওই দম্পতির সঙ্গে ধারের টাকা নিয়ে ইউসুফের বিবাদ চলছিল বলে জানা গেছে।

পাওনা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করার পর ইউসুফ তাদের বিরুদ্ধে কোরান পোড়ানোর অভিযোগ আনেন বলে স্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছে কয়েকজন।

ইতোমধ্যে স্থানীয় ইমামরা এই ঘটনা প্রচার করে লোকজনকে জড়ো হতে বলেন। এতে ওই ইটখোলায় কয়েকশ’ লোক এসে জড়ো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, উপস্থিত লোকজনের মধ্যে একটি অংশ দরজা ভেঙে ওই দম্পতিকে বের করে নিয়ে আসেন।

পুলিশ জানিয়েছে, তাদের পিটিয়ে খোলার আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা জাওয়াদ ওমর বলেছেন, “পুলিশ আসার আগেই ওই দম্পতিকে মেরে ফেলা হয়। তাদের লাশগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।”
এ ঘটনায় ৪৬০ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং ৪৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
পাকিস্তানে কঠোর ধর্মাবমাননা আইন (ব্ল্যাসফেমি ল) চালু রয়েছে। দেশটিতে প্রায়ই এই আইনের অপব্যবহার করা হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যক্তিগত শত্রুতা ও সম্পদের লোভে কখনো কখনো ধর্মাবমাননার অভিযোগ তোলা হয়। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মুসলিম অধ্যুষিত দেশটিতে এর শিকার হন অন্যধর্মের সংখ্যালঘুরা।