কানাডার রাজধানী অটোয়ায় ওয়ার মেমোরিয়ালের কাছে এক বন্দুকধারীর গুলিবর্ষণে এক সেনা নিহত হয়েছেন। এর পরপরই পার্লামেন্ট ভবনে গুলিবর্ষণ শুরু হয়।
Published : 22 Oct 2014, 08:33 PM
পার্লামেন্টে কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পার যেখানে বক্তৃতারত ছিলেন তার কাছেই গুলি বর্ষিত হয়, তবে হার্পারকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়।
পার্লামেন্ট ভবনে নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা গুলিতে হামলাকারী বন্দুকধারী নিহত হয়েছেন। ওয়ার মেমোরিয়াল ও পার্লামেন্ট ভবনে হামলা একই ব্যক্তি চালিয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বুধবার সকালে সংঘটিত এসব ঘটনায় অটোয়াবাসী স্তম্ভিত হয়ে গেছে, শহরের জীবনযাত্রা স্তব্ধ হয়ে পড়েছে।
ইসলামি জঙ্গিদের সঙ্গে সম্ভাব্য সম্পর্কের সূত্রে ঘটা হামলার ঘটনায় চলতি সপ্তাহে কানাডায় দুই সেনা নিহত হলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ভাষ্যে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল পাহারারত সেনাকে যে ব্যক্তি গুলি করে হত্যা করেছে কয়েক মিনিট পর সেই একই ব্যক্তি পার্লামেন্ট ভবনে গিয়ে গুলিবর্ষণ শুরু করে।
তবে কানাডীয় পুলিশ বলেছে, দুই জায়গার হামলাকারী একই ব্যক্তি কিনা তা নিশ্চিত নয় তারা।
এর আগে সোমবার কুইবেকে দুই সেনা সদস্যের উপর এক গাড়ি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে এক সেনা নিহত ও অপরজন আহত হন।
একজন ধর্মান্তরিত মুসলিম ব্যক্তি ওই হামলা চালিয়েছিল বলে জানা গেছে। পুলিশের গুলিতে ওই ব্যক্তিও নিহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেছেন, বুধবার গুলিবর্ষণ করা নিহত বন্দুকধারীও একজন ধর্মান্তরিত মুসলিম বলে তাদের কাছে তথ্য আছে।
বুধবারের হামলার ঘটনায় মাইকেল জেহাফ-বিবেউ নামের সম্ভাব্য সন্দেহভাজনের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে কানাডীয় পুলিশ, ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত এক সূত্র এ খবর জানিয়েছেন।
ঘটনার ১০ ঘন্টা পর টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী হার্পার। তখনও অটোয়ার বেশি কয়েকটি ভবন নিরাপত্তাজনিত কারণে বন্ধ করে রেখেছিল পুলিশ এবং গুলিবর্ষণের ঘটনার সঙ্গে দ্বিতীয় কোনো বন্দুকধারী জড়িত ছিল কিনা তার সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখছিল।
ভাষণে হার্পার হামলাকারীকে “সন্ত্রাসী” আখ্যায়িত করে বলেন, সে একাই হামলা চালিয়েছে না তার সঙ্গে আরো কেউ ছিল তা আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
“তখন কোনো ভুল বোঝাবুঝি থাকবে না। এর মাধ্যমে আমাদের ভয় পাওয়ানো যাবে না। কানাডা কখনোই ভয় পাবে না,” বলেন কিছুটা উত্তেজিত প্রধানমন্ত্রী।
চলতি মাসে কানাডা ঘোষণা করেছে, সিরিয়া ও উত্তর ইরাকের বিশাল অংশ দখল করে নেয়া ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে অংশ নেবে তারা।
হার্পার বলেছেন, এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় দেশের বাইরে “সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর” বিরুদ্ধে দ্বিগুণ উদ্যেম নিয়ে লড়াইয়ে নামবে কানাডা।
হার্পারের ভাষণের পর শহরের ডাউনটাউন এলাকা থেকে অবরোধ তুলে নেয় পুলিশ, তবে পার্লামেন্ট হিল এলাকায় নিরাপত্তা অবরোধ তখনও বজায় ছিল।