রাশিয়ায় নতুন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে মতৈক্য

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগের মুখে থাকা রাশিয়াকে শাস্তি দিতে দেশটিতে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য একটি আইন করতে একমত হয়েছেন কংগ্রেসের রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দলের নেতারা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2017, 12:23 PM
Updated : 23 July 2017, 01:10 PM

নতুন ওই আইনে রাশিয়ার ওপর থেকে কোনওরকম নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতাও অনেকবেশি সীমিত করা হবে।

ট্রাম্প এর আগে ক্রেমলিনের ব্যাপারে তার কূটনৈতিক স্বাধীনতা থাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার সময় থেকেই গতবছরের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ বয়ে বেড়াচ্ছেন। রাশিয়া এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারপরও যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছেন যে, ট্রাম্পের নির্বাচনকালীন প্রচার শিবিরের কেউ রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনওরকম আঁতাত করেছে কিনা।

এ পরিস্থিতির মধ্যে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটরা মিলে রাশিয়ার ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিল আনতে একমত হওয়ায় এই ইঙ্গিতই পাওয়া যাচ্ছে যে, ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি যাই হোক না কেন, কংগ্রেস রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানেই অটল থাকতে চায়।

দুই দলের নেতাদের মধ্যে গভীর আলাপ-আলোচনার পরই মতৈক্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিনেট পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির ঊর্ধ্বতন ডেমেক্র্যাট নেতা সিনেটর বেন কার্ডিন।

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা কেভিন ম্যাককার্থির কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, মঙ্গলবার প্রতিনিধি পরিষদে রাশিয়াসহ ইরান ও উত্তর কোরিয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের কয়েকটি বিল নিয়ে ভোটভুটি হবে। এ পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে ওই দেশগুলো তাদের বিপজ্জনক কর্মকান্ডের জন্য দায়ী বলে গণ্য হবে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ার বিলে ভেটো দিতে পারেন। কিন্তু তা করলে ক্রেমলিনের প্রতি ট্রাম্পের অতিমাত্রার সমর্থন নিয়ে সন্দেহ আরও ঘণীভূত হবে। তাছাড়া, ট্রাম্প তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করছেন এটিও পরিষ্কার হয়ে যাবে।

ডেমেক্র্যাট নেতা বেন কার্ডিন বলেছেন, “আমেরিকার জনগণ এবং  আমাদের মিত্রদের পক্ষ থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে কংগ্রেস প্রায় অনেকটাই একতাবদ্ধ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও রাশিয়াকে এ বার্তা পাঠানোর জন্য আমাদেরকে সহায়তা করা উচিত।”

সিনেটের ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার বলেছেন, কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ এবং সিনেট দুই কক্ষই ‘খুব শিগগিরই দ্বিদলীয় ভিত্তিতে ব্যাপক পরিসরে’ বিলটি নিয়ে কাজ করবে। শক্তিশালী একটি নিষেধাজ্ঞা বিল হওয়াটা ‘জরুরি’।

বিলের আওতায় ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের জন্য রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্যও দেশটির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যাবে।

প্রস্তাবিত বিলের আওতায় প্রেসিডেন্ট ট্রাস্পও রাশিয়া নিয়ে বর্তমান মার্কিন নীতি অনেকটাই পরিবর্তন করার প্রস্তাব দিতে পারবেন। যার মধ্যে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা এবং কূটনৈতিক সম্পদ ফেরত দেওয়ার প্রস্তাবও থাকতে পারে।

সেক্ষেত্রে কংগ্রেস ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাম্পের ওইসমস্ত প্রস্তাব নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠান করবে এবং তরপর প্রস্তাবগুলো রাখা হবে নাকি প্রত্যাখ্যান করা হবে তা নিয়ে ভোটাভুটি করবে।