গত বছর বিশ্বের শত শত প্রভাবশালী ব্যক্তির কর ফাঁকির তথ্য ফাঁস হওয়ার পর আলোচনার কেন্দ্রে আসা পানামার আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মোস্যাক ফনসেকার দুই প্রতিষ্ঠাতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
Published : 12 Feb 2017, 02:24 PM
দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকায় শনিবার ইয়ুর্গেন মোস্যাক ও র্যামন ফনসেকাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পানামার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় জানিয়েছে।
ব্রাজিলের বহু বিস্তৃত এক দুর্নীতি কেলেঙ্কারির অর্থ পাচারে তারা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ আছে।
ব্রাজিলের ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি অডেব্রেখটের সঙ্গে তাদের কোম্পানির কোনো যোগাযোগ আছে, তা এর আগে অস্বীকার করেছিলেন পানামার প্রেসিডেন্টের সাবেক উপদেষ্টা ফনসেকা। ২০১০ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত সরকারি কাজ পাওয়ার জন্য পানামা ও লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশে অডেব্রেখট সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিত।
এক সংবাদ সম্মেলনে পানামার অ্যাটর্নি জেনারেল কেনিয়া পোর্সেল বলেছেন, “নীতিগতভাবে এই তদন্ত অডেব্রেখটের সঙ্গে জড়িত নয়, লাভা জাটো মামলার সঙ্গে জড়িত।”
ব্রাজিলের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পেত্রব্রাসের দুর্নীতি কেলেঙ্কারির তদন্তকে ইঙ্গিত করে তিনি একথা বলেন।
লাভা জাটো মামলার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক থাকার কথাও অস্বীকার করেছিলেন ফনসেকা।
“এ পর্যন্ত যেসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে তার ভিত্তিতে পানামার প্রতিষ্ঠানটিকে একটি অপরাধী সংগঠন হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এই ফার্মটি সন্দেহজনক উৎস থেকে আসা সম্পদ বা অর্থ লুকানোর কাজে নিয়োজিত ছিল,” বলেন তিনি।
অভিযোগগুলোর বিষয়ে সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের জন্য বৃহস্পতিবার মোস্যাক ফনসেকার দপ্তরে হানা দেয় অভিশংসকরা। শুক্রবার তারা মোস্যাক ও ফনসেকার বাড়িতেও তল্লাশি চালায়।
গত বছরের এপ্রিলে ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিব জার্নালিস্ট (আইসিআইজে) ও জার্মান পত্রিকা সুইডয়চে সাইটং মোস্যাক ফনসেকার সাড়ে ১১ মিলিয়ন গোপন দলিল ফাঁস করে দেয়। পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারি নামের পৃথক ওই মামলার কেন্দ্রেও আছে এই আইনি প্রতিষ্ঠানটি।
৪০ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি অফশোর কোম্পানি গঠন করে তাদের ক্ষমতাশালী মক্কেলদের কীভাবে অর্থ পাচারে সহযোগিতা করেছে, নিষেধাজ্ঞা এড়ানো এবং কর ফাঁকি দেওয়ার পথ দেখিয়েছে, তার তথ্য উঠে আসে সেসব নথিতে। বছরের পর বছর ধরে কর ফাঁকির এমন মহোৎসবের খবর পত্রিকার পাতায় আসার পর আক্কেল গুড়ুম হয়ে যায় বিশ্ববাসীর।