ট্রাম্পের ভাষণের বিপক্ষে কথা বলে সমালোচিত ব্রিটিশ স্পিকার

যুক্তরাজ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় সফরের সময় ব্রিটিশ পার্লামেটে তার ভাষণের পরিকল্পনার বিরোধিতা করার ঘোষণা দিয়ে কনজারভেটিভ দলের এমপিদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন নিম্মকক্ষের স্পিকার জন বেরকাউ।

সোমবার পার্লামেন্ট অধিবেশন চলাকালে ট্রাম্পের সম্ভাব্য রাষ্ট্রীয় সফরে ওয়েস্টমিনস্টার হলে তার ভাষণ দেওয়া নিয়ে লেবার পার্টির এক সদস্যের প্রশ্নের জবাবে বেরকাউ নিজের বিরোধিতার কথা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্পের শরণার্থী পুনর্বাসন ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তার এই সিদ্ধান্তের পেছনে অন্যতম কারণ বলে জানান বেরকাউ।

তিনি বলেন, “অভিবাসন নিয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগেও আমি ওয়েস্টমিনস্টার হলে ট্রাম্পের বক্তৃতার বিরোধী ছিলাম। নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর আমার অবস্থান এখন এ বিষয়ে আরও কট্টর।”

স্পিকারের বলিষ্ঠ  এ প্রতিক্রিয়ায় সে মুহূর্তে সাংসদরা তুমুল করতালি দিয়ে স্বাগত জানান। কিন্তু পরে অনেক ঊর্ধ্বতন কনজারভেটিভ এমপি-ই এ বক্তব্যের জন্য তার সমালোচনা করেন।

পার্লামেন্টে বিদেশি নেতাদের ভাষণের ক্ষেত্রে নিম্নকক্ষের স্পিকারের অনুমোদন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বেরকাউয়ের ওমন তীব্র প্রতিক্রিয়া নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন অনেকে। সমালোচকরা বলছেন, বেরকাউ তার পদমর্যাদার অপব্যবহার করেছেন।

বেরকাউয়ের সমালোচনায় কয়েকজন কনজারভেটিভ এমপি বলেন, তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেতে পারে। তিনি জাতীর স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন।

কয়েকজন এমপি স্পিকারের নিরপেক্ষতা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন।

কনজারভেটিভ এমপি স্যার গেরাল্ড হোয়ার্থ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। স্পিকার কূটনীতির এ দিকটি আমলে নেননি।

তিনি যা বলেছেন তার অর্থ কার্যত এটিই দাঁড়ায় যে, ট্রাম্পকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এমপিদের সামনে ভাষণ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হবে না।

ডাউনিং স্ট্রিট বেরকাউয়ের মন্তব্যকে “পার্লামেন্টের জন্য একটি ব্যাপার” আখ্যা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সংসদ সদস্য রিপাবলিকান নেতা জো উইলসন বেরকাউয়ের এই মন্তব্যকে ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের জন্য ‘চপেটাঘাত’ বলে বর্ণনা করেছেন।

বিবিসি জানায়, যুক্তরাজ্যের রানি এলিজাবেথের যুক্তরাজ্য সফরের আমন্ত্রণ স্বীকার করেছেন ট্রাম্প। তার সফরসূচিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উভয়কক্ষেই ভাষণ দেওয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বারাক ওবামা সংসদীয় গণতন্ত্রের সবচেয়ে প্রাচীন ভবনখ্যাত ওয়েস্টমিনস্টার হলে ভাষণ দেন। তার আগে দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা ও ফ্রান্সের চার্লস দ্য গল এ সম্মান পেয়েছিলেন।