পাপুয়া নিউ গিনিতে অস্ট্রেলিয়ার শরণার্থী শিবিরে আটক ইরানের এক শরণার্থী কার্টুন আঁকার প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন।
Published : 27 Aug 2016, 08:30 PM
২৫ বছর বয়সী আলি রাজনীতি নিয়ে কার্টুন বিভাগে বিজয়ী হন। তিনি ‘ইটেন ফিশ’ ছদ্মনামে ছবি আঁকেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত তিন বছর ধরে আলি পাপুয়া নিউ গিনির মানুস দ্বীপে বসবাস করছেন।
সেখানে তাকে অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার(ওসিডি), পোস্ট-ট্রামাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার ও ডিবিলিটেটিং প্যানিক অ্যাটাকের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার কঠোর ইমিগ্রেশন নীতি অনুযায়ী, সমুদ্র পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা করা ব্যক্তিদের মূলভূখণ্ডে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
বরং অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ তাদের দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের মানুস বা নাউরু দ্বীপের ডিটেনশন সেন্টারে পাঠিয়ে দেয়।
কার্টুনিস্ট রাইট নেটওয়ার্ক ইন্টারন্যাশনালের (সিআরএনআই) পক্ষ থেকে বলা হয়, মূলভূখণ্ডের বাইরে অস্ট্রেলিয়ার ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে মানুষের জীবন নিয়ে তথ্যমূলক কার্টুন আঁকেন আলি। এই সাহসী উদ্যোগের কারণে তিনি আগে থেকেই নিজের একটি অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে সিআরএনআই’র পরিচালক পর্ষদের প্রধান জোয়েল পেট বলেন, “ধারাবাহিক কার্টুনের মাধ্যমে ‘ইটেন ফিশ’ ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে রক্ষী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বাড়াবাড়ি ও অকথ্য নির্যাচনের চিত্র তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।”
“এজন্য তাকে মারধর করা হয়েছে এবং খাবার খেতে দেওয়া হয়নি। এমনকি, শিবিরের রক্ষীরা তার সঙ্গে খুবই অসম্মানজনক আচরণ করেছে।”
অস্ট্রেলিয়ায় আলির আইনজীবী জ্যানেট গালব্রিথ বলেন, এই পুরস্কার (তার মক্কেল) তরুণ কার্টুনিস্টের জন্য বিশেষ কিছু। তার কাজ গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার ডিটেনশন প্রকল্পের বিরুদ্ধে এটা একটি অভিযোগও বটে।
ইরান সরকারের নিপীড়নের শিকার হওয়ার ভয়ে দেশত্যাগ করা আলি অসুস্থ এবং তার বিশেষ চিকিৎসা প্রয়োজন বলেও জানান গালব্রিথ।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড বোর্ডার প্রটেকশন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সিআরএনআই-র অভিযোগ অস্বীকার করে ইমেইলে রয়টার্সকে বলে, “আমরা সম্প্রতি তদন্ত করে এইসব অভিযোগের সত্যতার কোনো প্রমাণ পাইনি।”
এ মাসের শুরুতে মানুস দ্বীপের শরণার্থী শিবির বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল পাপুয়া নিউ গিনি ও অস্ট্রেলিয়া সরকার।
তবে কবে নাগাদ শিবিরটি বন্ধ করা হবে সে বিষয়ে কিছু জানাননি তারা। বর্তমানে সেখানে প্রায় আটশ শরণার্থী বসবাস করছে। শিবির বন্ধ করে দেওয়ার হলে তাদের কি হবে সে বিষয়েও কিছু জানায়নি উভয় দেশ।