সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে আয়োজিত মিল্কেন গ্লোবাল কনফারেন্সে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্ল্যাকবেরি সিইও বলেন, “অ্যাপল যদি আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চায়, তবে আমরা খুশি মনে এ বিষয়ে আলোচনা করব।”
‘অ্যাপল কি এরমধ্যেই এমন কোনো প্রস্তাব নিয়ে ব্ল্যাকবেরির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে?’--এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান চেন।
‘অ্যাপল-ব্ল্যাকবেরি’ জোট অনেকের কাছেই ‘আকাশকুসুম’ ভাবনা মনে হতে পারে। তবে সত্যিই এই যদি দুই প্রতিষ্ঠান জোটবদ্ধ হয় তবে বড় পরিবর্তন আসতে পারে প্রযুক্তিপণ্যের বাজারের বর্তমান দৃশ্যপটে--এমনটাই ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে বলা হয়েছে সিএনএনের ওই প্রতিবেদনে।
বলা হয়ে থাকে, স্মার্টফোন যুগের শুরুই হয়েছিল ব্ল্যাকবেরির হাত ধরে। পরবর্তীতে স্টিভ জবসের অ্যাপলের কাছে সিংহাসন হারায় কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠানটি।
সময়ের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে স্মার্টফোন নির্মাতা হিসেবে আধিপত্য রয়েছে অ্যাপলের। অন্যদিকে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ে ব্ল্যাকবেরি হারিয়েছে আগের জৌলুস।
তবে এখনও ডিভাইসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিবেচনায় শক্ত অবস্থানে আছে প্রতিষ্ঠানটি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিভাগগুলোতে এখনও ব্ল্যাকবেরি ডিভাইস বহুল ব্যবহৃত। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও ব্যবহার করেন ব্ল্যাকবেরি স্মার্টফোন।
চেনের বক্তব্যের সূত্র ধরে অ্যাপলের সঙ্গে যোগাযোগ করা করা হলেও সিএনএনকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি অ্যাপল।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সবসময়ই ব্ল্যাকবেরির আলোচনা চলে বলে জানিয়েছেন চেন। সম্প্রতি নিজেদের তৈরি অ্যাপগুলোর আইওএস, অ্যান্ড্রয়েড ও উইন্ডোজ সংস্করণ উন্মুক্ত করার পরিকল্পনার ঘোষণাও দিয়েছে ব্ল্যাকবেরি।
“হ্যাঁ, আমরা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে সবসময়ই যোগাযোগ রাখি। আমরা হয়ত একই গ্রাহকের পেছনে ছুটছি, কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা একে অপরের শত্রু। আমরা অ্যাথলেটদের মতোই বন্ধু হয়েও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি।”— বক্তব্য জন চেনের।
সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেউ যদি অ্যাপলের সঙ্গে ব্ল্যাকবেরির একটি সফল জোট গঠন করতে পারেন, তবে সেটা হবেন জন চেন। আক্ষরিক অর্থেই ব্ল্যাকবেরিকে ‘ধ্বংসের মুখ’ থেকে ফিরিয়ে এনেছেন প্রতিষ্ঠানটির সিইও।
ব্ল্যাকবেরি পরিচালনার দায়িত্বভার নেওয়ার পর শুধু প্রতিষ্ঠানটির টানা লোকসানের স্রোত বন্ধই করেননি চেন, বড় পরিবর্তন এনেছেন প্রতিষ্ঠানটির কৌশলগত দিকেও। ব্যয়বহুল স্মার্টফোন নির্মাণের বদলে গুরুত্ব বাড়িয়েছেন সফটওয়্যার এবং নিরাপত্তা খাতে। এর সুফলও পেয়েছেন জন চেন। গত এক বছরে শেয়ার বাজারে ব্ল্যাকবেরির শেয়ারের মূল্য বেড়েছে ৪০ শতাংশ।