নতুন এক সংবাদমাধ্যম চালুর পরিকল্পনা করছেন উইকিপিডিয়া সহ-প্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলস। পেশাদার সাংবাদিক আর স্বেচ্ছাসেবকদের কাজের সমন্বয়ে এই সংবাদ সেবা চালানো হবে।
Published : 25 Apr 2017, 05:44 PM
‘ভুয়া সংবাদ’ সমস্যা লড়াইয়ে ‘বাস্তব ও নিরপেক্ষ’ সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের লক্ষ্যেই ‘উইকিট্রিবিউন’ নামের এই সেবা চালু করছেন তিনি, বলা হয়েছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে।
কোনো প্রকার বিজ্ঞাপন ছাড়াই বিনামূল্যে এই সেবা সেওয়া হবে, এক্ষেত্রে এটিও সমর্থকদের নিয়মিত দানের উপর নির্ভর করবে।
এ বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞের মত হচ্ছে, এটি একটি বিশ্বস্ত সাইট হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এর প্রভাব সীমিত হতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অনলাইন এনসাইক্লোপিডিয়া উইকিপিডিয়ার অনেক প্রতিবেদন এখন উইকিট্রিবিউন-এ পাওয়া যাচ্ছে। সেইসঙ্গে নতুন সাইটটিতেও প্রতিটি ঘটনা নিয়ে লেখকদের কাছে উৎস চাওয়া হচ্ছে। এই সাইটটিও প্রতিবেদন সঠিক রাখতে উইকিপিডিয়ার মতো মানুষের সম্পাদনার উপর নির্ভর করবে। যদিও কেউ কোনো পরিবর্তন আনলেও প্রতিষ্ঠানটির কোনো কর্মী বা বিশ্বস্ত সম্প্রদায়ের স্বেচ্ছাসেবক অনুমোদনের পরই তা প্রকাশ করা হবে। এ সাইটে লেখকদের মূল দলকে অর্থ প্রদান করা হবে।
সাইটটির এক ডেমো সংস্করণে “সংবাদ ভেঙ্গে গেছে আর আমরা এটি ঠিক করতে পারব” এমন ঘোষণা দেখা যায়, বলা হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে। ওয়েলস বিশ্বাস করেন, বর্তমানে থাকা সংবাদমাধ্যমগুলোর অধিকাংশের ব্যবহৃত বিজ্ঞাপনভিত্তিক কাঠামো’র ক্ষেত্রে ‘ক্লিকের পেছনে দৌড়ানো’র প্রবণতা সৃষ্টি হয়, আর এটি আদর্শগুলোকে ক্ষতিগ্রস্থ করে।
তিনি বলেন, “আমি মনে করি, আমরা এখন এমন বিশ্বে আছি যেখানে মানুষ আমাদের কাছে উন্নত মানের বাস্তবভিত্তিক তথ্য আছে কিনা তা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন, তাই আমি মনে করি তাদের কাছে এর চাহিদা থাকবে।”
“আমরা মাসিক সমর্থকদের জন্য সাইন আপ চালু করেছি, যত বেশি মাসিক সমর্থক থাকবে, আমরা তত বেশি সাংবাদিক নিয়োগ দিতে পারব।”
“সর্বনিম্নের ক্ষেত্রে, যদি আমরা দুইজন সাংবাদিক নিয়োগ দিতে পারি তাহলে এটি একটি ব্লগ হবে আর সত্যিকার অর্থে তা যথেষ্ট নয়। কিন্তু আমি আরও বেশি নিয়ে শুরু করতে পছন্দ করব- ১০ থেকে ২০।”
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি’র নিয়েমেন জার্নালিজম ল্যাব-এর পরিচালক জোশুয়া বেন্টন বলেন, “অনেক ধরনের মানুষ আছেন- যারা এটি যদি ঠিক করে থাকে- তবে একে একটি বিশ্বস্ত প্লাটফর্ম হিসেবে দেখবেন। কিন্তু অন্য ১০ থেকে ২০ জন্য এই ‘সংবাদ ঠিক করতে’ যাচ্ছেন না।”
ওয়েলস অন্তত এক বছর উইকিট্রিবিউন-এর প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করবেন। এই প্রকল্পের অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন, - সিলিকন ভ্যালির ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট গাই কাওয়াসাকি, সাংবাদিকতা প্রভাষক অধ্যাপক জেফ জার্ভিস, মার্কিন আইন অধ্যাপক ল্যারি লেসিগ এবং মডেল ও অভিনেত্রী লিলি কোল।
ওয়েলস বলেন, “যদি আপনি নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে একত্র করতে পারেন, যারা বিটকয়েনে আগ্রহী (উদাহরণসকরূপ) আর আপনি যদি একজন মাসিক সমর্থক হিসেবে সাইন-আপ করে থাকেন, তাহলে আমরা বিটকয়েন সম্পর্কে জানেন এমন কাউকে এ বিষয়ে পূর্ণকালীন হিসেবে নিয়োগ দেব।”
“সুতরাং, মাসিক সমর্থকরা ঠিক করতে পারবেন কোন বিষয়গুলো সম্পর্কে প্রচার করা হবে। কিন্তু এটি নিরপেক্ষ থাকতে যাচ্ছে। তারা তাদের পছন্দমতো জায়গা নিতে পারবেন না, যেখানে তাদের এজেন্ডা সামনে নিয়ে যাওয়া হবে। এটি পুরোপুরি সম্পাদকীয় নিয়ন্ত্রণের হাতে থাকবে।”