বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন ল্যাব (আরআইএল) এ তথ্য দিয়েছে।
আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে গড় বাজার মূলধন বেড়েছে ০.০৭%, বাজার মূলধন বৃদ্ধির সঙ্গে হাওলা ৩.২২% ও লেনদেনের পরিমাণ ৯.৪১% হ্রাস পেয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লেনদেনে অংশ না নেওয়ায় কারণে এমনটি ঘটেছে বলে আরআইএল এর পর্যবেক্ষণ।
মাপকাঠি | চলতি সপ্তাহ | গত সপ্তাহ | পরিবর্তন |
ডিএসসিএক্স সূচক | ৪৫৮১.৩৫ | ৪৫৭১.১২ | ০.২২% |
গড় বাজার মূলধন (কোটি টাকা) | ৩১৬৮৬৪.৬৫ | ৩১৬৬৩২.২৭ | ০.০৭% |
মোট লেনদেন (কোটি টাকা) | ১৮৬৩.৫৫ | ২০৫৭.০৯ | -৯.৪১% |
মোট পরিমাণ (কোটি টাকা) | ৪৯.০১ | ৫৯.০৬ | -১৭.০১% |
মোট হাওলা | ৫১২৬৯৪ | ৫২৯৭৫৯ | -৩.২২% |
মুনাফা-ঝুঁকি অনুপাত | ০.৭৬ | -০.১১ | ৭৬৭.২৮% Up |
সূত্র: রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন ল্যাব
আরআইএলের গবেষণায় দেখা যায়, গেল সপ্তাহে গড়ে প্রতি ইউনিট ঝুঁকি গ্রহণের বিপরীতে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা মুনাফা অর্জন করেছে। প্রতি ইউনিট ঝুঁকির বিপরীতে এই মুনাফার পরিমাণ ০.৭৬, যা এর আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রায় অনেক বেশি।
এ থেকে পরিষ্কার যে, বাজারের অবস্থা কিছুটা সবল এবং আগের সপ্তাহের তুলনায় গেল সপ্তাহে এই সবল অবস্থা কিছুটা ভালোর দিকে গিয়েছে।
গত সপ্তাহে প্রধান মূল্যসূচক ০.২২% (১০.২৩ পয়েন্ট) বৃদ্ধি পেয়েছে ও বাজার ঝুঁকির মাত্রা ছিল ০.৩০%। অ্যাডভান্সড-ডিক্লাইন (এডি) রেশিও সপ্তাহের শুরুতে ০.৯৬ দিয়ে শুরু হলেও শেষ দিনে ০.৯৫– এ নেমে আসে।
আরআইএল বলছে, গত সপ্তাহে গোটা বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকার পাশাপাশি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর বাজার মূলধন মোট বাজার মূলধনের ৩৪.৪৪% থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪.৪৭%। অর্থাৎ মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে।
খাত ভিত্তিক চিত্র
গত সপ্তাহে পাট (১২৯.০৫) এবং পেপার ও প্রিন্টিং (১০৬.৭৩) খাতের পি-ই রেশিও ছিল সবচেয়ে বেশি, যা এ দুটি খাতের কোম্পানিগুলোর মুনাফার তুলনায় তাদের শেয়ারের উচ্চ চাহিদাকে নির্দেশ করে।
উচ্চ পি-ই রেশিও বেশি দেখা গেলেও পেপার ও প্রিন্টিং খাতের শেয়ার গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের মুনাফা দিতে পারেনি, বরং লোকসানের মুখোমুখি করেছে।
অন্য সব খাতের তুলনায় এই খাতের লোকসানের পরিমাণ সর্বাধিক ছিল গত সপ্তাহে (-০.৬৯%)।
লক্ষণীয় শেয়ার
গত সপ্তাহে সাপ্তাহিক মুনাফার দিক থেকে শীর্ষ পাঁচ শেয়ার- লিবরা ইনফিউশন (২৬.৪১%), জেমিনি সি ফুড (২৫.০৯%), বিএসআরম (২৫.০৪%), প্রাইম লাইফ ইন্সুরেন্স (১৯.৩৩%) ও সিএমসি কামাল (১৭.৮১%)।
সর্বনিম্ন পাঁচ শেয়ার হল- ম্যাকসন স্পিনিং (-২০.৯৩%), ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট (-১১.৮২%), কেপিপিএল (-১০.২৪%), ইসলামী ব্যাংক (-৯.৭৭%) এবং এলআর গ্লোবাল মিউচুয়াল ফান্ড (-৭.২৭%)।
দামের ওঠানামায় ঝুঁকির পরিমাপে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ পাঁচ শেয়ার- বিএটিবিসি (৬৩.০৫), লিবরা ইনফিউশন (৫১.৬২), স্টাইল ক্রেফট (৫০.২৪), জেমিনি সি ফুড (৪৪.১৩) ও গ্ল্যাক্সোস্মিথ (৪০.৩৮)।
টাকার পরিমাপে বাজারে মোট লেনদেনের শতাংশ হিসেবে সর্বাধিক লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা (৬.৩৬%), বিএসআরএম (৩.৫৪%), সিটি ব্যাংক (২.৩৯%), স্কয়ার ফার্মা (২.৩৫%) ও ইউপিজিডিসিএল (২.২৯%)।
অন্যদিকে সপ্তাহের মোট লেনদেনকৃত শেয়ারের সংখ্যার অনুপাতে সর্বোচ্চ শেয়ার লেনদেন হওয়া শীর্ষ পাঁচ কোম্পানি- ইউনাইটেড এয়ার (৪.৩১%), সিটি ব্যাংক (৩.৮৪%), ফুওয়াং সিরামিক (৩.৭৫%), অলটেক্স (২.৬১%) এবং বেক্সিমকো ফার্মা (২.৫৫%)।
মোট বাজার মূলধনের অনুপাতে সর্বোচ্চ মূলধন সৃষ্টিকারী পাঁচ শেয়ার- জিপি (১০.৮৯%), বিএটিবিসি (৫.৪৯%), স্কয়ার ফার্মা (৫.১৮%), লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট (২.৭৪%) এবং রেনেটা (২.১৪%)।
বাজার নিয়ে পূর্বাভাস
গত সপ্তাহ এবং তার আগের কয়েক সপ্তাহের বাজার পরিস্থিতি ও গবেষণার প্রেক্ষিতে, আগামী সপ্তাহের বাজার বেশ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলে আরআইএলের ধারণা।
বাজারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আগামী সপ্তাহে কিছুটা চলমান হবে বলে প্রতিষ্ঠানটি আভাস দিয়েছে।