লিওনেল মেসি ফুটবলের প্রতি ভালোবাসাটা হারিয়ে ফেলছেন-এরকম একটা গুঞ্জন কেউ কেউ যখন তুলতে শুরু করেছেন, ঠিক তখনই আর্জেন্টিনার ছোট্ট জাদুকর তার প্রাণোচ্ছ্বাসটা দেখান। আর নিজের ফুটবল নৈপুণ্য দিয়ে বার্সেলোনাকে লা লিগার শিরোপা জেতানোয় সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন মেসি।
Published : 18 May 2015, 08:49 PM
নতুনভাবে উদ্দীপ্ত মেসি মৌসুমের দ্বিতীয়ার্ধে তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ফুটবল উপহার দেন। লুইস সুয়ারেস আর নেইমারকে নিয়ে গড়ে তোলেন বার্সেলোনার ভয়ালসুন্দর আক্রমণ-ত্রয়ী। আর মূলত এরাই বার্সেলোনাকে সাত বছরের মধ্যে পঞ্চম লিগ শিরোপা এনে দেয়।
সবধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে নিজেদের সবশেষ ৩২ ম্যাচে ২৯টি জয় তুলে নেয় বার্সেলোনা। আর এটাই তাদের ২০০৯ সালের পর আবার ট্রেবল জয়ের কিনারে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
একই সময়ে রিয়াল মাদ্রিদ লা লিগায় এগিয়ে যাচ্ছিল। ২০১৪ সালটা তারা শেষ করে স্প্যানিশ রেকর্ড টানা ২২টি ম্যাচ জিতে। ওদিকে মেসির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোও তাকে পেছনে ফেলে ফিফা-ব্যালন ডি’অর জেতে।
জানুয়ারিতে রিয়াল সোসিয়েদাদের মাঠ থেকে হেরে আসে বার্সেলোনা। এ সময় চারদিকে মেসি আর লুইস এনরিকের মধ্যে ঝামেলার খবর ছড়ায়।
বড়দিনের ছুটি কাটিয়ে ক্লাবে দেরি করে ফেরেন মেসি। এক ম্যাচে কোচ তাকে বদলি করায় রেগে যান তিনি। টানেলে এনরিকের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় তার। আর পরের দিন শরীর ভালো নেই বলে অনুশীলনে যাননি মেসি।
এসব থেকে অবশেষে ক্লাবটি বেরিয়ে আসার পথ পায় মেসি ও এনরিকের মধ্যে নতুনভাবে বোঝাপাড়ার কারণে। এনরিকে বার্সেলোনায় প্রতি-আক্রমণাত্মক ফুটবলের নতুন একটি ধারা নিয়ে আসেন।
বিশ্বকাপে কামড়-কাণ্ডের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে অক্টোবরে মাঠে ফিরলেও শুরুর দিকে সুয়ারেস খুব একটা সুবিধা করতে পারছিলেন না। কিন্তু পরে উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার তার দুর্দান্ত ফর্ম ফিরে পান। তিনি আর নেইমার হয়ে ওঠেন মেসির একদম সঠিক সঙ্গী।
একই সময়ে রিয়াল ধুঁকতে থাকে। মৌসুমের শুরুর দিকের ভয়ঙ্কর ফর্মটা ধরে রাখতে পারেননি রোনালদো। গ্যারেথ বেল, লুকা মদ্রিচ ও হামেস রদ্রিগেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা বিভিন্ন সময়ে চোটে পড়েন।
গত মার্চে এল ক্লাসিকোয় রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে ৪ পয়েন্ট এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। এরপর আর তাদের পেছন ফিরে থাকাতে হয়নি।
জানুয়ারিতে সোসিয়েদাদের ম্যাচের পর সবকটি ম্যাচেই খেলেন মেসি। আর এনরিকেও তার সবচেয়ে বড় তারকাকে নিয়ে প্রশংসার ঝাপি খুলে দেন। গত রোববার আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচের একমাত্র গোলটিও করেন মেসি। তার এই গোলটিতেই এক ম্যাচ হাতে রেখে লা লিগা শিরোপা নিশ্চিত হয় বার্সেলোনার।
সম্প্রতি মেসিকে নিয়ে এনরিকে বলেন, “নি:সন্দেহে মেসি বিশ্বের সেরা এবং আমার কাছে সে ফুটবল ইতিহাসের সেরা।”
মৌসুম শেষে এটা পরিষ্কার যে, সব লড়াইয়েই বিজয়ী একজনই, মেসি।