সরকার নির্ধারিত সংগ্রহমূল্যের চেয়ে বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় সরকারকে চাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে চুক্তিবদ্ধ চালকল মালিকদের ভাষ্য।
চলতি বছর সরকার প্রতি কেজি মোটা চালের সংগ্রহমূল্য ঠিক করেছে ৩৪ টাকা। আর রংপুরের পাইকারি ও খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৫ টাকায়।
তবে বাজারমূল্য সরকার নির্ধারিত মূল্যের নিচে নামলে চাল সরবরাহ করা করা সম্ভব হবে বলে জানান তারা।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহজাহান ভুঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ২ মে থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩২০ জন চালকল মালিক চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
খোলাবাজারে প্রতিকেজি মোটা চাল ৪৪-৪৫ টাকায় বিক্রি হওয়ার কারণে তারা চাল সরবরাহে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বলে মনে করেন শাহজাহান ভুঁইয়া।
রংপুরের সবচেয়ে বড় চালের মোকাম মাহিগঞ্জের চালকল মালিক মনিরুজ্জামান চৌধুরী। তিনি ৩০ মেট্রিক টন চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
চাল না দেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ধানের দাম বেশি হওয়ায় চালের দাম বেড়ে গেছে। প্রতি কেজি মোটা চালের উৎপাদন খরচ পড়ছে ৪০-৪১ টাকা। মুনাফা ধরে চালকল মালিকরা বিক্রি করছেন ৪৪-৪৫ টাকা কেজি দরে।
“খোলাবাজারে চাল বিক্রি করলে তো মুনাফা বেশি পাওয়া যাচ্ছে। সরকারি গুদামে চাল দিয়ে লোকসান গুণতে যাব কেন?”
“তবে বাজারমূল্য সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে নিচে নেমে এলে চাল দেওয়া সম্ভব হবে।”
একই অভিমত দেন জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আবুল কাশেম।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, চলতি বোরো চাল সংগ্রহ অভিযানে রংপুরের আট উপজেলায় ১৭ হাজার ৬৪৮ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চুক্তিবদ্ধ চালকল মালিকদের কাছ থেকে এ চাল সংগ্রহ করা হবে। ২ থেকে ২০ মে ছিল চালকল মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করার সময়সীমা।
“২০ মে পর্যন্ত ৩২০ জন চালকল মালিকের সঙ্গে ৪ হাজার ৯০৫ মেট্রিক টন চাল সরবরাহের চুক্তি হয়েছে। চালকল মালিকরা আশানুরূপ সাড়া না দেওয়ায় চুক্তি সময়সীমা ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সময় বৃদ্ধি করা হলেও নতুন করে আর কেউ চুক্তিবদ্ধ হয়নি।”
পহেলা মে শুরু হওয়া সংগ্রহ অভিযান ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত চলবে বলে জানান খাদ্য কর্মকর্তা শাহজাহান।