পা দিয়ে লিখে পাঁচে পাঁচ

পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেয়ে চলেছে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বিউটি আক্তার; বিষয়টি ওই এলাকায় বিশেষ উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।

মোমেন মুনি জয়পুরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2017, 09:06 AM
Updated : 5 May 2017, 09:40 AM

উপজেলার শিবপুর গ্রামের বায়েজিদ হোসেনের মেয়ে বিউটি শ্যামপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক একরামুল ইসলাম উজ্জ্বল জানান, বিউটি সব পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে আসছে।

“প্রাথমিক সমাপানী ও জেএসসি পরীক্ষায়ও বিউটি পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এসএসসিতে ভালো ফল করে মানুষকে একেবারে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এলাকার সবাই এখন এটাই আলোচনা করছে।”

বিউটি নিজেকে কখনও প্রতিবন্ধী মনে করেনি জানিয়ে এই শিক্ষক বলেন, “তার মধ্যে লেখাপড়ার প্রতি প্রবল ইচ্ছাশক্তি লক্ষ করেছি। নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকত সে। সহশিক্ষামূলক সব কার্যক্রমেও তার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল।

“ইচ্ছা থাকলে একজন মানুষ অনেক কিছু করতে পারে,” এভাবেই বিউটি তার মনের দৃঢ়তা প্রকাশ করে।

ভবিষ্যতে বিউটি একজন আদর্শ শিক্ষক হতে চায়।

দুই ভাইবোনের মধ্যে বিউটি ছোট। তার বড় ভাই রহমান নিজ চেষ্টায় স্নাতক পাস করে বগুড়ায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন।

বিউটির বাবা বায়েজিদ হোসেন একজন দরিদ্র বর্গা চাষী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “প্রতিবন্ধী শিশুরা বাবা-মায়ের জন্য যে কত বড় দুশ্চিন্তা, তা শুধু ভুক্তভোগীরাই জানে।

“জন্ম থেকেই মেয়েটির হাত নেই। তবে তার অদম্য ইচ্ছাশক্তির কাছে পরাজিত হয়েছে প্রতিবন্ধিতার সব বাধা।”

বিউটির জন্য তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

“সব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে আমার বিউটি মানুষের মতো মানুষ হোক, আপনারা এই দোয়া করবেন,” কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর এই বাবা।

বিউটি ‘সাবলীল ও সুন্দর আচরণের অধিকারী’ বলে জানিয়েছেন তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকাম উদ্দীন আকন্দ।

বিউটির সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য এই শিক্ষক সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।