আবার মেয়রের দায়িত্বে আরিফুল

দায়িত্বে ফেরার তিন ঘণ্টার মধ্যে ফের বরখাস্ত হওয়ার পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে আবারও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়রের চেয়ারে ফিরলেন আরিফুল হক চৌধুরী।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2017, 10:50 AM
Updated : 6 April 2017, 10:51 AM

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে পৌঁছলে কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা আরিফুলকে স্বাগত জানান।

এর আগে রোবাবার বেলা ১১টার দিকে নগর ভবনে গিয়ে মেয়রের দায়িত্ব নেন আরিফুল। এর তিন ঘণ্টার মাথায় ২০০৪ সালের ২১ জুন সুনামগঞ্জে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বোমা হামলা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামী হওয়ায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

দ্বিতীয় দফা সাময়িক বরখাস্তের এ আদেশ পরদিন হাই কোর্ট স্থগিত করে দেয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে এবং বৃহস্পতিবার সেই আবেদন প্রত্যাহার করায় আরিফুল পুনরায় মেয়রের দায়িত্ব পান।

দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি বলেন, “আদালতের নির্দেশে চেয়ারে বসতে পেরেছি এটা ভাল লক্ষণ। আশা করি জনপ্রতিনিধিদের হয়রানিমুক্ত রাখতে সরকার উদ্যোগ নেবে।

“যে আইনের বলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বারবার হয়রানি করা হচ্ছে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে হয়। বিষয়টি নিয়ে নীতি নির্ধারকরা ভাববেন আশা করছি।”

আরিফুল বলেন, “দায়িত্ব পালনে আমি সকলের সহযোগিতা চাই। আমি জনগণকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলাম, তা পূরণে কাজ করতে চাই।”

বিনা দোষে তাকে ২৭ মাস জনগণের কাছ থেকে দূরে রাখা হয়েছিল দাবি করে তিনি বলেন, “নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে। সবকিছু ভুলে গিয়ে এখন অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে চাই।”

এখন শঙ্কামুক্ত কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, “যেহেতেু মেয়রদের বরখাস্তের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী জানেন না, তাই এখনও শঙ্কামুক্ত নই। আশা করি প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন।”

২০১৩ সালে ১৫ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী।

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া।

ওই হত্যাকাণ্ডে প্রায় ১০ বছর পর তৃতীয় সম্পূরক অভিযোগপত্রে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুর হক চৌধুরীকে আসামি করা হয়। ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর কিবরিয়া হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হলে ২৮ ডিসেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।

৩০ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের একটি আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠায়। ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে সিলেটের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।

চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে সাময়িক বরখাস্ত আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন আরিফুল। রিট আবেদনের শুনানি শেষে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ গত ১২ মার্চ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে হাই কোর্ট। পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দিয়ে হাই কোর্টের আদেশ বহাল রাখে।

কারাগারে থাকা অবস্থায় ২০০৪ সালের ২১ জুন সুনামগঞ্জে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বোমা হামলার ঘটনায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।