মাঠে কাপড় দিয়ে তৈরি জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র

নীলফামারীর জলঢাকা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের অভাবে মাঠে কাপড় দিয়ে বানানো অস্থায়ী কক্ষে জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে চার শতাধিক শিশু।

বিজয় চক্রবর্তী কাজল নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2016, 05:25 PM
Updated : 7 Nov 2016, 05:25 PM

চারদিকে কাপড় ঘেরা এবং উপরে কাপড়ের ছাদ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে জেএসসি পরীক্ষার কয়েকটি কক্ষ। এখানে বসে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে তাদের।

রাতের কুয়াশায় ভিজে যাওয়া বেঞ্চে বসা ও পরীক্ষার খাতা রাখায় শিশুরা যেমন বিড়ম্বনায় পড়ছে, তেমনি রোদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরমের ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে।

বিদ্যালয়টির ভারপাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব এ কে এম ওয়ারেছ আলী বলেন, এবার তাদের বিদ্যালয়ে স্থাপিত কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক হাজার ৬৬১ জন। প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষের তুলনায় পরীক্ষার্থী বেশি হওয়ায় ডেকোরেটরের সাহায্যে বিদ্যালয়ের মাঠে  প্যান্ডেল করে অস্থায়ীভাবে সাতটি কক্ষ করে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে।

এই সাতটি অস্থায়ী কক্ষে অন্তত সাড়ে চারশ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা ও দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ হোসেন কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছেন। তারা ভবিষ্যতে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ বর্ধিতকরণের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান ওয়ারেছ আলী।

কেন্দ্রে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তিনি।

জলঢাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তর থেকে জানা যায়, উপজেলায় পাঁচটি কেন্দ্রের মধ্যে একটিতে জেডিসি এবং অপর চারটিতে জেএসসি পরীক্ষা হচ্ছে। উপজেলায় জেএসসি পরীক্ষার্থী পাঁচ হাজার ৮১১ এবং জেডিসি পরীক্ষার্থী এক হাজার ১৭ জন।

এর মধ্যে জলঢাকা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে রয়েছে এক হাজার ৬৬১ জন।

সোমবার জলঢাকা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অস্থায়ী কক্ষে পরিদর্শক ফরিদা বেগম বলেন, কাপড়ের তৈরি ছাদ আর চারিদিক ঘেরা এই অস্থায়ী পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালে সূর্যের প্রচণ্ড তাপে শরীরর যেন পুড়ে যাচ্ছে।

“প্রচণ্ড গরমে টানা তিন ঘণ্টা এখানে কাটানো খুবই কষ্টকর। পরীক্ষার্থীর সাথে আমরাও ভীষণ অস্বস্তিতে আছি।”

অস্থায়ী কক্ষের পরীক্ষার্থী সামিউল ইসলাম বলে, কাপড় দিয়ে ঘেরা এসব কক্ষের উপড়ে ছাদ না থাকায় রাতে কুয়াশায় বেঞ্চ ভিজে থাকে। সকালে পরীক্ষা শুরুর সময় এসব ভেজা বেঞ্চে খাতা রাখলেই ভিজে যায়। আর পরীক্ষা শুরুর পর বেলা যত বাড়ে সূর্যের তাপও তত বাড়ে।

“প্রচণ্ড গরম লাগে, ঘামে গা ভিজে যায়, খাতায় লিখতেও সমস্যা হয়।”

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফ-উজ-জামান সরকার বলেন, কেন্দ্রটিতে শ্রেণিকক্ষের চেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে প্রতিটি উপজেলায় আলাদা পরীক্ষা কমপ্লেক্স নির্মাণ করা গেলে এ সমস্যা থাকবে না, পাশাপাশি পরীক্ষা চলাকালে কোনো বিদ্যালয়ের পাঠদানেও ব্যঘাত ঘটবে না।