কয়েকশ ব্যবসায়ী এসব ভবনে ব্যবসাবাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। ভবনগুলো ধসে যে কোনো সময় বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে বলে ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা।
পৌর কর্তৃপক্ষ নোটিশ টানিয়ে দায় সারলেও ব্যবসায়ীরা এসব ভবন ভেঙে নতুন করে নির্মাণের দাবি জানান।
পৌর প্রকৌশল বিভাগ থেকে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে পৌর কর্তৃপক্ষ মাগুরা শহরের চৌরঙ্গী এলাকায় দুইটি তিন তলা, জামে মসজিদ রোড ও জুতাপট্টিতে দোতলা দুইটি বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করে।
তখন থেকে এসব ভবনে প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় দুই শতাধিক ব্যবসায়ী দোকান বরাদ্দ নিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। তৃতীয় তলা ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন তাদের অফিস স্থাপন করেছে।
মাহফুজুর রহমান মন্টু বলেন, নির্মাণের ৫-৬ বছরের মাথায় ভবনের মূল আরসিসি কলাম, ছাদ ও সিঁড়ির বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। ছাদসহ অধিকাংশ জায়গা থেকে বালু, খোয়া ভেঙে পড়তে থাকে। প্লাস্টার ভেঙে পড়ে কয়েকজনের আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
মিথুন শেখ বলেন, বিষয়টি তারা পৌর কর্তৃপক্ষকে বার বার জানালেও কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে তারা ব্যবসা করছেন।
এ অবস্থায় চলতে থাকলে ভূমিকম্প কিংবা ভূমিকম্প না হলেও ভবন ধসে প্রাণহানির আশংকা করছেন তারা।
জেলা বণিক সমিতির আহবায়ক মুন্সি হুমায়ন কবীর রাজা বলেন, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারসহ ঠিকাদারের নানা ত্রুটির কারণে পৌরসভার সব মাকের্টের অবস্থা শোচনীয়।
নির্মাণের পর ২০ বছর পার হলেও জরাজীর্ণ ভবনগুলো মেরামত করা হয়নি অভিযোগ করে তিনি বলেন, প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে শত শত ব্যবসায়ী এখানে ব্যবসা করছেন।
চৌরঙ্গী পৌর মাকের্টে জেলা বণিক সমিতির অফিস ছিল জানিয়ে হুমায়ন কবীর রাজা বলেন, প্রাণভয়ে তারা সে অফিসে আর যান না। ব্যবসায়ীদের জীবন বাঁচাতে পৌর মেয়রের কাছে এ বিয়য়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী হেসেন মুক্তা বলেন, ঝুঁকির কারণে প্রাণভয়ে চৌরঙ্গী পৌর মাকের্টে তাদের অফিস পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
একই ফ্লোরে জেলা জাসদের কার্যালয় থাকলেও ঝুঁকি নিয়ে তারা অফিস করছেন।
জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক সমীর চক্রবর্তী বলেন, সামর্থ্য না থাকায় মৃত্যুর মাথায় করে তারা সেখানে অফিস করছেন।
কিন্তু ব্যবসায়ী বা ব্যবহারকারীরা বিষয়টি আমলে নেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নতুন পৌর মেয়র খুরশিদ হায়দার টুটুল বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরবর্তী অর্থবছরে ঝুঁকিপূর্ণ মাকের্টগুলো ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
নির্মাণ ত্রুটির বিষয়ে তিনি বলেন, “নির্মাণ ত্রুটি তো আছেই। এছাড়া নিয়মিত সংস্কার না করাও এর অন্যতম কারণ।”