বগুড়া পৌরসভায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

সতেরো কোটি টাকা বকেয়া থাকায় বগুড়া পৌর ভবন, সড়ক বাতি ও কয়েকটি পানির পম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 June 2016, 12:45 PM
Updated : 27 June 2016, 12:45 PM

এ কারণে কয়েক হাজার পানির গ্রাহক দুর্ভোগে পড়েছেন। আতংকে রয়েছেন আরও কয়েক হাজার গ্রাহক।

সড়ক বাতির লাইন কাটায় অন্ধকারে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা করছে এলাকাবাসী।  

গ্রাহকরা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান আশা করছেন।  

সোমবার সকাল থেকে পৌরসভা ভবনসহ শহরের জলেশ্বরীতলা, শেরপুর রোড, মালতিনগর, রহমাননগর, নূর মসজিদ লেন, এস চ্যাটার্জি লেন, বকশীবাজার, জহুরুলনগর, বাদুরতলা, নামাজগড়, চকসূত্রাপুর, প্রেস পট্টি, ঝাউতলা, বড়গোলা, দত্তবাড়ী, কাটনারপাড়া করনেশন স্কুল, হাকিরমোড় ও শিববাটি এলাকার সড়ক বাতির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে দেখা যায়। 

একই সঙ্গে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত পৌরসভার ১৪টি পানির পাম্পের মধ্যে পাঁচটির বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়।

বগুড়া বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তোফাজ্জল হোসেন প্রামাণিক বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে বলেন, তার বিভাগেই বকেয়া রয়েছে সাত কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

“বার বার বকেয়া পরিশোধের জন্য পৌর মেয়রকে তাগাদা দিলেও কোনো ফল হয়নি। জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে তাকে বকেয়া পরিশোধের জন্য বলা হলেও তিনি কর্ণপাত করেননি।”

পর্যায়ক্রমে শহরের বনানী থেকে মাটিডালী ৯ কিলোমিটার ও সাতমাথা জিরো পয়েন্ট থেকে তিনমাথা পর্যন্ত তিন কিলোমিটারসহ অন্যান্য সড়ক বাতি এবং বাকি আরও নয়টি পানির পাম্পের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে জানান তিনি।

বগুড়া বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে বলেন, “বিদ্যুৎ বিল আদায়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চাপ সৃষ্টি করছেন। মেয়র বিদ্যুৎ বিল কীভাবে দেবেন এ ব্যাপারে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে একটা সমঝোতায় আসতে পারেন মেয়র।”

কিন্তু তিনি প্রায় ১৫ বছর যাবত এ বিষয়টি আমলেই নিচ্ছেন না। তবে মাঝে মাঝে অল্পকিছু বিল দিয়েছেন। বকেয়ার কারণে বাধ্য হয়েই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হচ্ছে, বলেন তিনি।

বগুড়া পৌরসভার মেয়র এ কে এম মাহবুবর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে বলেন, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে গেলে পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতনভাতা পরিশোধ করা সম্ভব হবে না।

“এছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগ অতিরিক্ত বিল করেছে। পৌরকরও লক্ষ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে।” 

তিনি জানান, পৌরসভার ১৪টি পানির পাম্পের গ্রাহক রয়েছেন তিন হাজার ২০০। ভোক্তার সংখ্যা রয়েছে প্রায় ২০ হাজারের মতো। এর মধ্যে পাঁচটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক হাজার ভোক্তা।

ঈদকে সামনে রেখে এ পদক্ষেপ নেওয়া ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জলেশ্বরীতলা এলাকার ব্যবসায়ী রন্জু মিয়া বলেন, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় রাস্তা অন্ধকার থাকবে। এই অভিজাত এলাকার বিপনী বিতানগুলোতে রাত ১টা পর্যন্ত কেনাকাটা হয়। অন্ধকার থাকলে ক্রেতাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।

“এ ব্যাপারে পৌর মেয়রকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। কেননা আমরা পৌরবাসী ট্যাক্স দিই নাগরিক সুবিধার জন্য। আমাদের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।”

সেউজগাড়ি এলাকার আব্দুর রউফ বলেন, পাম্পের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় গোসল, রান্না-বান্না বন্ধ হয়ে গেছে। পৌর কর্তৃপক্ষের উচিত জনগণের সুবিধার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে বসে বিষয়টি সুরাহা করা।