সরকার উৎখাতে ব্যর্থ হয়ে গুপ্তহত্যা: প্রধানমন্ত্রী

সরকার উৎখাতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি-জামায়াত এখন গুপ্তহত্যায় মেতেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2016, 10:11 AM
Updated : 30 April 2016, 09:22 PM

শনিবার গোপালগঞ্জ সদরের ঘোনাপাড়ায় নবনির্মিত ‘শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে’ এক সুধী সমাবেশে তিনি পদ্মাসেতু নিয়েও বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রে থাকার কথা উল্লেখ করেন। 

সমাবেশের আগে তিনি বিশ্বমানের অত্যাধুনিক এ হাসপাতালের উদ্বোধন করেন ও মোনাজাতে অংশ নেন।

সকাল সোয়া ১০টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে প্রথমেই বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা।

পরে তিনি কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত চাঁপাইল ব্রিজ, টুঙ্গিপাড়া প্রধান ডাকঘর, গোপালগঞ্জ জেলা শিশু একাডেমি কমপ্লেক্স।

এছাড়া তিনি শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ, গোপালগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, গোপালগঞ্জ ১০ কিলোওয়াট এফএম রেডিও স্টেশন, গোপালগঞ্জ-কাশিয়ানী-গোবরা নতুন রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্প, টুঙ্গিপাড়া, মুকসুদপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ভিত্তিস্থাপন করেন।

পরে সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাম্প্রতিক কিছু হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, “সরকার উৎখাত করতে না পেরে বিএনপি-জামায়াত এখন গুপ্তহত্যা করছে। মানুষ পুড়িয়ে মারা ও ধ্বংস ছাড়া তারা কিছুই করতে পারে না।

“বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে গির্জা, প্যাগোডা, মন্দির, মসজিদে বোমা হামলা হয়েছে। তারা দেশে উন্নয়ন চায় না, এটাই বাস্তবতা। জাতির পিতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, আমরাই দেশে উন্নয়ন করেছি, করে যাচ্ছি।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দুর্নীতি করে ভাগ্য গড়তে আসিনি। পদ্মা সেতু নিয়ে আমাদের এ কলঙ্ক দেওয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তাই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করছি। বিএনপি-জামায়াত পদ্মাসেতু নিয়ে যদি ষড়যন্ত্র না করত, তবে এ সেতুর কাজ এতদিনে আরও এগিয়ে যেত।

“আমি জাতির পিতার কন্যা। রাজনীতি করছি নিজের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য নয়, মানুষের কল্যাণে। বাকিটা জীবন সেটাই করে যাব। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য দেশের সুষম উন্নয়ন করা,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।

স্বাস্থ্যখাতে তার সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “এখাতে উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আরও তিনটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ করছি। এছাড়া প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে। গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি দিয়েছিলাম, সে অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি। এখন এমন সময় এসেছে যেখানে নার্সরাও পিএইচডি করতে পারবেন, আমরা সে সুযোগ করে দিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায়-জেলায় সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি। উচ্চ শিক্ষাপর্যন্ত মেধাবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি ১ কোটি ৭০ লাখ ছাত্রছাত্রীকে। আজকে বই-খাতা কিনতে হয় না, আমরা সবই দিচ্ছি।

নতুন প্রতিষ্ঠিত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মানব সেবায় অবদান রাখা আশা প্রকাশ করে তিনি পরে আরেকবার এসে এখানে চোখ পরীক্ষা করাবেন বলেও জানান।

সমাবেশে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য গোপালগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন।

বিকালে প্রধানমন্ত্রী নিজ নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়া উপজেলা সদরের শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করবেন।

সেখানে ১০০টি প্রাথমিক ও ১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ এবং মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর বিতরণ শেষে কর্মীসভায় যোগ দেবেন।

সন্ধ্যায় ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।