শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কুণ্ডেরচর ইউনিয়নে ‘অসামাজিক কার্যকলাপের’ ধুয়া তুলে ‘সামাজিক বিচারের’ নামে এক তরুণ ও এক কিশোরীকে প্রকাশ্যে জুতাপেটা এবং জুতার মালা পরিয়ে ঘোরানোর অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
Published : 21 Feb 2016, 10:57 PM
দুই সপ্তাহ আগে সংঘটিত এই ঘটনাটি শনিবার ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তা নিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
ওই ইউপি সদস্যের এই অন্যায়ের বিচার হওয়া উচিত বলে কুণ্ডেরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দিন বেপারী মন্তব্য করেছেন। ঘটনাটি শোনার পর তদন্ত করে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষও।
নির্যাতনের শিকার কুণ্ডেরচর ইউনিয়নের আবদুল মান্নান মল্লিককান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী এবং ঘাটকুল আবদুল মন্নান মল্লিককান্দি গ্রামের এক তরুণ (১৮)।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানান, অপ্রাপ্তবয়স্ক ওই তরুণ ও কিশোরী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় হাসাইলবাড়ি এলাকায় তাদের আটক করা হয়। এরপর আবদুল মান্নান মল্লিককান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে সবার সামনে তাদের জুতাপেটা করা হয়।
এর ভিডিও ধারণকারী ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, স্থানীয় সুলতান মল্লিক ও ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কামাল হোসেন তাদের উপর এই নির্যাতন চালান। প্রথমে জুতা দিয়ে পেটানোর পর জুতার মালা পরিয়ে তাদের বিদ্যালয়ের মাঠে ঘোরানো হয়।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হাসেমকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
ইউপি সদস্য কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপ করার কারণে তাদের সামাজিকভাবে বিচার করা হয়েছে।”
তবে তারা কী ধরনের ‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ করেছিল, সে বিষয়ে এই জনপ্রতিনিধি কিছু বলেননি।
নির্যাতিত ওই তরুণ ও কিশোরীর পরিবার ভিডিও ধারণকারীকে বলেছে, ইউপি সদস্য কামাল তাদের বাড়ি থেকে দূরে কোথাও যেতে দিচ্ছেন না বলে তারা মামলা করতে পারছেন না।
বিষয়টি জানানোর পর ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন বেপারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওরা (তরুণ-কিশোরী) কোনো অন্যায় করলে প্রশাসনে না দিয়ে আইন হাতে নিয়ে অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছে। এটা চরম অন্যায়, এ ঘটনার বিচার হওয়া উচিত।”
জাজিরা থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাটি আমি সাংবাদিকদের কাছে শোনার পর তদন্তের জন্য পুলিশ পাঠিয়েছি। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”