স্থানীয় সময় শুক্রবার নিউ ইয়র্কের ওই বিক্ষোভ থেকে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কঠোর সমালোচনা করা হয়।
ওইদিন জুম্মার নামাজের পর ক্যালিফোর্নিয়ার বেকার্সফিল্ড সিটির ডাউন টাউন মসজিদে সেন্টুর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাকে স্থানীয় হিলক্রেস্ট গোরস্থানে দাফন করা হয়। জামালপুরের সন্তান মুস্তাফিজের জানাজায় বিপুল সংখ্যক প্রবাসীরা অংশ নেন।
গত ১২ জুন স্থানীয় সময় ভোর ৫টায় ক্যালিফোর্নিয়ার বেকার্সফিল্ড সিটিতে সদ্য কেনা বাসার ড্রাইভওয়েতে মুস্তাফিজের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান তার স্ত্রী।
জানাজা ও দাফন শেষে নিউ ইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে ডাইভার্সিটি প্লাজায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভানেত্রী ও জামালপুর জেলা সমিতির সভাপতি মোর্শেদা জামান বলেন, “প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও বাংলাদেশিরা আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে সেন্টুর মত অসহায় মৃত্যু আর কারো হয়নি।
“রাতের শিফটে কাজ শেষে ভোরে বাসায় ফিরে এমন করুণ মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না।”
আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি লাবলু আনসার বলেন, “নৃশংসভাবে হত্যার পর ৫দিন অতিবাহিত হলো, এখন পর্যন্ত ঘাতককে শনাক্ত করাই সম্ভব হয়নি, গ্রেপ্তার দূরের কথা। এভাবেই বাংলাদেশি-আমেরিকানরা বিমাতাসুলভ আচরণের শিকার হচ্ছেন।”
“এছাড়া অর্ধশতাধিক বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর মধ্যে একমাত্র সেন্টুর ঘাতকই এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি। অর্থাৎ ক্যালিফোর্নিয়ার পুলিশ এ নিয়ে আন্তরিক অর্থে সোচ্চার হয়নি বলে মনে করার যথেষ্ঠ কারণ রয়েছে।”
একাত্তরের সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সদস্য-সচিব রেজাউল বারী বলেন, “এখন সময় খারাপ। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। প্রশাসনকে জানিয়ে দিতে হবে যে, বাঙালিরাও ভোটে বড় একটি শক্তি।”
নিহত মোস্তাফিজুর রহমান (৪৮) ডাইভারসিটি ভিসা-ডিভি লটারিতে জয়ী হয়ে দুই ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীসহ ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস সিটি থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে বেকার্সফিল্ড সিটিতে সম্প্রতি বাড়ি কেনার পর মাসখানেক আগে পরিবার নিয়ে মোস্তাফিজ সেখানে উঠেছিলেন।
সমাবেশে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের নেতা আশরাফুজ্জামান বলেন, “ছোট ছোট তিনটি সন্তান এবং স্ত্রী রয়েছে সেন্টুর। তিনি নিরাপদ জীবন-যাপনের মধ্য দিয়ে সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে সাত বছর আগে এসেছিলেন আমেরিকায়।
যুক্তরাষ্ট্র ‘ল সোসাইটি’র নেতা আইনজীবী মোহাম্মদ আলী বাবুল বলেন, “যেখানেই আক্রমণ হবে, সেখানেই সকলকে সোচ্চার হতে হবে। অন্যথায় এহেন পরিস্থিতি চলতেই থাকবে।”
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের শিল্প বিষয়ক সম্পাদক ও জামালপুর জেলা সমিতির সাবেক সভাপতি ফরিদ আলম বলেন, “ঘাতকরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের রাজপথে সোচ্চার থাকতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের আহ্বায়ক তারেকুল হায়দার চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং কন্সাল জেনারেলের মার্কিন প্রশাসনের সাথে দেন-দরবারের প্রয়োজন রয়েছে এমন হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও ঘাতকদের বিচার নিশ্চিতকল্পে।”
সমাবেশে আরও ছিলেন সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের যুক্তরাষ্ট্র শাখার আহ্বায়ক রাশেদ আহমেদ, কম্যুনিটি লিডার ফিরোজ মাহমুদ এবং কুইন্স যুবলীগের সভাপতি নান্টু মিয়া।
উপস্থিত সবার হাতেই ছিলো হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং ‘হেইট ক্রাইম বিরোধী’ পোস্টার, প্ল্যাকার্ড। এ সময় অন্যান্য অভিবাসীরাও সেন্টুর ঘাতককে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবির সাথে সংহতি প্রকাশ করেন।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |