সিডনিতে প্রতিবন্ধী শিশু নিয়ে বিপাকে বাংলাদেশি পরিবার

কন্যাশিশু প্রতিবন্ধী হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী অভিবাসন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এক বাংলাদেশি চিকিৎসক দম্পতি। আর এ থেকে উদ্ধার পেতে তারা 'সাইন ইন' ক্যাম্পেইনে সবাইকে অংশ নেওয়ার মানবিক আবেদন জানিয়েছেন।    

নাইম আব্দুল্লাহ, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2017, 12:13 PM
Updated : 17 Feb 2017, 11:54 AM

'ডেভেলপমেন্টাল ডিলে' রোগে আক্রান্ত ওই দম্পতির শিশুটির নাম সুমাইয়া। তার বয়স ১৫ বছর। মা নাসরিন হক এবং বাবা শফিকুল ইসলাম চিকিৎসক।

শিশুটির মা নাসরিন হক চৌধুরী জানান, 'ডেভেলপমেন্টাল ডিলে' রোগ ধরা পড়ায় তার মেয়ের শরীর ও মনের স্বাভাবিক বৃদ্ধি কিছুটা ব্যাহত হয়। অস্ট্রেলিয়ার সরকার মনে করছে, সুমাইয়ার চিকিৎসার জন্য দেশটির ব্যয় বাড়বে। আর সে কারণে অস্ট্রেলিয়ায় সুমাইয়ার স্থায়ী অভিবাসনের আবেদনপত্র বাতিল হয়ে গেছে।

নাসরিন হক জানান, ২০০৯ সালে হাঙ্গেরি থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় আসা এই দম্পতি ২০১০ সালে স্থায়ী অভিবাসনের জন্য আবেদন করেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় পরিবারের বাকি তিন সদস্য উত্তীর্ণ হলেও আটকে যায় সুমাইয়া। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ সুমাইয়া অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী অভিবাসনের অনুমোদন বাতিল হয়ে যায়। পরিবারটি বর্তমানে সিডনিতে স্পেশাল ক্যাটাগরি ভিসায় অবস্থান করছে।

এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনায় সুমাইয়ার পরিবার রিভিউ পিটিশনসহ অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন মন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছে। এই আবেদন বিবেচিত না হলে সুমাইয়াকে তার বাবার কর্মস্থল হাঙ্গেরিতে চলে যেতে হবে।

সুমাইয়ার মা নাসরিন হক দাবি করেছেন, সুমাইয়া সম্পূর্ণ স্বাবলম্বী। সে প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজকর্ম, কথা বলা ও যোগাযোগ করতে সক্ষম। তার জন্য বাড়তি কোনো চিকিৎসা সেবা নেওয়ার দরকার হয় না। শুধুমাত্র আলাদা রকমের স্কুলে পড়তে হয়।

সুমাইবার বাবা জানান, সম্প্রতি তিনি অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করার প্রস্তাব পেয়েছেন। কিন্তু স্থায়ী অভিবাসনজনিত অনিশ্চয়তার কারণে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় আসতে পারছেন না। অস্ট্রেলিয়ার দীর্ঘদিন থাকার কারণে এখানে সুমাইয়ার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে দ্রুত। এ অবস্থায় স্থায়ী ভিসা না পেলে সুমাইয়াকে নিয়ে হাঙ্গেরিতে ফিরে যেতে হবে তাকে। নতুন পরিবেশ, নতুন ভাষা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সাথে খাপ খাওয়াতে সুমাইয়ার সমস্যা হবে বলে মনে করছেন তিনি। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় তার পরিবারের অন্য সদস্যদের সান্নিধ্য থেকে দূরে গেলে সুমাইয়ার অসুবিধা হতে পারে।

শিশু সুমাইয়ার নানা-নানিসহ বেশিরভাগ স্বজনেরাই সিডনি প্রবাসী। সুমাইয়ার একমাত্র ভাই সাকির ভূইয়া (১৪) সিডনির একটি হাই স্কুলে পড়াশোনা করে। ইতোমধ্যে ছাত্র হিসেবে সে যথেষ্ঠ কৃতিত্বের পরিচয় দিচ্ছে বলে পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে।  

শিশু সুমাইয়াকে তার পরিবারের সঙ্গে রাখার জন্য অনলাইনে পিটিশন লিঙ্কে 'সাইন ইন' চলছে। সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার মানুষকে 'সাইন ইন'

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ, আড্ডা, আনন্দ বেদনার গল্প, ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!