প্রবাসে মৃত্যু, প্রবাসেই রয়ে যান যে কথাশিল্পী

বাংলা কথাসাহিত্যে এক সময়ের সাড়া জাগানো উপন্যাস 'কাশবনের কন্যা'র লেখক শামসুদ্দীন আবুল কালামের মৃত্যুবার্ষিকী ১০ জানুয়ারি ।

মাঈনুল ইসলাম নাসিম,ইতালি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2017, 11:30 AM
Updated : 10 Jan 2017, 11:40 AM

১৯৫৯ থেকে ইতালিতে ৩৮ বছরের প্রবাস জীবনযাপন করেছিলেন তিনি।  ১৯৯৭ সালের ১০ জানুয়ারি রাজধানী রোমে এক অ্যাপার্টমেন্টে তিনি মারা যান।

তার লাশ উদ্ধারের পর কোন দলিল বা ধর্মীয় পরিচয় এমনকি আত্মীয় বা নিকটজন কারো কোন সন্ধান পায়নি স্থানীয় পুলিশ। অতঃপর ‘বেওয়ারিশ’ লাশ হিসেবে তাকে রোমের এক প্রান্তে ‘প্রিমাপর্তা’ এলাকায় জানাজা ছাড়াই খ্রিস্টান গোরস্থানে সমাহিত করা হয়।

পাশেই মুসলিম গোরস্থান থাকলেও ‘রক্ত-সম্পর্কীয়’ নিকটজনের অনুমতি না পাওয়ায় তার সমাধি আজও স্থানান্তর করা হয়ে ওঠেনি। মৃত্যুর পরও প্রবাসে রয়ে গেলেন বাংলাদেশের এই কথাশিল্পী।

শামসুদ্দীন আবুল কালামের জন্ম ১৯২৬ সালে বাংলাদেশের বরিশালে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ইতালি থেকে জনমত সৃষ্টি করে তিনি বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে অবদান রেখেছিলেন।

কলেজ জীবনে তিনি নিখিল বঙ্গ ছাত্র কংগ্রেসের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য ছিলেন এবং আরএসপি পার্টির সঙ্গে যুক্ত থেকে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন।

দেশভাগের পর ১৯৫০ সালে শামসুদ্দীন ঢাকায় এসে প্রথমে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান সরকারের প্রচার ও তথ্য দপ্তরে সহকারী পরিচালক পদে যোগ দেন। পরে ওই অফিসেই 'মাহে নও'পত্রিকার সম্পাদক হন।

ষাটের দশকে শামসুদ্দীন আবুল কালাম রোম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব লিটারেচার ডিগ্রি অর্জন করেন। সত্তরের দশকে কর্মরত ছিলেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার রোম সদর দপ্তরে এবং ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে।

তার উপন্যাসগুলো হল- কাশবনের কন্যা (১৯৫৪), দুই মহল (১৯৫৫), কাঞ্চনমালা (১৯৫৬), জীবন কাণ্ড (১৯৫৬), জায়জংগল (১৯৭৮), সমুদ্রবাসর (১৯৮৬), নবান্ন (১৯৮৭), যার সাথে যার (১৯৮৬), মনের মতো ঠাই (১৯৮৫), কাঞ্চনগ্রাম (১৯৯৭)

ভাষা আন্দোলনের বছর ১৯৫২ সালে প্রকাশিত হয় শামসুদ্দীন আবুল কালামের গল্প সংগ্রহ ‘অনেক দিনের আশা’। অন্যান্য গল্পের বই-ঢেউ (১৯৫৩), পথ জানা নেই (১৯৫৩), দুই হৃদয়ের তীর (১৯৫৫) ও শাহের বানু (১৯৫৭)।

সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ১৯৯৪ সালে ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার’ লাভ করেন।

লেখক: ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশি

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ, আড্ডা, আনন্দ বেদনার গল্প, ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!