জার্মানিতে ৪০ বছর: প্রথম দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস

গত ক’দিন আগে বার্লিনের তাপমাত্রা ছিল দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। বেশ ঠাণ্ডা। তবে শীতের দেশ হিসেবে এই তাপমাত্রা খুব বেশি ঠাণ্ডা নয়।

শাহ আলম শান্তি,জার্মানির বার্লিন থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Dec 2016, 11:50 AM
Updated : 26 Dec 2016, 12:15 PM

এই দুই ডিগ্রি তাপমাত্রার সাথে আমার জীবনের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তাই এই তাপমাত্রা হলেই মনে পড়ে যায় সেই স্মৃতি।

১৯৭৭ সালের ১৩ অক্টোবর, হঠাৎ করেই আমরা চার বন্ধু মিলে রওয়ানা দিলাম জার্মানির পথে। সেলিম, রশিদ, নিলু আর আমি।

তখন তেমন কোন উদ্দেশ্যই ছিল না। কোথায় থাকবো, কি করবো, কতদিন এখানে থাকবো- এসব কেউই সেভাবে ভাবিনি। তরুণ বয়স, কোন রকম প্রতিবন্ধকতার কথা মাথাতেই আসেনি সেদিন।

ঢাকা থেকে ১০ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে প্লেনের টিকেট কেটে নিলাম আমরা। আমদের প্রথম বিরতি ছিল মুম্বাই, তারপর তেহরান ও তাসখন্দ।

মুম্বাই আর তেহরানে বাংলাদেশের মতোই আবহাওয়া। আর তাসখন্দে ছিল ঠাণ্ডা, তবে খুব বেশি না।

তারপর প্লেন উড়ে চললো মস্কোর পথে। ওখানে প্লেন থেকে বাসে উঠে টার্মিনাল পর্যন্ত আসতে হয়েছিল।

বিমান থেকে বের হয়ে সিঁড়িতে নামলাম। ওখানে নেমেই জীবনে প্রথম এই দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস অনুভব করলাম।

আমি পরেছিলাম বাহাদুর শাহ পার্কের পুরনো দোকান থেকে কেনা ওভারকোট। সাথে ছিল পাতলা দেশি সোয়েটার, আর সাধারণ জুতা-মোজা। তাই দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস ঠাণ্ডার ধাক্কা খেয়ে বুঝতে পারলাম, এই শীতের মধ্যে এসব কাপড় যথেষ্ট নয়।

এই স্মৃতি প্রায় ৪০ বছর আগের। তারপর কত হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রার অভিজ্ঞতা হল,তার হিসেব নেই। কিন্তু এই দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। কারণ এই তাপমাত্রার মধ্য দিয়ে আমি জীবনের অন্য এক বাকে এসেছিলাম।

আমার জীবনের থাকার জায়গার যে এই বিশাল পরিবর্তন হবে, তখন সেটা আঁচ করতে পারিনি। তারপরও চলছে জীবন আর পেছনে পড়ে আছে অসংখ্য স্মৃতি।

চলবে...

লেখক:প্রবাসী বাংলাদেশি