দশ বছর আগে বৈধ ভিসাতেই মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন শরীয়তপুরের মোহাম্মদ টিটু। বারবার ভিসা নবায়নের প্রক্রিয়ায় একবার পড়েন দালালের খপ্পরে। তারপরই অবৈধ হয়ে পড়েন সেখানে।
Published : 11 Dec 2016, 08:08 PM
সাড়ে তিন হাজার মালয়েশিয়ান রিংগিট (বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা) খুঁইয়ে সাত বছর ধরে মালয়েশিয়ায় ফেরারী ও অবৈধ জীবন কাটাচ্ছিলেন টিটু।
শেষতক এ মাসের শুরুতে যে বাড়িতে থাকতেন সেখানে তল্লাশি চালায় পুলিশ। গ্রেপ্তার এড়াতে দোতলা থেকে লাফ দিয়ে দুই পা ভেঙে ফেলেন। কিন্তু সুচিকিৎসা পাওয়ার উপায় নেই। পুলিশ ও জেল-জরিমানার ভয়ে কোনরকমে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েই হাসপাতাল ছাড়তে হয়েছে।
এখন টিটু আছেন মালয়েশিয়া প্রবাসী আরেক বাংলাদেশি শ্রমিকের আশ্রয়ে। সেখানে তাকে দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছেন অনেকদিন ধরে মালয়েশিয়া প্রবাসী শ্রমিক রাজবাড়ি জেলার ইদ্রিস।
বৈধ-অবৈধ শ্রমিকদের নিয়ে সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় গড়ে উঠেছে 'বাংলার নতুন সেনা' নামে একটি সংগঠন । ইদ্রিসের পাশাপাশি তারাও রয়েছেন এই আহত শ্রমিকের পাশে। ইদ্রিস নিজেও সংগঠনটির একজন সক্রিয় কর্মী।
চিঠিটিতে উঠে এসেছে 'বাংলার নতুন সেনা' গড়ে ওঠার ইতিহাস, তাদের কার্যক্রম ও উদ্দেশ্য।
সংগঠন গড়ে ওঠার নেপথ্যে
খলিল আকন নামের এক প্রবাসী বাংলাদেশির মালয়েশিয়ায় দুর্ঘটনার মৃত্যুর খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে ছাপা হওয়ার পর থেকে মোবাইল অ্যাপ 'উইচ্যাট'র মাধ্যমে শ্রমিকরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ শুরু করেন।
দুইশ' জন প্রবাসী শ্রমিক ৩৫ রিংগিট করে জমা দিয়ে খলিলের পরিবারের জন্য তোলেন এক লাখ টাকা। সেই টাকা গত ৩০ নভেম্বর খলিলের পরিবারের হাতে তুলে দেয় বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমের প্রবাস পাতার প্রতিনিধিরা।
তিন প্রবাসীকে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে কারামুক্তি
অবৈধ হয়ে পড়ায় জেলে আটক ছিলেন তিন বাংলাদেশি। সম্প্রতি তাদের জন্য ২২ হাজার রিংগিট সহযোগিতা দিয়ে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে নবগঠিত এই সংগঠনের সদস্যরা।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে লেখা চিঠিতে সংগঠনটির প্রধান রাসেল হোসেন রাজু জানান, ২০০ কর্মী ৩৫ রিংগিট করে সহযোগিতা করায় তারা ওই ২২ হাজার রিংগিট দিয়ে বাংলাদেশিদের ছাড় করাতে পেরেছেন।
চিঠির শেষে সংগঠনটির পক্ষ থেকে আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, "প্লিজ আপনারা এগিয়ে আসুন পঙ্গুত্ব বরণ করা শ্রমিকদের সহায়তায়, দেশি-বিদেশি, ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা আমরা গ্রহণ করব এই পঙ্গু শ্রমিকদের সহযোগিতায়।"
প্রবাসী শ্রমিকদের যেকোন ধরনের আইনি, আর্থিক ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করতে চিঠিতে দুইটি ইমেইল অ্যাড্রেস দেওয়া হয়েছে। এগুলো হল- [email protected] এবং [email protected].
পাঠকদের উদ্দেশ্যে পাঠানো শ্রমিকদের পাঠানো তিন পৃষ্ঠার চিঠিটির একটি অনুলিপি নিচের লিঙ্কে দেওয়া হল-