বন্দি নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুর মৃত্যুর পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অসুস্থতার দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপি অভিযোগ করেছে, কারাগারে তাদের নেতারা সুচিকিৎসা পাচ্ছেন না।
Published : 05 May 2015, 08:23 PM
মির্জা ফখরুলকে মঙ্গলবার কাশিমপুর কারাগার থেকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা দিয়ে ফিরিয়ে নেওয়ার পর নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বার বার রিমান্ডে নেওয়া ও কারাগারে সুচিকিৎসার অভাবে কারারুদ্ধ নেতৃবৃন্দের অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
“সুস্থ অবস্থায়ই গ্রেপ্তার হলেও এদের মধ্যে কেউ এখন কারাগার থেকে লাশ হয়ে ফিরছেন। কেউ হুইল চেয়ারে করে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন। অন্যরা রোগ যন্ত্রণায় কারাঅভ্যন্তরে কাতর হয়ে পড়ছেন।”
নাশকতার বিভিন্ন মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় অনেক নেতা কারাবন্দি। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ছাড়াও খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুস সালাম পিন্টু, শমসের মবিন চৌধুরী, এম এ মান্নান, শামসুজ্জামান দুদু ও রুহুল কবির রিজভী অসুস্থ বলে বিএনপি জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে রিপন বলেন, “মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ (মঙ্গলবার) গুরুতর অসুস্থ হয়ে হুইল চেয়ারে বসে চিকিৎসা নিতে বিএসএমএমইউতে এসেছিলেন। কিন্তু তাকে হাসপাতালে ভর্তি না করে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা ছাড়া পুনরায় কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় আমরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছি।”
গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে মির্জা ফখরুল অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তাকে ঢাকায় আনা হয়েছিল। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই বলার পর তাকে ফেরত পাঠানো হয় বলে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
রিপন বলেন, “আজ আমরা দেখেছি, তাকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে হাসপাতালে আনা হয়েছে। পাঁচ মাস আগে তাকে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে হুইলচেয়ারে করে পুলিশ নিয়ে যায়নি। গ্রেপ্তারের পর তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। পরিণামে এখন তিনি হুইল চেয়ারে।”
তিনি রাজশাহী কারাগারে পিন্টুর মৃত্যুর বিষয়ে বলেন, “পিন্টু লাশ হয়ে কারাগার থেকে ফিরেছেন। তিনি সুচিকিৎসা পাননি। উচ্চ আদালত তার চিকিৎসা বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে করার আদেশ দিলেও তা কারা কর্তৃপক্ষ উপেক্ষা করেছে।”
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের সঙ্গে বৈরী আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা রিপন।
“বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দকে সুচিকিৎসা না দিয়ে কারাগারে রেখে তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ায় চরম অমানবিকতার চিত্র ফুটে উঠেছে। এসব হিংসা-বিদ্বেষের রাজনীতির চির অবসান হোক, এটা দেশবাসীর প্রত্যাশা।”
সংবাদ সম্মেলনে রিপনের সঙ্গে ছিলেন আসাদুল করীম শাহিন, আবদুস সালাম আজাদ, শামসুল আলম তোফা প্রমুখ।