খালেদা জনতার রুদ্ররোষের শিকার: হাসিনা

নির্বাচনী প্রচারে হামলার জন্য খালেদা জিয়া সরকারকে দায়ী করে এলেও এজন্য বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা রক্ষীদের উসকানিকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2015, 02:11 PM
Updated : 26 April 2015, 06:18 PM

রোববার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তিনটি ছবি দেখিয়ে বলেন,  খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা রক্ষীদের উসকানিতে জনতাই তার ওপর হামলা চালিয়েছে।

বিকালে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য আসার দুই ঘণ্টা আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের উসকানিতে সরকার সমর্থকরা তাকে হত্যা করতে তার ওপর হামলা চালিয়েছিল। 

সিটি নির্বাচনের প্রচারে নামা খালেদা জিয়া গত সপ্তাহে তিন দিন কারওয়ান বাজার, ফকিরাপুল ও বাংলা মোটরে হামলার মুখে পড়েন।

শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে তিনটি ঘটনার তিনটি ছবি দেখান।

এর একটিতে দেখা যায়, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনী সিএসএফের সদস্যদের বহনকারী কালো মাইক্রোবাস একজনের পায়ের ওপর দিয়ে চলে যাচ্ছে। গত ২২ এপ্রিল বাংলা মোটরের ছবি বলে সরকার প্রধান জানান।  

কারওয়ান বাজারের ছবিটিতে খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়ির পাদানিতে একজন সিএসএফ সদস্যকে পিস্তল উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ফকিরাপুলের ছবিতে একজনের শটগান দেখা যায়।

তিনটি ছবি দেখিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নিরাপত্তা রক্ষীদের উসকানির জন্য জনতাই উত্তেজিত হয়ে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছে।

হরতাল-অবরোধে নাশকতায় দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যুর জন্য খালেদা জিয়াকে দায়ী করে বের হলেই তাকে কালো পতাকা দেখানোর কর্মসূচি ছিল ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের।

হামলা শুরুর আগে গত রোববার উত্তরায় যারা খালেদা জিয়াকে কালো পতাকা দেখিয়েছিল, সিএসএফের সদস্যরা তাদের লাঞ্ছিত করে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

“সিকিউরিটি ফোর্স যখন কলার ধরবে, মানুষ কি বসে থাকবে?”

খালেদা জিয়ার আক্রান্ত হওয়ার ছবি এলেও দেখানো ছবি তিনটি গণমাধ্যমে না আসার সমালোচনাও করেন শেখ হাসিনা।

“মানুষ চাপা দেওয়ার পর, রুদ্ররোষের শিকার হওয়ার পর সেই ছবি গোল গোল করে লাল কালি দিয়ে আপনারা (সাংবাদিক) দেখিয়েছেন। বিএনপি আর জামাতের নেতা, যারা বাসে আগুন দিয়েছে, তাদের লাল কালি দিয়ে দেখিয়েছেন?”

সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আচরণবিধি তুলে ধরে খালেদা জিয়া যে তা ভঙ্গ করেছেন, সেটাও জানান প্রধানমন্ত্রী।

“এই বিধিমালা ভঙ্গ করে বিএনপি চেয়ারপারসন যখন প্রচার চালাচ্ছেন, তা কি সাংবাদিকরা তুলে ধরেছে?”

ভোটের প্রচারে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে ৯৬টি মাইক্রোবাস এবং ১৮৬টি মোটর সাইকেল ব্যবহার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

“পাবলিক এসে গাড়ি ভাঙল, সে জন্য সহানুভূতি ধরে না। আর, জনগণের শত শত গাড়ি ভাঙল- সে জন্য আপনাদের সিমপ্যাথি কতটুকু,” বিএনপির ডাকা হরতাল-অবরোধে ভাংচুরের দিকে ইঙ্গিত করে সাংবাদিকদের বলেন শেখ হাসিনা।  

নাশকতায় জড়িতদের বিচারে আলাদা কমিশন করা হবে কি না- এক সাংবাদিক জানতে চাইলে শেখ হাসিনা পাল্টা প্রশ্ন করেন, “যারা আগুন দিয়েছে তাদের লাল কালি দিয়ে দেখিয়েছেন? আবার বিচার চান?”

সেই সঙ্গে তিনি বলেন, নাশকতাকারী, এর নির্দেশদাতা ও অর্থ জোগানদাতাদের বিচার করতে সরকার বদ্ধপরিকর।

“এমনভাবে শাস্তি দিতে হবে- যাতে ভবিষ্যতে কেউ না করে।”

খালেদা জিয়ার সংলাপের আহ্বান নাকচ করে সরকার প্রধান বলেন, “উনার সমঝোতায় কে বিশ্বাস করবে? খালেদা জিয়ার কথা কেউ বিশ্বাস করে না। উনি ধোঁকা দিয়ে মিথ্যা বলে যাচ্ছেন, ওটাই বলে যাক।”

অবরোধ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এখন অবরোধ আছে কি না, সে তা জানে না। যে রাজনৈতিক নেতা সিদ্ধান্তেই নিতে পারে না, সে জনগণের জন্য কী করবে?”